"নব্য রাজাকার গোষ্ঠির প্রবেশ নিষেধ"
শুরুতে মনে হয়েছে আমি গ্রামের বাড়ীতে... গ্রামের বাড়ীতে কোন পাহাড় নাই, কিন্তু স্বপ্নে ছিল। ঠিক গ্রামেই ছিল না, অনেক দূরে সেই পাহাড়। আমার মেজ বোন,ছোট বোন আর এক কাজিন গেল সেই পাহাড়ে বেড়াতে..
আমি জানালার দিকে তাকিয়ে শুয়ে আছি। ওখান থেকে বহুদূরের পাহাড় দেখা যায় ....পাহাড় থেকে গ্রামের বাড়ীর দূরত্ব ২ ঘন্টার মত হবে...আমার হাতে জুম করা যায় এই রকম একটা ডিভাইস ছিল। হঠাৎ কি মনে হল আমি ঐ পাহাড়ের দিকে জুম করলাম... অবাক হয়ে গেলাম দেখে যে, আমার বোনেরা পাহাড়ে উপর উঠছে সেটা স্পষ্ট দেখতে পারছি।
পরে ভাবলাম, ওরা আসলে এটা তাদের সারপ্রাইজ দেয়া যাবে। পাহাড়ে তারা কি করছে সেটা বড় আপুকে দেখাচ্ছিলাম জুম ডিভাইসটা দিয়ে। ওরা কিন্তু ২ ঘন্টা দূরের পথে ছিল।
কিছুক্ষন পর ভূত দেখার মত চমকে উঠলাম। আমার বোনরা চলে আসছে বাসায়, অথচ কিছু আগেই তাদের দেখছি পাহাড়ের উপর জুম ডিভাইসে।
আমি কিছুতেই এটা বুঝতে পারছিলাম না, কিভাবে সম্ভব এটা?
এত অল্প সময়ে আসল কিভাবে তারা? আমি কি তাদের ছায়া দেখেছি?...শুধু এটাই ভাবছিলাম।
এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দেখলাম, গোলাকার একটা কিছু আকাশে ভেসে উঠল... বিশাল গোলাকার ডিস্কের মত। আকাশের এককোন ঢেকে ফেলল প্রায় ডিস্কটা। গ্রহনের সময় চাঁদ যেমন সূর্যকে ঢেকে ফেলে ঐ রকম একটা অনূভুতি হল। কিন্তু সেটা সূর্যের ঐ দিকে ছিল না।
আমার বড় বোন বলল, কি ওটা?
আমি জানতে চাইলাম আজকে কয় তারিখ?
সত্যিকার অর্থে আমার মোবাইলের তারিখ উল্টাপাল্টা ছিল। কি কারনে মনে হল ২৮ তারিখ কিছু একটা হওয়ার কথা ছিল বলে কোথায় যেন পড়ছিলাম (সত্যিকার অর্থে পড়িনি) কিন্তু ঐ দিন মনে হল ২৭ তারিখ।
আমি একটা যোগসূত্র পেয়ে গেলাম কিভাবে আমার বোনেরা পাহাড় থেকে এত তাড়াতাড়ি চলে আসল? মনে হল, আকাশের যে জিনিসটা ঢেকে ফেলেছে ওটা টাইম সিকুয়েন্স সব চেইন্জ করে দিয়েছে... কেন যে এটা মনে হল জানি না...
আকাশে কালো মত যে গোল ডিস্কটা ছিল সেটা হঠাৎ লাফিয়ে উঠল... আমি স্পষ্ট দেখলাম ওটা ওলটপালট খেল সামান্য উপরে উঠে।
ডিস্কটার রঙ দেখতে পেলাম.... কালো বেগুনি মাঝে মাঝে গোলাপীর মিশ্রন.. তবে দেখার সময় বেগুনি রঙটা চোখে পড়ছিল বেশি।
জানালা দিয়ে অবাক হয়ে দেখছিলাম... তারপর হঠাৎ শুরু হল রেডিয়েশন... আমাদের গ্রামের বাড়ীর ঘরটার দেয়াল ১০ ইন্ঞি পুরু... অসহ্য রেডিয়েশন প্রবাহিত হতে থাকল এতমোটা দেয়াল সত্বেয়ও... আমি দেয়ালে মুখ ছেপে এক কোনে বসে পড়লাম... একটুও নড়তে পারছি না।
মনে হচ্ছিল মারাযাচ্ছি... মনে হচ্ছিল যে সব ভবিষ্যত বানী শুনছিলাম তা সব সত্যি....বাসার অন্যরা কে কোথায় সেটা মনে হল... কিন্তু ঐ রেডিয়েশনে নড়ার শক্তি নাই। কেন যেন মনে হলে এই রেডিয়েশনে প্রজনন ক্ষমতা একদম শেষ হয়ে যাবে...
