ফেসবুক আইডি:নাই
ভারতের ‘বাঙালি’ অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির ঢাকার ঝটিকা সফরের নানা দিক নিয়ে এখনও বিভিন্ন মহলে জোর আলোচনা চলছে। এটাই স্বাভাবিক। কারণ, এদেশের কোনো কোনো বিশিষ্টজনের ‘দাদা’ প্রণব মুখার্জি যেনতেন মন্ত্রী বা রাজনীতিক নন। প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের আমলে তিনিই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে নির্ধারকের ভূমিকা পালন করে চলেছেন। সাধারণ মানুষের মধ্যেও তার সম্পর্কে অনেক ধারণা রয়েছে।
২০০৭ সালে সিডরের পর পাঁচ লাখ টন চাল রফতানি নিয়ে ‘খেল’ দেখানোর অভিযোগে মানুষ তাকে ‘চালবাজ’ হিসেবে বেশি চেনে। অন্য দু-একটি কারণেও প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশে বিতর্কিত হয়ে এসেছেন।
এরকম একটি বিষয় হিসেবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরপর এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রাক্কালে তার প্রথম ঢাকা সফরের উল্লেখ করা হয় (৯ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯)। তখন তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ১০ ঘণ্টার ওই সফরে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি অত্যধিক গুরুত্বের সঙ্গে তিনি সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ’র সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছিলেন।
কিন্তু ‘সময়ের অভাবে’ বিরোধী দলের নেত্রী এবং তিন-তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত্ করার সৌজন্য দেখাতে পারেননি! এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক বিধি-ব্যবস্থার ব্যাপারে ব্যক্তি প্রণব মুখার্জির তো বটেই, ভারত সরকারের মনোভাবেরও ন্যক্কারজনক প্রকাশ ঘটেছিল। কারণ, গণতন্ত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত্ করাটা প্রণব মুখার্জির কর্তব্য ছিল। তা না করায় মইন উ’র সঙ্গে একান্ত বৈঠক নিয়ে সে সময় প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল। কারণ, ততদিনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এসেছিল এবং মইন উ রাষ্ট্রীয় কোনো বিশেষ অবস্থানে ছিলেন না।
এবারের ঝটিকা সফরেও আলোড়ন তুলেছেন প্রণব মুখার্জি।
মাত্র ঘণ্টা পাঁচেকের জন্য ৭ আগস্ট তিনি ঢাকায় এসেছিলেন। ফিরে যাওয়ার কথা ছিল রাত ৮টায়। কিন্তু দেড় ঘণ্টা দেরি হয়েছে আওয়ামী লীগের তিন সিনিয়র নেতার সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের কারণে। বৈঠকটি প্রণবের ঘোষিত সফরসূচিতে ছিল না। ফলে ব্যাপক কৌতূহলের এবং জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।
পর্যবেক্ষকদের একটি অংশ একে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য ‘বিশেষ বার্তা’ মনে করছেন। অনেকে আবার পরোক্ষ ‘ধমক’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তারা বলেছেন, প্রণব মুখার্জি বুঝিয়ে গেছেন, ঢাকায় আওয়ামী লীগের মধ্যেই ভারতের ‘সেকেন্ড লাইন’ রয়েছে। অন্যদিকে পরদিন এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ঢাকায় প্রণব বাবুর অনেক ‘বন্ধু’ আছেন। তিনি তার কোন ‘বন্ধু’র সঙ্গে সাক্ষাত্ করবেন তা তো আমি বলে দিতে পারি না।
দীপু মনি অবশ্য স্বীকার করেছেন, ওই বৈঠক সম্পর্কে তিনি জেনেছেন পত্রিকা থেকে। আগে জানতেন না।
আওয়ামী লীগের তিন সিনিয়র নেতা আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সঙ্গে প্রণব মুখার্জির বৈঠক নিয়ে আলোচনা জমে ওঠার কারণ বুঝতে হলে এই নেতাদের দিকে নজর ফেরাতে হবে। মইন উ’দের দিনগুলোতে তারা ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিলেন। আবদুর রাজ্জাক এবং এই তিনজন সে সময় ‘র্যাটস’ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন।
