আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফিরে যাই শৈশবে.......মনে পড়ে বারবার........



পাছে লোকে কিছু বলে – কামিনী রায় করিতে পারি না কাজ সদা ভয় সদা লাজ সংশয়ে সংকল্প সদা টলে,- পাছে লোকে কিছু বলে। আড়ালে আড়ালে থাকি নীরবে আপনা ঢাকি, সম্মুখে চরণ নাহি চলে পাছে লোকে কিছু বলে। হৃদয়ে বুদবুদ মত উঠে চিন্তা শুভ্র কত, মিশে যায় হৃদয়ের তলে, পাছে লোকে কিছু বলে। কাঁদে প্রাণ যবে আঁখি সযতনে শুকায়ে রাখি;- নিরমল নয়নের জলে, পাছে লোকে কিছু বলে। একটি স্নেহের কথা প্রশমিতে পারে ব্যথা,- চলে যাই উপেক্ষার ছলে, পাছে লোকে কিছু বলে।

মহৎ উদ্দেশ্য যবে, এক সাথে মিলে সবে, পারি না মিলিতে সেই দলে, পাছে লোকে কিছু বলে। বিধাতা দেছেন প্রাণ থাকি সদা ম্রিয়মাণ; শক্তি মরে ভীতির কবলে, পাছে লোকে কিছু বলে। আজিকার শিশু – সুফিয়া কামাল আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুল খেলা তোমরা এ যগে সেই বয়সেই লেখাপড়া কর মেল। আমরা যখন আকাশের তলে ওড়ায়েছি শুধু ঘুড়ি তোমরা এখন কলের জাহাজ চালাও গগন জুড়ি। উত্তর মেরু, দক্ষিণ মেরু সব তোমাদের জানা আমরা শুনেছি সেখানে রয়েছে জিন ,পরী, দেও, দানা।

পাতালপুরীর অজানা কাহিনী তোমরা শোনাও সবে মেরুতে মেরুতে জানা পরিচয় কেমন করিয়া হবে। তোমাদের ঘরে আলোর অভাব কভূ নাহি হবে আর আকাশ-আলোক বাঁধি আনি দূর করিবে অন্ধকার। শস্য-শ্যামলা এই মাটি মা’র অঙ্গ পুষ্ট করে আনিবে অটুট স্বাস্থ্য, সবল দেহ-মন ঘরে ঘরে। তোমাদের গানে, কল-কলতানে উছসি উঠিবে নদী- সরস করিয়া তৃণ ও তরুরে বহিবে সে নিরবধি তোমরা আনিবে ফুল ও ফসল পাখি-ডাকা রাঙা ভোর জগৎ করিবে মধুময়, প্রাণে প্রাণে বাঁধি প্রীতিডোর। আদর্শ ছেলে – কুসুমকুমারী দাশ আমাদের দেশে সেই ছেলে কবে হবে কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে? মুখে হাসি বুকে বল, তেজে ভরা মন ‘মানুষ হইতে হবে’- এই তার পণ।

বিপদ আসিলে কাছে হও আগুয়ান নাই কি শরীরে তব রক্ত, মাংস, প্রাণ? হাত পা সবারই আছে, মিছে কেন ভয়? চেতনা রয়েছে যার, সে কি পড়ে রয়? সে ছেলে কে চাই বল, কথায় কথায় আসে যার চোখে জল, মাথা ঘুরে যায়? মনে প্রাণে খাট সবে, শক্তি কর দান, তোমরা ‘মানুষ’ হলে দেশের কল্যাণ। আমাদের গ্রাম – বন্দে আলী মিঞা আমাদের ছোটো গাঁয়ে ছোটো ছোটো ঘর থাকি সেথা সবে মিলে কেহ নাহি পর। পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই একসাথে খেলি আর পাঠশালে যাই। হিংসা ও মারামারি কভু নাহি করি, পিতা-মাতা গুরুজনে সদা মোরা ডরি। আমাদের ছোটো গ্রামে মায়ের সমান, আলো দিয়ে বায়ু দিয়ে বাঁচাইছে প্রাণ।

