“Inter University design contest – Universal accessibility in public transport” প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছে আমাদের বুয়েটের টিমঃ “আলোকের যাত্রী“। নামের সাথে কাজের মিল রেখে তাদের করা ডিজাইন পেয়েছে প্রথম পুরস্কার। এই প্রতিযোগিতার শুরুটা এভাবেঃ
আপনাদের মনে আছে গত ২ মার্চ ২০১২ তে বি-স্ক্যান আয়োজিত হুইলচেয়ার র্যালীর কথা !?
ঘরবন্দী অগুনতি হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী এই মানুষগুলোর উপস্থিতি জানান দিতেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিআরপি’র সহযোগিতায় এই র্যালীর আয়োজন করেছিলাম আমরা। যেখানে বিপুল সংখ্যক হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী ব্যক্তিগণ উপস্থিত হয়েছিলেন তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে।
সেদিন সেখানেই মাননীয় যোগাযোগ মন্ত্রী জনাব ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দেন বিআরটিসি কতৃক র্যাম্পযুক্ত বাস আমদানী করার কথা।
মন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে আমরা নব উদ্যোমে ঝাপিয়ে পড়ি আমাদের স্বপ্নের প্রজেক্ট বাস্তবায়নের কাজে।
এই ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিতে একটি ডিজাইন প্রতিযোগিতার আহ্বান করা হয় ২৪শে মার্চ এবং এখানে ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৮২টি দলের হয়ে অংশ নেন ২৯০ জন। প্রতিযোগিতাটি সম্পর্কে বিস্তারিতে এর হোমপেজে দেখতে পারেনঃ http://iudc.esab.org.bd/index.html। আমাদের বুয়েট থেকে অংশ নেনঃ
* Debabrata Karmakar
* Tanmoy Biswas
* Pankaj Kumar Sutradhar
* Tapos Paul।
প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ডিজাইন
হুইল চেয়ারে চলাচলকারীর জন্যে বর্তমানে রাস্তার অবস্থা, নতুন করে অবকাঠামো নির্মানের খরচ, নতুন করে প্রশিক্ষন দেয়ার চিন্তা এইসবগুলো জিনিস মাথায় রেখে তারা এমন একটা ডিজাইন করেছেন যেখানে সর্বনিম্ন পরিবর্তন প্রয়োজন।
একজন হুইল চেয়ারে চলাচলকারীর বাসের জন্যে অপেক্ষা, বাসে উঠা, বাসে চলা, বাস থেকে নামা সব কিছু নিচে ছবি দিয়ে বর্ণনা করা হলো এখানে। দেখে নিন কিভাবে কাজ করবে এই সিস্টেমঃ
এখানে প্রথমে মনে করি হুইল চেয়ারে চলাচলকারী একজন বাসে করে ঢাকার সবচেয়ে ব্যস্ত সড়কগুলোর একটি ফার্মগেট~গুলিস্তান যেতে চান। বাস থামার আগে তিনি নির্ধারিত একটা জায়গায় এসে অপেক্ষা করবেন এবং বাস ড্রাইভার বাসটাও সেখানেই থামাবেনঃ
উপরের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন বাসের দরজা এবং সাদা প্ল্যাটফর্ম যেখানে হুইল চেয়ারে চলাচলকারীরা অপেক্ষা করবেন। খেয়াল করবেন এখানে একটা ফাঁকা জায়গা রয়েছে। এখানে বাস ড্রাইভার একটা সুইচ ট্রিগার করবেন (যেটা থাকবে তার ড্রাইভিং হুইলের সাথে) এবং নতুন একটা পাটাতনের মতন দৃশ্যমান হবেঃ
এটি পরবর্তীতে বাসের উচ্চতা এবং হুইল চেয়ারে চলাচলকারীর দূরত্বের সমান করে দিবে এবং হুইল চেয়ারে চলাচলকারী বাসে প্রবেশ/বের হতে পারবেন।
বাস ছাড়ার পরে তিনি বাসের রড ধরে ভারসাম্য রাখতে পারবেন না, তাই তার সামনে একটি আলাদা ফিতের মতন থাকবে যেটি তাকে একজায়গায় আটকে থাকতে সহায়তা করবে।
এখানে একটা জিনিস এড়িয়ে গেলাম আমরাঃ এই যে উনি ঠিকমত উঠবেন, বাসটা ঠিকমত থামাবে, বাসে উনাকে কেউ ধাক্কা দিবে না এইসব কিভাবে হবে? উত্তরঃ আমাদের মানসিকতা আমরা বদলাবো (কালো-আলো’র মতন বদলানো নয়, মানুষের জন্যে বদলানো। তখন এইগুলো কোন সমস্যা নয়, আমাদের বুয়েটিয়ানরা আপনাদের অতটাই বিশ্বাস করেন যতটা আপনারা আমাদের করেন)।
ফলাফল
একটি ছবি বোধহয় একহাজার শব্দের চেয়েও বেশী কথা বলে, তাই ছবি শেয়ার করি কিছুঃ
জার্মানীতে আমি সব বাসেই হুইল চেয়ারের মানুষদের উঠানামার দৃশ্য দেখি, আমি আমার নিজের দেশেও একই দৃশ্য দেখার ইচ্ছা রেখে শেষ করছি।
মূল সোর্সঃ http://www.buetian.com/archives/293 ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।