বৈঠকে শুধু ‘র্যাটস’-এর রাজ্জাক ছিলেন না, সম্ভবত অসুস্থতার কারণে। তিনজনের মধ্যে আবার সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সঙ্গে প্রণব মুখার্জির বিশেষ সম্পর্ক নিয়ে বাজারে অনেক রটনা রয়েছে। উদ্দিন সাহেবদের সময় কলকাতার ঢাকুরিয়া আবাসিক এলাকায় অবস্থিত প্রণব মুখার্জির অ্যাপার্টমেন্টে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের যাওয়া ও অবস্থান করা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিল। কারণ, একান্ত ব্যক্তিগত ওই অ্যাপার্টমেন্টে প্রণব মুখার্জি সাধারণত অতি ঘনিষ্ঠজনদের ছাড়া অন্য কাউকে যেতে দেন না। অন্যদিকে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত নাকি সেখানে মাঝে-মধ্যেই গিয়ে থাকেন।
কথা অবশ্য শুধু সুরঞ্জিতের কারণে ওঠেনি। রাজনৈতিক অঙ্গনের আলোচনায় প্রধান চরিত্রে রয়েছেন প্রণব মুখার্জি। দ্বিতীয় পর্যায়ে এসেছে তার সেই তিন ‘বন্ধু’র নাম—যাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে ‘মাইনাস’ করার চেষ্টা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে জানান দিয়ে রেখেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জলিল। সরকার পতনের ‘ট্রাম্প কার্ড’ দেখানো থেকে গৃহযুদ্ধের হুমকি দেয়া পর্যন্ত নানাভাবে ‘তুফান’ বইয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে রাজনীতির ‘তুখোড় খেলোয়াড়’ হিসেবে প্রসিদ্ধি অর্জন করেছিলেন তিনি।
এই আবদুল জলিল গত বছরের ২১ এপ্রিল সাংবাদিকদের কাছে রীতিমত তথ্য বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গেছেন। নিজের সুখ-দুঃখ আর অভিমানের কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ওয়ান-ইলেভেনে ডিজিএফআইয়ের দালালি করে যারা সুবিধা নিয়েছে তারাই এখনও সুবিধা নিচ্ছে। বর্তমান মন্ত্রিসভার অনেকেই ডিজিএফআইয়ের ‘পেইড এজেন্ট’। নাম ধরে ধরে তিনি বলেছেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ডিজিএফআইয়ের দালালি করেছেন। আবদুল জলিলের ভাষাও ছিল যথেষ্ট আক্রমণাত্মক—‘সব ব্যাটা ওই সময় ডিজিএফআইয়ের দালালি করেছে।
কে দালালি করেনি সাহস থাকলে বলুক। ’ জলিল আরও বলেছিলেন, তখন কারা সকালে ডিজিএফআইয়ের সঙ্গে মিটিং করে বিকালে দলের সভায় অংশ নিয়েছেন—সবই নাকি দেশের মানুষ জানে। সৈয়দ আশরাফুলের প্রতি ইঙ্গিত করে আবদুল জলিল বলেছিলেন, প্রথমে পালিয়ে লন্ডন চলে যাওয়ার পর কোন নিশ্চয়তা পেয়ে তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন তা কি দেশের মানুষ জানে না?
কৌতূহলোদ্দীপক বিষয় হলো, আবদুল জলিলের অমন আক্রমণাত্মক বক্তব্যের জবাব দিতেও এদিক-সেদিক করেছিলেন ‘ডিজিএফআইয়ের দালাল’ হিসেবে চিহ্নিত চার নেতা। প্রথমে তারা কথাই বলতে রাজি হননি। পরে দু’জন অবশ্য ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন।
আমির হোসেন আমু বলেছিলেন, ‘আবদুল জলিলের মুখেই বারবার ডিজিএফআইয়ের কথা শোনা গেছে। ’ জলিলের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেছেন, ‘দালালি যারা করেছেন তারাই বলতে পারবেন ডিজিএফআইয়ের দালাল কারা। যে সংস্থার দালালি করেছে সে ডিজিএফআইও বলতে পারবে কারা তার দালালি করেছে। ’ দ্বিতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছিলেন অনেকটা কূটনীতিকের ভাষায়—‘বর্তমানে আবদুল জলিল সংক্ষুব্ধ ও বিক্ষুব্ধ মানুষ। ক্ষুব্ধ-বিক্ষুব্ধ ব্যক্তি অনেক কিছুই বলতে পারেন।
তাদের কোনো কথা আমলে নিতে নেই। ’ আমির হোসেন আমু ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে থাকার পর মুখ খুলেছিলেন আবদুর রাজ্জাকও। যুবলীগের এক অনুষ্ঠানের ভাষণে ইঙ্গিতে আবদুল জলিলকে ‘ছোট ভাই’ সম্বোধন করে তিনি বলেছিলেন ‘কেউ ভুলের রাজনীতি করলে তাকে ভুলের মাশুল দিতে হবে। ’ উল্লেখ্য, আবদুল জলিলের দেয়া বক্তব্য নিয়ে তখন দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা শোনা গেলেও বিষয়টিকে শেষ পর্যন্ত পাশ কাটানো হয়েছিল। এর ফলেও ‘ডিজিএফআইয়ের দালালি’ সংক্রান্ত অভিযোগ শক্তি অর্জন করেছিল।
