আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইউরোপা

LIVING IN CUONTRY SA

বৃহস্পতির ছোট উপগ্রহ ইউরোপায় আবাসন পরিকল্পনার প্রথম ধাপে শুরু হলো আরোও ব্যাপক তথ্য অনুসন্ধান। সেই বিগত শতাব্দীর আশির দশকে প্রথম যখন দুটি ভয়েজার পাঠানো হয়েছিলো, তখন তারা এ স¤পর্কে খুব অল্পই তথ্য দিয়েছিলো। পরবর্ততীতে নাসা কতৃক প্রেরিত গ্যালিলিও সন্ধানীযান ও ক্যাসিনি খুব একটা বেশি তথ্য দিতে পারেনি। তখনকার ধারণা অনুযায়ী ইউরোপাসহ বৃহ¯পতির কয়েকটি উপগ্রহ হতে সর্বদা উচছ তেজস¤পন্ন ইলেকট্রন, প্রোটন ও অন্যান্য আয়ন বিচছুরিত হচেছ, এই অজুহাতে কোন মানুষ এসব উপগ্রহে পাঠানো যাবে না বলে বিজ্ঞানীরা মšব্য করেন। বিজ্ঞানীরা আরও বলেন, ইউরোপার উপরিভাগ তুষার আবৃত এবং ১০০ কিলোমিটার নিচে পানির আধার বিদ্যমান।

ইউরোপার ভু-পৃষ্ঠে নাকি খুব ব্যতিক্রমধর্মী হাজার হাজার ফাটল দেখা যায়, যেগুলো অস্থায়ীও ক্রমশঃ স্থানাšরিত হচেছ। আর ক্যাসিনির পরের মহাকাশযান ভয়েজার ০০১৯৬ থেকে পাঠানো সর্বশেষ তথ্য অনুসারে এই ক্ষুদ্র উপগ্রহে ধীরে ধীরে মানুষের অনুকুল পরিবেশ তৈরী হচেছ। বিজ্ঞানীরা আরও তথ্যের জন্য দ্বিতীয় ধাপেই আরেকটি মহাকাশযান পাঠানোর পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন। দ্বিতীয় ধাপে পাঠানো হবে অত্যাধুনিক ক¤িপউটার ও রোবট সম্বলিত এক বিশাল মহাকাশযান। এতে থাকবে একটি ছোট্ট (কিšু উচচমানস¤পন্ন) গ্লাস ফ্যাক্টরি, যা আকারে অত্যš ছোট হলেও প্রচুর পরিমানে গ্লাস উৎপাদনে সম্ভব হবে।

প্রথমেই অনুসন্ধানী রোবট উইরোপার মধ্যে বেছে নেবে এমন একটি জায়গা, যেখানে আগ্নেয়গিরির অগ্ন€ৎপাতের বা ভুমিক¤েপর সম্ভাবনা নেই, ফাটল ও প্রায় দেখা দেয় না। তারপর প্রায় একশত বর্গগজ এলাকা নিয়ে গ্লাস দিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে একটি নিশ্চিদ্র বায়ো¯িপয়ার গড়ে তুলবে। এই বায়ো¯িপয়ারে থাকবে ইলেকট্রনিক্স নিয়šিত (রিমোট কন্ট্রোল) নিশ্চিদ্র প্রবেশ পথ, যা দিয়ে নির্বিঘেœ একটি ক্ষুদ্র মহাকাশযান ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে। বায়ো¯িপয়ারের ভিতরে বিশেষ যšপাতির সাহায্যে তৈরী করা হবে পৃথিবীর অনুর€প পরিবেশ, যাতে অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ও অন্যান্য গ্যাস পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের সমান অনুপাতে থাকবে। বাহিরের হালকা বায়ুমন্ডল থেকে এসব গ্যাস সুদক্ষ বৈজ্ঞানিক যšপাতির সাহায্যে সংগ্রহ করা হবে।

