অধিক কথা নাস্তি!
কামরুপ কামাখ্যার এক এক্সপেলড সাধু, রবি ঠাকুরের বাড়িতে ঢুকে পেয়ারা চুরি করতে যেয়ে ধরা পড়েছিল ১৯২৪ সালে! বাড়ির সবাই ওকে মারত উদ্যত হলে, রবি ঠাকুর নিজ গুণে তাকে বাচান এবং ইনডাইরেক্ট শাস্তি দেয়ার মনস্ত করেন। ঐ সাধুকে নিজ বাটিতে আশ্রয় দেন, এবং প্রতিদিনের কবিতাগুলো ওকে ডেইলি ৪ঘন্টা করে আবৃতি করে শোনাতেন!
১সপ্তাহ যাবার পর, সাধু রবি ঠাকুরের পা জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে বলল,
মহর্ষি, আপনের চরণে পড়ি, এই শাস্তি আর দেবেন না আমাকে। আমি আপনাকে একটা বিশেষ তাবিজ দিচ্ছি এটা দিয়ে আপনি সময়গমন করতে পারবেন, ইচ্ছামত জায়গায়। বলে পদ্ধতি শিখিয়ে দিল!
রবি ঠাকুরের মনে মায়া উদ্রেক হল, ঠিকই তো, বেচারা প্রত্যেকদিন ৪ঘন্টা করে কবিতা শুনেছে। দিলেন সাধুকে ছেড়ে।
আর এরপর থেকে রাত্রি গহীন হলে মাঝে মাঝে ৫০/৬০ বছর আগের পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সময়ভ্রমণ করতে লাগলেন। আদিম জনবসতিতে যেতে পছন্দ করতেন বিশ্বকবি, বেশিরভাগ সময়েই আফ্রিকা আর আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ানদের মাঝে যেতেন। তবে সবসময় ভাগ্য সুপ্রসন্ন হত না, একবার আফ্রিকান এক গোত্র তাঁকে রোস্ট বানানোর উদ্দেশ্যে দৌড়ানি দিয়েছিল!
যাকগে, হঠাৎ একদিন কবিগুরুর মনে হল, বঙ্গভঙ্গ তো রদ হল, ঢাকা শহরে এখন অনেক ভদ্রঘরের লোকজন, তাদের শহরটাকে তারা কিভাবে উন্নত করে আগামি ৮০ বছরে একবার সরেজমিনে দেখে এলে কেমন হয়! সেইমত তিনি স্যুট-টাই পরিধান করে তাবিজের সাহায্যে এলেন ২০১০ এর ঢাকা শহরের বেইলি রোডে! এসে প্রথমেই চোখ পড়ল নিজের পোস্টারে,
সাথে আরেকটা কথা লেখা, ৫৫০ টাকায় আনলিমিটেড পিজা, ৮০টাকায় আনলিমিটেড পেপসি! পকেটে টাকা ছিল মাত্র হাজার খানিকের মত (ঐ তাবিজের আরেকটা গুণ ছিল যেখানে যাবে সেখানকার বেশকিছু টাকাও পকেটে অটোমেটিকালি এসে পড়ত)
টাকা দিয়ে খেতে বসলেন কবি! কিছু চোরামি করলেন প্রায় সবকটা পিজাই অর্ধেকটার বেশি খেয়ে বাকিটা পকেটে ভরে ডাকতে লাগলেন বাকিটুকুর নতুন স্বাদের পিজার জন্য! মোট ৬টা খেলেন এভাবে! আশেপাশের মানুষজন হা করে তাকিয়ে থাকল এরকম বেশভুষার একজন মানুষের এরকম কাঙালের মত খাওয়া দেখে, কবি অবশ্য এসব কেয়ার করলেন না! পেপসি আর মারতে পারলেননা এক গ্লাস খেয়েই ফুটলেন।
ততক্ষণে সন্ধ্যা হয়ে গেছে। বের হওয়া মাত্রই দুজন ধরে দাড়ি ধরে ব্যাপক টানাটানি শুরু করল।
ঘটনা কি বুঝতে পারলেন না। জানতে চাইলেন, উত্তর পেলেন, এরকম ভাল কোয়ালিটির নতুন দাড়ি রেয়ার পাওয়া যায়, থিয়েটারে এর ব্যাপক চাহিদা; বলেই আরেকটা থাপ্পড় দিল। কোনমতে জান নিয়ে কয়েক পা দৌড়িয়ে তাবিজ হাতে নিয়ে বললেন কবি, ১৯২৪ ঠাকুরবাড়ি, রাত ২প্রহর! এদিকে ১৯২৪সালের জোড়াসাকোতে পৌছানর পর আরেক সমস্যা, স্যুট পড়া অবস্হায় কবিকে দেখে আশেপাশের কুকুরগুলো অভ্যস্ত নয়, খানিকটা দৌড়ানিও খেতে হল তাঁকে। ঘরে ফিরে তিনি আরেকবার মনে করলেন সেই পুরান আপ্তবাক্য,
ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না!
অতঃপর তিনি মনের সুখে পিজাহাটের পিজা চর্বন করিতে লাগিলেন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।