২.০ মেগাপিক্সেল মোবাইল ক্যামেরায় চলছে। যোগাযোগ <<< photopagol@gmail.com >>>
পড়াশোনার স্বপ্ন নিয়ে যেসব বাংলাদেশী শিক্ষার্থী গত বছর পাড়ি জমিয়েছিল যুক্তরাজ্যে, তাদের অনেকে এখন নানামুখী সঙ্কটের শিকার। স্বপ্নভঙ্গ হওয়ায় হাজার হাজার নিরুপায় শিক্ষার্থী ফিরে আসছে দেশে। কেউ কেউ আবার উপায় না পেয়ে বেছে নিচ্ছে বিকল্প পথ।
তারা যুক্তরাজ্য ছেড়ে চলে যাচ্ছে ফ্রান্স, বেলজিয়ামসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।
নিয়তি তাদের শেষ পর্যন্ত কোথায় নিয়ে যাবে তা নিশ্চিত করে বলার জো নেই। দেশে ফেরত আসা এবং ভাগ্যান্বেষী এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে স্বভাবতই বিপাকে পড়েছেন তুলনামূলকভাবে অসচ্ছল অভিভাবকরা। অনেকের অভিভাবক ও আত্মীয়-স্বজনরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কলেজে ভর্তি ও টিউশন ফি’র ব্যবস্থা করেন।
তাদের আশা ছিল, খণ্ডকালীন চাকরি করে পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু রূঢ় বাস্তবতা চরম আশাহত করেছে অনেককেই।
তাদের এখন দেশে ফেরার পালা। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বেগ কতটা করুণ হয়ে উঠেছে তা সহজেই অনুধাবন করা যায়।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের দেশে ফিরে আসা এবং বিকল্প উপায় অবলম্বনের মূল কারণ হচ্ছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে না পারা এবং আর্থিক সঙ্কট। এ ব্যাপারে লন্ডন কলেজ অব ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজের ভাইস প্রিন্সিপাল ড. পিআর দত্ত বলেছেন, গত বছরের ৫ অক্টোবরের পর যারা যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন কলেজে পড়তে এসেছে তারাই মূলত বিপাকে পড়েছে।
কারণ ইউকে বর্ডার এজেন্সি অনেক কলেজ বন্ধ করে দিলেও এসব কলেজের শিক্ষার্থীর অন্য কোনো কলেজে সহজে ভর্তির সুযোগ নেই।
এ কারণে তাদের দেশে ফিরে যাওয়া ছাড়া উপায়ও নেই। ড. দত্ত আরও বলেন, ২০০৯ সালের ৫ অক্টোবরের পর এসব শিক্ষার্থী যেসব কলেজে ভর্তি হয়েছিল তার অনেকগুলোই বন্ধ হয়ে গেছে।
ইচ্ছা করলেই এই শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারছে না অন্য কোনো কলেজে। তাদের অনুমোদন নিতে হচ্ছে ইউকেবিএ থেকে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে যুক্তরাজ্যের ভিসা পাওয়ার ব্যাপারটি যথেষ্ট শিথিল ছিল।
সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রচুর টাকা খরচ করে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার উদ্দেশে যুক্তরাজ্যে যায়। নতুন নিয়ম করায় এখন এরা নিরুপায় অবস্থার শিকার হচ্ছে।
এদিকে যারা খণ্ডকালীন চাকরি করে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছিল, তাদের অনেকে শেষ পর্যন্ত চাকরি জোগাড় করতে পারেনি এবং যথারীতি দিতে পারেনি কলেজের টিউশন ফি। কেউ কেউ আবার পড়াশোনা ছেড়ে নিয়ম ভঙ্গ করে ফুলটাইম চাকরি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেল খাটছে।
এও সত্য যে, অনেক শিক্ষার্থী পড়ালেখার নামে কেবল রোজগারের আশা নিয়েই বিদেশে যায়।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে বিপাকগ্রস্তদের মধ্যে তারাও রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর সংখ্যাও প্রচুর। গত এক বছরে ৩০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ইউকে বর্ডার এজেন্সির (ইউকেবিএ) টিআর-৪ নীতিমালার আওতায় যুক্তরাজ্যে যায়। এর মধ্যে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকেই থাকা-খাওয়া ও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে কঠিন সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হয়।
যাদের সচ্ছল আত্মীয়-স্বজন আছেন তারা কিছুটা ভরসা পেলেও চাকরিজীবী স্বজনরা এক সময় অপারগ হয়ে পড়েন কিংবা নিজেদের অক্ষমতা প্রকাশ করেন।
অবশেষে স্বপ্নভঙ্গের বেদনা নিয়ে দেশে প্রত্যাবর্তন করতে হয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে।
জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থী সংক্রান্ত আইন আবার সংশোধন করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, তখনও অনেক শিক্ষার্থী সেখানে যাওয়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়বে। সেই সম্ভাব্য শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের উচিত, সব জেনেশুনেই যেন যুক্তরাজ্যে সন্তানদের পাঠান। যুক্তরাজ্যে শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল মহল থেকেও এই পরামর্শ পাওয়া গেছে।
বলা হয়েছে, যেতে হবে ভালো কলেজ দেখে।
সব ব্যাপারে সঠিক খোঁজখবর জেনে। নইলে যে কোনো সময় বিপদ হতে পারে। অবশেষে শিক্ষা জীবনের মূল্যবান বছর নষ্ট করে ফিরে আসতে হতে পারে দেশে। তবে আপাতত যারা বিপাকে পড়েছে তাদের জন্য কী করা যেতে পারে সেটিই মুখ্য বিষয়।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের কিছু করার নেই।
কেবল সরকার পর্যায়ে আলোচনা করে কিছু একটা করা যেতে পারে। তাত্ক্ষণিকভাবে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশী হাইকমিশন যদি অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে অভিভাবকের ভূমিকা নিয়ে দাঁড়ায়, তাহলে অন্তত ভগ্নহৃদয় তরুণ শিক্ষার্থীরা আঁকড়ে ধরার মতো একটি অবলম্বন পাবে। বিদেশে বাংলাদেশের সুনামের প্রশ্ন ছাড়াও আমাদের সন্তানদের প্রতি এ দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। সরকার জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি বিবেচনা করবে—এটাই কাম্য।
সুত্রঃ আমার দেশ
( যেহেতু আমি এখনও প্রথম পাতায় লিখতে পারছিনা, তাই এই সব পোষ্ট দিচ্ছি , মডারেটর অন্য দৃষ্টিতে দেখবেন না। ধন্যবাদ )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।