বায়ো¯িপয়ারের উপরে প্রিজম আকৃতি, হীরক আকৃতি তথা বিভিন্ন আকৃতির গ্লাসগুলো এমনভাবে ফিট করা হবে যে, এগুলো সুর্যের আলোকে ঘনীভূত করে ভিতরের তাপমাত্রা বাহির থেকে অনেক বেশি অর্থাৎ ২০০ সেঃ থেকে ৩০০সেঃ এর ভিতরে রাখবে। বায়ো¯িপয়ারের ভিতরে নির্মাণ করা হগবে এক বিশেষ ধরণের টিউব ওয়েল যা ভুগর্ভের অনেক নিচে চলে যাবে ও সেখানে বিশেষ তাপ ব্যাবস্থায় হালকা বরফ গলিয়ে তৈরীকৃত পানি তুলে ছিটিয়ে দেবে বায়ো¯িপয়ারের ভেতরে নির্দিষ্ট সময় পর পর। এতসব কাজ করতে যে বিপুল পরিমাণ শক্তির প্রয়োজন, তা এই উচচ মানের রোবটগুলো সংগ্রহ করবে ইউরোপা পৃষোঠর বিভিন্ন উচচতেজস¤পন্ন তৈজস্ক্রিয় মৌলের নিয়šিত্রত নিউক্লিয়ার বিভাজন থেকে। ইতিমধ্যে মহাকাশযানের ভিতরে পৃথিবী থেকে নিয়ে যাওয়া উদ্ভিদের বীজ অঙ্কুরিত হবে, যা বপন করা হবে এই বায়ো¯িপয়ারে এবং সাথে সাথে ছেড়ে দেয়া হবে ব্যাঙ জাতীয় কিছু নিুমানের প্রাণী। ইউরোপার এই ক্ষুদ্র জীবজগত যখন প্রতিষ্ঠিত হবে তখন সব রোবট ও যšপাতি বায়ো¯িপয়ার থেকে সরিয়ে ফেলা হবে ও রোবটগুলো এ খবর পৃথিবীর মানুষের কাছে প্রেরণ করবে।

তৃতীয় ধাপে পৃথিবী থেকে প্রেরণ করা হবে একদল বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী সম্বলিত মহাকাশযান। এ মহাকাশযান ইউরোপায় পৌছার পুর্বেই দ্বিতীয় ধাপে পাঠানো রোবট সম্বলিত মহাকাশযান, বিশেষ লেজার রশ্মির সাহায্যে পরীক্ষা করে দেখবে বৃহ¯পতির গায়ের রেড¯পট, হোয়াইট স্পট ও অন্য তিনটি উপগ্রহ আইও, ক্যালিষোটা ও গ্যানিমিড সহ বাকি ১২ টি উপগ্রহের কোথাও তাদের কাচামাল রয়েছে। এরা হন্যে হয়ে খুঁজে বের করবে কাচামাল ও ইউরোপার গায়ে অনুর€প আরো কটি বায়ো¯িপয়ার গড়ে তুলতে শুর€ করবে। চতুর্থ ধাপে পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা গিয়ে পৌছবেন পৃথিবীর বাহিরে মানুষের প্রথম নীড়ে; ইউরোপার বায়ো¯িপয়ারে। রজার নিকের নাম অনুসারে এ বায়ো¯িপয়ারের নাম হবে ‘নিক বায়ো¯িপয়ার’।

