আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের গ্যাস দিয়ে আগরতলায় তৈরি হচ্ছে ৭২৬ মেগাওয়াটের বিদ্যুত্ প্লান্ট



বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ৭২৬ মেগাওয়াটের যে বিদ্যুত্ কেন্দ্রটি স্থাপন হচ্ছে, তা বাংলাদেশের গ্যাস ব্যবহার করেই বিদ্যুত্ উত্পাদন করবে বলে ভারতের মিডিয়া দাবি করেছে। দি সাইফাইনিউজ তার ২১ আগস্ট সংস্করণের ‘ওএনজিসি সেটআপ ফার্স্ট পাওয়ার প্রজেক্ট টু রান বাংলাদেশ গ্যাস’ শিরোনামের এক সংবাদে এটা দাবি করা হয়েছে। এদিকে ভারতের ইকোনোমিক টাইমস পত্রিকায় ২১ আগস্ট প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশ চাইলে ওই কেন্দ্র থেকে উত্পাদিত বিদ্যুত্ কিনে নিতে পারবে। ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে পলাতনা নামক জায়গায় এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এটা হচ্ছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগের প্রকল্প।

এ প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৯ হাজার কোটি ভারতীয় রুপি। এ পাহাড়ি এলাকাটিতে ৮ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে বলে ভারত দাবি করে। তবে বাংলাদেশ থেকে কিভাবে এ বিদ্যুত্ প্রকল্পে গ্যাস সরবরাহ করা হবে সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেনি ভারতীয় মিডিয়াটি। মিডিয়াটি তার ২১ আগস্টের অনলাইন সংস্করণে লিখেছে, ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন দি ওয়েল অ্যান্ড ন্যাচারাল গ্যাস করপোরেশন লিমিটেড (ওএনজিসি) আগরতলায় ৭২৬ মেগাওয়াটের যে বিদ্যুত্ প্রকল্প স্থাপনের কাজ হাতে নিয়েছে, সেই প্রকল্পের প্রথম ইউনিট স্থাপন এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এ প্রকল্প বাংলাদেশী গ্যাসের সাহায্যে চলবে।

ওএনজিসি জানিয়েছে, আগামী বছরের শেষ নাগাদ এ বিদ্যুত্ প্রকল্প থেকে উত্পাদন শুরু হবে। সংবাদ মাধ্যমটি ওএনজিসির চেয়ারম্যান আরএস শর্মার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, পলাতনা বিদ্যুত্ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট থেকে ভারতবাসী বিদ্যুত্ পাওয়া শুরু করবেন ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে। আর পুরো প্রকল্প চালু হবে ২০১২ সালের মার্চ মাসের মধ্যে। ২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ প্রকল্প সচল করতে এরই মধ্যে প্রকল্প এলাকায় গ্যাস লাইন বসানো হয়েছে।

ওএনজিসি চেয়ারম্যান আরএস শর্মা মিডিয়াকে জানিয়েছেন, এ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট থেকে আগামী বছরের ডিসেম্বর নাগাদ বিদ্যুত্ পাওয়া যাচ্ছে—এমন ধরনের নিশ্চয়তা তিনি সরকারের বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করছি এ প্রকল্পটি শুধু ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য আর্থিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটা পুরো উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ভারতের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে বড় কথা, এ প্রকল্প দুটি দেশের মাঝে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে যাবে। ’ আরএস শর্মার এ দুটি দেশের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। কারণ, তিনি পরে বেশ খোলামেলাভাবেই বলেছেন, এ প্রকল্পের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যে ধরনের সহযোগিতা, পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সমর্থন দেখা যাচ্ছে, তাতে আমার মনে হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত এ প্রকল্পের ব্যাপারে এক হয়ে গেছে।

এ ধরনের সম্পর্ক দেখতে পেয়ে আমাদের ভালো লাগছে। উল্লেখ্য, এ প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত ভারি মেশিনপত্র বাংলাদেশের ভূখণ্ড দিয়ে আগরতলায় নেয়া হবে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে খোলামেলা কিছু বলা না হলেও মিডিয়া মতে, মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত আশুগঞ্জ নদীবন্দর দিয়ে নৌপথে এসব ভারতীয় সরঞ্জাম ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকবে এবং বাংলাদেশের সড়কপথ ব্যবহার করে ভারতীয় ভারি যানযোগে তা আখাউড়া হয়ে আগরতলায় যাবে। এ সময় বাংলাদেশী কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। শুধু তাই নয়, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি বা প্রতিরোধ যাতে গড়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়ে রেখেছে।

ভারতীয় মিডিয়া মতে, পলাতনা প্রকল্প যখন সম্পন্ন হবে তখন বাংলাদেশও চাইলে এ প্রকল্প থেকে বিদ্যুত্ কিনতে পারবে। আর বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুত্ চাহিদা মেটাতে ভারতও বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুত্ বিক্রি করতে আগ্রহী। ভারতের ইকোনোমিক টাইমস পত্রিকার ২১ আগস্ট সংস্করণেও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ চাইলেই এ প্রকল্প থেকে বিদ্যুত্ কিনে তার চাহিদা মেটাতে পারবে। তথ্যসূত্র : দৈনিক আমারদেশ, ২৩.০৮.২০১০

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.