আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহাসেন ১১শ’ কিলোমিটার দূরে

এই ঝড় মোকাবেলায় উপকূলীয় জেলাগুলোসহ সরকারিভাবে বিভিন্ন প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
এই ঝড় নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. শাহ আলম।  
ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার বেলা ১২টায় বাংলাদেশ উপকূল থেকে অন্তত ১১শ’ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। সমুদ্রবন্দরগুলোকে এখনো চার নম্বর সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. শাহ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চার নম্বর সতর্কতা সঙ্কেত দিয়ে আমরা বুঝিয়েছি- ঝড়টি উপকূলের দিকে আসছে, এটা মাঝারি ধরনের সাইক্লোন।


শনিবার থেকে গভীর সাগরে অবস্থানরত ঝড়টি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে রোববার পর্যন্ত। সোমবার সকালে তা উত্তর দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে।
উপকূলের আরো কাছাকাছি এসে তা উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে ধারণা এই আবহাওয়াবিদের।
“ঝড়ের গতিপ্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে- বুধ বা বৃহস্পতিবার মহাসেন বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এখন ধীরে ধীরে গতি বাড়ছে।

উপকূলের ৪-৫ শ’ কিলোমিটার কাছাকাছি এসে তা আরো তীব্র হতে পারে। ”
“এ সময় ঝড় যেমন ভেঙে যেতে পারে, তা আবার বাড়তেও পারে। সবকিছু নির্ভর করবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ ঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের গতি ও ঝড়ের তীব্রতার (ইনটেনসিটি) ওপর,” একেইসঙ্গে বলেন তিনি।
ঝড়টির দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা কিংবা বাংলাদেশ উপকূল এড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না এ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালকের।
নিকট অতীতে ঘূর্ণিঝড় গিরি ও নীলম তীব্রতা পেয়েও বাংলাদেশ উপকূলে আসেনি।

দুটি ঝড়ই মিয়ানমার ও ভারতের ওপর দিয়ে বয়ে যায়।
তবে বাংলাদেশ উপকূলে তীব্রভাবে সর্বশেষ আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’ ২০০৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর।
এর আগে রেশমী আঘাত হানে ২০০৮ সালের ২৫ অক্টোবর, নার্গিস ২৭ এপ্রিল এবং সিডর ২০০৭ সালের ১১ নভেম্বর।
প্রতিবছর এই সময়ে ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা থাকে। কিন্তু এতে জনমনে আগাম আতঙ্ক না ছড়ানোর অনুরোধ জানান তিনি।


“এ সময় প্যানিক নয়, প্রিপেয়ার্ড হতে হবে। ঝড়ের আভাস দিয়ে সংশ্লিষ্টদের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সতর্কতা তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য। ”
‘মহাসেন’ এখনো ১২শ’ কিলোমিটার দূরে গভীর সাগরে অবস্থান করায় জলোচ্ছ্বাস কিংবা সম্ভাব্য তীব্রতা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে এখনি নারাজ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক।
অধিদপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে (১৭ নম্বর, মঙ্গলবার বেলা ১২টা) বলা হয়, মহাসেন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম এবং মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।


সতর্কতা সঙ্কেতের বিষয়ে শাহ আলম বলেন, চার থেকে সাত নম্বর পর্যন্ত দেয়া সঙ্কেতে খুব ভয়ের কিছু নেই।
৮ ও ৯ নম্বর সতর্কতা সঙ্কেত দিলে তখন সাধারণকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার পরামর্শ দেবে আবহাওয়া বিভাগ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আয়েশা খাতুন জানান, ঝড়ের সঙ্কেতগুলো হচ্ছে- ১ নম্বর দূরবর্তী সঙ্কেত, ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সঙ্কেত, ৩ নম্বর সতর্কতা সঙ্কেত ও ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সঙ্কেত।
দূরে গভীর সাগরে ঝড় হলে ও চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার মতো মতো বিপজ্জনক সময় না হলে এই চারটি সঙ্কেত ব্যবহার করা হয়। তবে বন্দরত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়ার শঙ্কা থাকে।


৪ থেকে ৭ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত মানে বন্দর ছোট ও মাঝারি সামুদ্রিক ঝড়ে কবলিত হতে পারে। ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ হতে পারে ৬২-৮৮ কিলোমিটার।
৮-১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেতের মানে হলো, বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বা তার বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড় বন্দরের ওপর বা কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে।
১১ নম্বর হলো যোগাযোগবিচ্ছিন্ন সঙ্কেত।

আবহাওয়া বিপদ সঙ্কেত দেয়া কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
এছাড়া নদী বন্দরের জন্য চারটি (১-৪) সঙ্কেত রয়েছে।
ব্রিটিশ শাসনামলে বন্দরকে কেন্দ্র করে এসব সঙ্কেতগুলো তৈরি হয়েছে বলে জানান আবহাওয়াবিদ আয়েশা।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।