এখান থেকে বিজ্ঞানীরা এখানকার পরিবেশ স¤পর্কে গবেষণা করবেন এবং বিভিন্নভাবে সবকিছু খতিয়ে দেখবেন। বায়ো¯িপয়ারের মধ্যে কোন কোন উদ্ভিদ ও প্রাণির জন্য সবচেয়ে অনুকুল পরিবেশ রয়েছে তা তারা পৃথিবীতে জানাবেন। তারা ইউরোপার সম¯ পৃষ্ঠের মানচিত্র তৈরী করবেন এবং পরীক্ষা করে দেখবেন আর কোথায় এরকম বায়ো¯িপয়ার তৈরী করা যায়। এভাবে তারা প্রায় চল্লিশটি স্থান নির্ধারণ করবেন যেগুলোতে আরও বিশাল আকৃতির বায়ো¯িপয়অর গড়ে তোলা যায় এবং পরবর্তীতে এগুলোকে সর€ যানবাহন চলাচল উপযোগী টানেল দিয়ে সংযুক্ত করে গড়ে তোলা হবে ইউরোপার প্রথম বায়ো¯িপয়ার শহর, যা নিক বায়ো¯িপয়ারেরই স¤প্রসারণ। ইতিমধ্যে বিজ্ঞানীরা উইরোপার বায়ুমন্ডল খতিয়ে দেখবেন এবং গবেষণা করতে থাকবেন কি করে বায়ো¯িপয়ারের বাহিরের বায়ুমন্ডলকেও অনুকুল পরিবেশে র€পাšরিত করা যায়।

পঞ্চম ধাপে পৃথিবী থেকে এক বিশাল মহাকাশযানে করে পাঠানো হবে কয়েক হাজার প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী, ইনিঞ্জিনিয়ার, চিকিৎসক, উদ্ভিদবিজ্ঞানী, প্রাণিবিজ্ঞানী তথা বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদ। তাদের নিরাপত্তার জন্য নাসার বিশেষ নিরাপত্তা বিভাগের কর্মীরাও থাকবেন এই মহাকাশযানের চারপাশের ক্যাপসুল মহাকাশযানে। এই মহাকাশযান ইউরোপায় পৌছার পুর্বেই দ্বিতীয়ধাপে পাঠানো রোবটগুলো চল্লিশটি বায়ো¯িপয়ার তৈরী করে ফেলবে ও নিক বায়ো¯িপয়ার ছাড়া বাকি উনচল্লিশটিকে গ্লাস টানেল দ্বারা সংযুক্ত করে ফেলবে। নিক বায়ো¯িপয়ারের তৃতীয় ধাপে আসা বিজ্ঞানীরা সম্ভাষণ জানাবেন পঞ্চম ধাপের এই বিশাল বাহিনীকে। পরে তারা ক্যাপসুল মহাকাশযানে করে ঘুরে দেখবেন বাকি উনচল্লিশটি বায়ো¯িপয়ার, যেগুলোতে নিক বায়ো¯িপয়ারের মতই থাকবে মহাকাশযানের প্রবেশপথ, আšঃ বায়ো¯িপয়ারের টানেল গেইট, আরও কত কি! সবশেষে ঐ দিনই সন্ধায় পঞ্চম ধাপের বিজ্ঞানীরা উদ্ধেধন করবেন নিক বায়ো¯িপয়ারের টানেল গেইট।

সাথে সাথে সুচনা হবে ইউরোপার এক নতুন সভ্যতার ক্রমবিকাশ। পৃথিবীর সবগুলো টিভি চ্যানেলে ও ইন্টারনেট-এ এ অনুষ্ঠান সরাসরি স¤প্রচার করা হবে। অতঃপর বিজ্ঞানীরা যার যার নির্দিষ্ট বায়ো¯িপয়ারে গিয়ে কাজ শুর€ করবেন। প্রত্যেকটি বায়োস্পিয়ারের বিজ্ঞানীদের ক¤িপউটার ইন্টারনেটের (খঅঘএর) মাধ্যমে সংসুক্ত থাকবে এবং এই খঅঘ অšত কিছু সময়ের জন্য প্রতিদিন পৃথিবীর ইন্টারনেটের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে। আšঃ বায়ো¯িপয়ার টানেলে দুই থেকে চার আসন বিশিষ্ট বিশেষ যানবাহন চলাচল করবে।