মাঠভরা ধান আর জলভরা দিঘি, চাঁদের কিরণ লেগে করে ঝিকিমিকি। আমগাছ জামগাছ বাঁশ ঝাড় যেন, মিলে মিশে আছে ওরা আত্মীয় হেন। সকালে সোনার রবি পূব দিকে ওঠে পাখি ডাকে, বায়ু বয়, নানা ফুল ফোটে। কাজলা দিদি – যতীন্দ্র মোহন বাগচী বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই, মাগো আমার শোলক-বলা কাজলা দিদি কই? পুকুর ধারে লেবুর তলে থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না একলা জেগে রই- মাগো আমার কোলের কাছে কাজলা দিদি কই? সেদিন হতে কেন মা আর দিদিরে না ডাকো;- দিদির কথায় আঁচল দিয়ে মুখটি কেন ঢাকো? খাবার খেতে আসি যখন, দিদি বলে ডাকি তখন, ওঘর থেকে কেন মা আর দিদি আসে নাকো? আমি ডাকি তুমি কেন চুপটি করে থাকো? বল মা দিদি কোথায় গেছে, আসবে আবার কবে? কাল যে আমার নতুন ঘরে পুতুল-বিয়ে হবে! দিদির মত ফাঁকি দিয়ে, আমিও যদি লুকাই গিয়ে তুমি তখন একলা ঘরে কেমন করে রবে, আমিও নাই-দিদিও নাই- কেমন মজা হবে। ভুঁই চাপাতে ভরে গেছে শিউলি গাছের তল, মাড়াস্ নে মা পুকুর থেকে আনবি যখন জল।

ডালিম গাছের ফাঁকে ফাঁকে বুলবুলিটি লুকিয়ে থাকে, উড়িয়ে তুমি দিও না মা, ছিঁড়তে গিয়ে ফল,- দিদি এসে শুনবে যখন, বলবি কি মা বল! বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই- এমন সময় মাগো আমার কাজলা দিদি কই? লেবুর ধারে পুকুর পাড়ে ঝিঁঝিঁ ডাকে ঝোপে ঝাড়ে’ ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, তাইতে জেগে রই রাত্রি হলো মাগো আমার কাজলা দিদি কই? পারিব না – কালী প্রসন্ন ঘোষ পারিব না এ কথাটি বলিও না আর কেন পারিবে না তাহা ভাব এক বার, পাঁচজনে পারে যাহা, তুমিও পারিবে তাহা, পার কি না পার কর যতন আবার এক বারে না পারিলে দেখ শত বার। পারিব বলে মুখ করিও না ভার, ও কথাটি মুখে যেন না শুনি তোমার, অলস অবোধ যারা কিছুই পারে না তারা, তোমায় তো দেখি নাক তাদের আকার তবে কেন পারিব না বল বার বার? জলে না নামিলে কেহ শিখে না সাঁতার হাঁটিতে শিখে না কেহ না খেয়ে আছাড়, সাঁতার শিখিতে হলে আগে তব নাম জলে, আছাড়ে করিয়া হেলা, হাঁট বার বার পারিব বলিয় সুখে হও আগুয়ান। মোদের গরব, মোদের আশা – অতুলপ্রসাদ সেন মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা! তোমার কোলে, তোমার বোলে, কতই শান্তি ভালবাসা! কি যাদু বাংলা গানে!- গান গেয়ে দাঁড় মাঝি টানে, এমন কোথা আর আছে গো! গেয়ে গান নাচে বাউল, গান গেয়ে ধান কাটে চাষা। । ঐ ভাষাতেই নিতাই গোরা, আনল দেশে ভক্তি-ধারা, মরি হায়, হায় রে! আছে কই এমন ভাষা, এমন দুঃখ-শ্রান্তি-নাশা! বিদ্যাপতি, চণ্ডী, গোবিন, হেম, মধু, বঙ্কিম, নবীন- আরও কত মধুপ গো! ঐ ফুলেরি মধুর রসে, বাঁধলো সুখে মধুর বাসা।

। বাজিয়ে রবি তোমার বীণে, আনলো মালা জগৎ জিনে- গরব কোথায় রাখি গো! তোমার চরণ-তীর্থে আজি, জগৎ করে যাওয়া-আসা ওই ভাষাতেই প্রথম বোলে, ডাকনু মায়ে ‘মা’, ‘মা’ বলে; ওই ভাষাতেই বলবো ‘হরি’, সাঙ্গ হলে কাঁদা-হাসা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.