আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মরুর বুকে বিলাসিতার প্রতীক বুর্জ খলীফা


পৃথিবীতে মুসলমানদের জীবনে আজ অবর্ণনীয় দুর্দশা। এর ভিতরে দুবাইতে নির্মিত হলো বিলাসীতার প্রতীক বিশ্বের উচু এই স্তম্ভটি। উদ্বোধনের আগের দিন পর্যন্ত নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এমার প্রপার্টিজ ভবন নিয়ে বিশ্ববাসীকে রহস্যের মধ্যে রেখেছে। বিশ্বকে জানতে দেয়নি আসলে তাদের ভবনটির উচ্চতা কত? উদ্বোধনের পরপরই জানা গেলো বুর্জ খলীফা গোটা দশেক বিশ্বরেকর্ড করে বসে আছে। এ রেকর্ডের ব্যাপারে কম বেশী সবাই জানে।

কিছু শেয়ার করছি- ১৬০তলা বিশিষ্ট বুর্জ খলীফা উচ্চতায় এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের দ্বিগুণ। উচ্চতম স্থাপনার রেকর্ডে পোলান্ডের ওয়ারশ রেডিও টাওয়ারকে (২,১২০,৬৭ ফুট) টপকে গিয়েছে। দানবীয় এ ভবনটির নির্মাণ ব্যয় পাক্কা ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার। এ ভবনের মাসিক ভাড়া চার হাজার ডলার বা দুই লক্ষ আশি হাজার টাকা। বুর্জ খলীফাকে ঢাকতে ১৫ লক্ষ ২৮ হাজার বর্গফুট কাঁচ লেগেছে।

৫৭টি লিফট আর ৮টি চলন্ত সিড়ির সমন্বয়ে গঠিত (একেকটি এলিভেটরের গতি সেকেন্ডে ৩৩ ফুট) এই বুর্জ খলিফা মরুর বুকে বিলাসিতার এক মূর্ত প্রতীক। এবং অবশ্যই মুসলমানদের নৈতিক অবক্ষয়ের অন্যতম স্মারক। তাজমহলের মতো বুর্জ খলীফার নির্মাণের পেছনেও রয়েছে হাজার হাজার শ্রমিকের বঞ্চনার অশ্রু। নির্মাণ শ্রমিক আনা হয়েছিল দক্ষিণ এশিয়া থেকে। অভিযোগ আছে, সেসব শ্রমিকের পারিশ্রমিক ঠিকমতো দেওয়া হয়নি।

একজন দক্ষ কাঠমিস্ত্রি রোজ ৪.৩৪ পাউন্ড পেত। আর সাধারণ শ্রমিক ২.৮৪ পাউন্ড করে। এই যৎসামান্য পারিশ্রমিক প্রায়ই আটকে দেওয়া হত। এসবের প্রতিবাদে ২৫০০ শ্রমিক ২০০৬ সালের ২১ মার্চ কর্মবিরতি ঘোষণা করে বিক্ষোভ করে। অনেক ক্ষেত্রেই বৃহৎস্থাপনা মানেই শ্রমিকের ঘামের সাথে বেইনসাফীর ইতিহাস।

সে হোক মিসরের পিরামিড, আগ্রার তাজমহল অথবা সাম্প্রতিক সময়ের বুর্জ খলীফা (বুর্জ আল আরব)। এই স্থাপনা যদি অন্য দেশে হতো তাহলে দুশ্চিন্তার কিছু ছিলনা। কিন্ত যখন মুসলিম দেশগুলোতে হয় তখন চোখের সামনে ভেসে ওঠে ইরাক, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান। মুসলমান কোনো বিলাসী জাতির নাম নয়। দিবসের সংগ্রাম আর রজনীর রোনাযারীই হল এই জাতির পরিচয়।

পৃথিবীতে তাদের আবির্ভাব ভোগ-বিলাসের জন্য নয়; বরং একমাত্র আল্লাহর বন্দেগীর জন্য। যে মাথা আল্লাহ ছাড়া আর কারো সামনে নত হওয়ার কথা ছিল না তা অবনত হয়েছে অর্থের সামনে, ক্ষমতার সামনে এবং ভোগের সামনে। মুসলমানদের ইতিহাস তো আমীরিরর মাঝে ফকীরির, পেটে পাথর বেধে সত্যের পথে যুদ্ধের এবং রাতের আধারে ঘুমন্ত প্রজাদের পাহারাদারীর ইতিহাস। ইতিহাস বারবার ফিরে এসেছে, কিন্তু মুসলমানদের বড় একটা অংশ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়নি। জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা বাদ দিয়ে, শিক্ষা-দীক্ষায় অগ্রসর হওয়ার প্রতিযোগীতা বাদ দিয়ে তারা আজও ভোগে মত্ত।


 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.