ইতিপুর্বে দ্বিতীয় ধাপে পাঠানো রোবটগুলোকে বৃহ¯পতির অন্য উপগ্রহ আইও-তে প্রেরণ করা হবে অনুর€প বায়োস্পিয়ার তৈরী করার জন্য। এদিকে ইউরোপায় ইঞ্জিনিয়ার ও বিজ্ঞানীরা বায়ো¯িপয়ারের বাহিরে বিশেষ পোশাক পড়ে তৈরী করবেন বায়ূ নিরোধী গগণচুম্বী অট্টালিকার সারি। এতে টেলিফোনসহ উন্নত শহরের সকল যাšিক সুবিধা থাকবে। সবগুলো ঘর থাকবে নিশ্চিদ্র ও শীতাতপ নিয়šিত। এসব কাজে সাহায্য করবে অসংখ্য কর্মী রোবট।

ষষ্ঠ ধাপে পৃথিবী থেকে যাত্রা করবে ভিন্ন কতকগুলো মহাকাশযান। যাতে কয়েক স্টেপে লক্ষাধিক মানুষ, পশুপাখি, উদ্ভিদ প্রভৃতি গিয়ে পৌছবে ইউরোপার নতুন শহরে এবং অট্টালিকাসমুহে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত র€মে নিজেরা বসবাস শুর€ করবে। তাদের খাবারের ব্যাবস্থা বায়ো¯িপয়ার থেকে করা হবে রোবটের মাধ্যমে। ইতিমধ্যে ইউরোপার স¤পুর্ণ বায়ুমন্ডল ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে পৃথিবীর অনুর€প হতে থাকবে। বি¯ৃর্ণ মর€ভুমি ক্রমশঃমর€দ্যানে পরিবর্তিত হবে।

সপ্তম ধাপে ইউরোপার বায়ুমন্ডল স¤পুর্ণ পৃথিবীর মানুষের অনুকুল হয়ে যাবে। তখন অবাধে পৃথিবী থেকে মানুষ ইউরোপায় যেতে পারবে। বিংশ শতাব্দীর বিমানবন্দরের মত তখন ইউরোপার রকেট বন্দরেও থাকবে অগুণিত লোক সমাগম। কিšু ইউরোপার বায়ো¯িপয়ারগুলো ভেঙ্গে না ফেলে সংরক্ষিত করা হবে অনাগত ভবিষ্যতের জন্য। ইউরোপা উপগ্রহের সবচেয়ে বিশাল ও প্রাচীনতম মিউজিয়াম হবে রজার নিকের বায়ো¯িপয়ারকে কেন্দ্র করে।

নাসার ¯েপসএডমিনিষ্ট্রেশনের সভাপতি ও সব সাংবাদিকদের সামনে সাতটি ধাপের খুটিনাটি বিশ্লেষণ করে রজার নিক ক্লাš অবসন্ন দেঞে বাসায় ফিরেই খাবার রান্না করলেন। চিরকুমার জীবনের অক্লাš পরিশ্যমের ফসলের এই ডাটা এতক্ষণে বিশ্বের অনেক জায়গায় পৌছে গেছে। একজন বন্ধু নিকের ক¤িপউটারে ইমেইল পাঠিয়েছেন- তাতে আছে সপ্তম ধাপ শেয়ে ইউরোপার জীবনচিত্রের জীবš প্রতিচছবি। গ্রাফিকসটা অসাধারণ হয়েছে। ইউরোপার কৃত্রিম নদী গিয়ে নিজেকে সৈকতে বিসর্জন দিচেছ; সমুদ্র সৈকতে লম্বা টিনসেটের ঘর, সামনে কৃষ্ণচুড়া গাছ লাল ফুলে ভরে আছে।

নদীতীরে কাশফুলের মেলা। দেখতে দেখতে নিক সুখ নিদ্রায় ঢলে পড়লো।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।