অসহ্য রেডিয়েশন একসময় শেষ হল... আমি বাইরে তাকালাম... ঐ গোল মত ডিস্কটার রং লাল হয়ে গেছে... আমি ক্যামরা খুজছিলাম। কিন্ত একটা যে ছবি নিবো সেটার উপায় নাই, ক্যামরাই খুজেঁ পাচ্ছিলাম না। আর্চয্যের বিষয় এই রেডিয়েশনে কেউ মারা গেছে এমন দেখলাম না... সবাই প্রচন্ড যন্ত্রনা সহ্য করেছে, কিন্তু কেউ মারা যায় নি... মারা গেছে কেউ ঐ রকম চোখে পড়েনি। আমি সবাইকে বলছিলাম পুরু কাঠের কিছুর আড়ালে আশ্রয় নিতে... এই রকম বলতে বলতে আবার শুরু হল রেডিয়েশন।
সাথে সাথে টেবিলের নিচে যে পাশে ডেস্ক আছে, তার একপাশে বসে পড়লাম। এইবার রেডিয়েশনটা তেমন তিব্র মনে হচ্ছিল না... ভাবছিলাম জিনিসটা কি? এলিয়েন? পৃথিবীকে ধংস করে দিতে চায়? আমার সামনে দিয়ে যাচ্ছিল দুইজন তার একজন শিশু, আমি শিশুটিকে আমর কাছে রেখে দিলাম, যেন অন্তত তাকে রেডিয়েশনের থেকে রক্ষাকরতে পারব। কিন্তু তাদের গায়ের চামড়া কেমন যেন কুচকে গেছে... আমার নিজেরও কি ঐরকম হয়েছে কিনা ভাবছিলাম...
এরপর আবার রেডিয়েশন থামল....আমি ডেসপারেট ছিলাম একটা অন্তত ছবি তুলব। কিন্তু কিছুতেই ক্যামরা পাচ্ছিলাম না। বড় আপু সব সময় আমার রুম থেকে ক্যামরা নিয়ে যায়... হয়ত আমার টেবিলে থাকে, ওটা অন্য কোন জায়গাতে রেখে দেয়।
চাইলেই দিয়ে দেয়, বাট ঐ সময় কিছুতেই ক্যামরা পাচ্ছিলাম না... আমার কন্না মত আসতে থাকে...একটা ছবিও নিতে পারব না??? বড় আপুকে বললাম ভালো করে খুঁজে দেখতে... আর বলছিলাম... "এই যাত্রায় যদি পৃথিবী বেচেঁ যায়,তাহলে এই ছবির গুরুত্ব কি রকম হবে বলতে পারো?"
শেষ পর্যন্ত আশা ছেড়ে দিলাম, ছবি তুলতে পারব না। বাইরে বেরিয়ে আসলাম এখনো লাল মত হয়ে আছে ডিস্কটা... চারিদিকে হিট ওয়েভ অনুভব করলাম... আমার গ্রামেরই এক মহিলার সাথে দেখা হল...আসলে আমার জম্মের সময় ঐ মহিলা আম্মার পাশেই ছিলেন... উনি বললেন, এটা রেডিও ওয়েভ... অবাকই হলাম তার কথা শুনে, কারন রেডিও ওয়েভ সম্পর্কে তার ধারনা থাকার কথা না। তিনি লেখাপড়াই করেননি...
আমি রাস্তা ধরে হাটতে লাগলাম... চিন্তা করছিলাম পুরো ব্যাপারটা নিয়ে।
এরপর কেমন যেন সব ফেইড হয়ে আসে... মনে হতে থাকে আসলে আমি স্বপ্ন দেখছিলাম। উফ! বাচাঁ গেল...
কি শান্তি পৃথিবীতে বেচেঁ থাকা!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।