ঐশী কে সবাই দোষ দিচ্ছে। আমিও দিতে পারতাম। কিন্তু দিচ্ছিনা। আমি তার উকিলের কথাই বলছি, যে পরিবার ও যে সমাজ ঐশীদের তৈরি করে তাদের বিচার হওয়া দরকার।
১৭ বছরের একটা মেয়ে শিশুর কেন আইডিয়াল স্কুল ভালো লাগলো না? কেন তার মনে হলো মাথায় স্কার্ফ পরলে জীবনের কোন মানে থাকেনা?
ঐশীর চিন্তা চেতনা কারা বদলে দিয়েছে সেটা খোজা জরুরী।
আজ আমার ছয় বছরের সন্তান যখন কানের কাছে সুর করে বলে বন্ধু ছাড়া জীবন চলে!
তখন সেটাকে আমি কতটুকু গুরুত্ব দিচ্ছি?
আমাদের সন্তানদের প্রধান বন্ধু এখন টেলিভিশন। সেখানে কি শেখাচ্ছে? ফোন কোম্পানি গুলোর বিজ্ঞাপন গুলো খেয়াল করেছেন কি? তারা তাদের মডেলদের কি পোশাক পরাচ্ছে, কোন ভাষায় কথা বলাচ্ছে একটু খেয়াল করুন।
ঐশীর বাবা অসৎ বলে অনেকেই বলেছেন। অনেকেই প্রশ্ন করেছেন কি করে একজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রতিমাসে লাখটাকা ব্যায়ের জীবন নিবার্হ করে ছিলেন?
হিসেব করে অনেকেই প্রমান করেছেন যে তিনি ঘুষ আর অবৈর্ধ পথে আয় করেছেন।
অবৈর্ধ্য উপার্জন হলো একটা ভয়ানক নেশা, মানুষ যখন এই নেশায় পড়ে তখন সে সমাজ পরিবার সব ভুলে যায়।
ঐশীর বাবাও হয়ত তার পরিবারকে ভুলে গিয়ে ছিলো।
ঐশীর মাকেও আমি বলবো বাথ্য। তাদের বাথ্যতার দরুন ঐশী আজ ঘাতক।
ঐশী যেতো ডিজে ও ড্যান্স পার্টিতে। সে বাসায় ফিরতো রাত ১০টা, কখনও ১১টায়।
যোগ দিতো ইয়াবা ও গাঁজার আসরে! পত্রিকায় নিউজ এসেছে ঐশীর নাকি ডজনখানেক বয়ফ্রেন্ড ছিলো!
ভাবুন সমাজের কতটা পচন লেগেছে! আমার মনে পড়ে ছোট বেলায় বোনরা কখনোই একা বাড়ি থেকে বের হতে পারতো না। সন্ধা হবার আগেই আমাদের ঘরে ফিরতে হতো। পারিবারিক অনুশাসন ছিলো। আজ আর সমাজে সেই দিন নেই।
এখন শাহবাগ কালচার এসেছে লাকিরা এখন সমাজের আদর্শ! শাহবাগে হাজার পুরুষের সাথে একত্রে রাত্রী যাপন করাটাই হলো সভ্যতা।
আর যারা বোরকা পড়ে হেজাব পড়ে তারা আনস্মাট! শাহবাগ চেতনা ব্যাবসা করতে গিয়ে আমাদের সমাজের হাজার বছরের ঐতিহ্য কে নষ্ট করে দিয়েছে।
আর মিডিয়া গুলো তাদের নির্মিত নাটক সিনেমা আর বিজ্ঞাপন গুলোতে সুচুতর ভাবে সমাজে পশ্চিমা কালচার ঢুকিয়ে দিয়েছে যে আমার ঐতিহ্য ভুলে সংকর একটা সমাজ ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে বাধ্য হয়েছি। যেখানে তৈরী হচ্ছে ঐশীর মত সন্তান।
এর দায় আমাদেরই। সমাজে এখন ভালো মানুষের কদর নেই।
তারা হাসির পাত্র। নাটক সিনেমার নায়ক এখন তারাই যারা মারপিট করে, মদ খায়, নারীর কোমর ধরে নাচে! কোমলমতী শিশুরা এসব দেখে কি শিখবে? ছোট্র এই দেশে কতগুলো টিভি চ্যানেল। সেখানে একটাও কি শিশুদের চ্যানেল আছে?
নেই। কেন নেই?
ভেবেছেন কি একবারো? ষ্টার জলসা টাইপের চ্যানেল নিয়ে আমাদের দেশের মায়েদের সেকি উত্তেজনা! তারা কুটনামো সিরিয়াল দেখতে গিয়ে সংসার ভুলে যায়, সন্তান ভুলে যায়। এসব কিছুই আজ ঐশী আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখালো।
প্রশ্ন হলো আমরা সেখান থেকে কতটুকু শিখলাম!
ঐশীকে সাজা দিলেই কি সব কিছু শেষ হয়ে যাবে?
ঐশী এবং তার অসভ্য বন্ধুদের বাবা মায়েদের শাস্তি হওয়া দরকার।
সরকার প্রধানের ও কড়জোড়ে ক্ষমা চাওয়া উচিৎ কেন স্কুলে পড়া আমাদের সন্তানরা মাদকে জড়িয়ে পড়ছে। কেন এত সহজলভ্য হয়ে পড়েছে ইয়াবা?
আজকের প্রথম আলো তে পড়লাম সরকারের একজন সংসদ নাকি বাংলাদেশে ইয়াবা চোরাচালানের দেখভাল করে! মাদকের গডফাদার যদি হয় আইন প্রনেতা তবে সেই দেশের জনগনের চেয়ে অভাগা আর কি করে থাকে।
পুলিশ মাদকের চোরাচালানের সাথে জড়িত। তাদের ৯০% সদস্য ধুমপায়ি!
আর গত বছর দেখেছি আদালতের একজন বিচারকও ফেনসিডিল বিক্রি করতে গিয়ে রাবের কাছে ধরা পড়েছেন!
অনেক হতাশাজনক এই লেখাটা লিখতে গিয়ে ক্লান্ত লাগছে।
আমি দুটো সন্তানের বাবা। আমি জানিনা তারা ভবিৎষতে কি হবে। এই পচনধরা সমাজ তাদের কোথায় নিয়ে যাবে।
আসুন আমরা সভ্য সুন্দর একটি সমাজ ব্যাবস্থার জন্য কাজ করি।
সকল ধরণের মাদক কে না বলি।
আমি বিশ্বাস করি আপনি যদি সিগেরেট ছাড়তে পারেন তবে আপনার সন্তানরা ওটা ছুয়েও দেখবে না। আপনি যদি মসজিদে যান আপনার সন্তানরাও একদিন যাবে। আপনি যদি সভ্য মিডিয়াতে অভস্ত হন নিশ্চয় তারাও একদিন বাবার আদর্শকে ধারন করবে। আসুন আমরা বাবারা চেষ্টা করি।
ঐশীদেরকে ঘৃর্না না করে আসুন ওদের ভালোবাসা দিয়ে সভ্য সুন্দর করে গড়ে তুলি।
বিষয়: বিবিধ
লিখেছেন এম এম ওবায়দুর রহমান ১৯ আগস্ট, ২০১৩,
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।