এখানেই রয়েছে প্রণব মুখার্জির বৈঠক নিয়ে আলোচনা জমে ওঠার আসল কারণ। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, আবদুল জলিল সুকৌশলে ভারতের নাম বলার পরিবর্তে ডিজিএফআইকে টেনে আনলেও সবকিছুর পেছনে আসলে ভারতই প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল। ভারতের পরিকল্পনা অনুসারেই ২০০৬ সালের অক্টোবরে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার পর মুহূর্ত থেকে লগি-বৈঠার হত্যা-তাণ্ডবের মাধ্যমে দেশের সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশকে ভয়ঙ্কর করে তোলা হয়েছিল, সংবিধান নির্দেশিত নির্বাচনকে ভণ্ডুল করা হয়েছিল। আবদুল জলিলসহ আওয়ামী লীগের বিশেষ কয়েকজন নেতা সে কর্মকাণ্ডে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন। উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হলো, ওই দিনগুলোতে মাতামাতি যারা করেছেন, তাদের অনেকেই জানতেন না, তারা আসলে কার স্বার্থে কী করছিলেন।
এখানে বিশেষ করে আবদুল জলিলের কথা স্মরণ করতেই হবে। কারণ, ভীতি-আতঙ্কে ভরা ওই দিনগুলোতে প্রতিদিন তিনি কথায় কথায় গৃহযুদ্ধ বাঁধানোর হুমকি দিয়েছেন। আবদুল জলিল যদি জানতেন, তাদের কর্মকাণ্ডের পরিণতিতে সৃষ্ট অবস্থার সুযোগ নিয়ে জেনারেল মইন উ’রা ক্ষমতা দখল করবেন এবং ছেলের বয়সীদের ‘স্যার’ ডাকতে ডাকতে তাকে মুখে ফেনা তুলতে হবে, জীবন বাঁচানোর জন্য প্রিয় নেত্রী সম্পর্কে অশ্লীল শব্দযোগে কুিসত কথাবার্তা বলতে হবে এবং সর্বতোভাবে মান-সম্মান খোয়ানোর পর রীতিমত দরখাস্ত করে ও জীবনে রাজনীতি না করার ঘোষণা দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাতে হবে—তাহলে তিনি নিশ্চয়ই নির্বাচন ভণ্ডুল করার কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিতেন না। কথায় কথায় গৃহযুদ্ধের ভয় তো দেখাতেনই না। কিন্তু আবদুল জলিলের কাছে সে সময় লগি-বৈঠার হত্যা-সন্ত্রাসকেই ক্ষমতায় যাওয়ার ‘সিঁড়ি’ মনে হয়েছিল।
আওয়ামী লীগের আরও অনেকের ক্ষেত্রেও কথাটা সমানভাবে প্রযোজ্য।
‘ঠ্যালা-ধাক্কা’ খেয়ে এবং ছেলের বয়সীদের ‘স্যার’ ডেকে-ডেকে মইন উ’দের সময়ে এসে আবদুল জলিল সত্য অনুধাবন করেছিলেন। কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। বলা দরকার, কোনো দেশে ‘রোডম্যাপ’ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য আবদুল জলিলদের মতো নেতাদেরই বেছে নেয়া হয়। অন্যদিকে রাজনীতির তুখোড় ‘খেলোয়াড়’ হলেও আবদুল জলিল কিন্তু বুঝতেই পারেননি যে, তাকে প্রকৃতপক্ষে ছেলেপেলেদের খেলার ‘ঘুড্ডি’ বানিয়ে ফেলা হয়েছিল।
তাকে শুধু ওড়ানোই হয়েছে, ‘লাটাই’ তার হাতে ছিল না। তারপর ‘রোডম্যাপের’ ওই বিশেষ পর্বের খেলা যখন সাঙ্গ হয়েছে তখন লাটাইওয়ালারা আরও অনেকের মতো আবদুল জলিলের সুতাও কেটে ফেলেছে। কারণ, তাকে তখন আর লাটাইওয়ালাদের কোনো দরকার নেই। তার দরকার ফুরিয়ে গেছে!
এখানেই রয়েছে ভবিষ্যতের জন্য চিন্তার খোরাক। কারণ, এখনও সেই ‘রোডম্যাপ’ বাস্তবায়ন করার তথা ভারতের স্বার্থ আদায় করার কাজই চলছে।
শেখ হাসিনাকে সামনে রেখে চলছেও পুরোদমে। কিন্তু সাধারণভাবে ভারতের স্বার্থে ভূমিকা পালন করলেও কোনো কোনো বিষয়ে শেখ হাসিনা নাকি ইদানীং ঘাড় বাঁকানোর চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে গত জানুয়ারিতে তার দিল্লি সফরকালে স্বাক্ষরিত যুক্ত ঘোষণার বাস্তবায়নে ভারতের অনিচ্ছা এবং ধীরগতি দেখে শেখ হাসিনা নাকি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি নাকি বুঝতে পেরেছেন, বিষয়টি তার জন্য সম্মানজনক হয়নি। এজন্যই ট্রানজিট ও করিডোরের মতো বিষয়গুলো নিয়ে শেখ হাসিনা নাকি এদিক-সেদিক করার চেষ্টা করেছেন।
এসবই অবশ্য ভারতীয় পত্র-পত্রিকার খবর। ভারত তাই বলে রাগ করে পিছিয়ে যায়নি। দরকার যেহেতু তারই বেশি, সেহেতু পিছিয়ে যাওয়ার কথাও নয়। একই কারণে সাত হাজার কোটি টাকার ঋণ দেয়ার অর্থাত্ লোভ দেখানোর পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। শেখ হাসিনার মান ভাঙানোসহ বাংলাদেশকে বাগে আনার দায়িত্ব পেয়েছেন প্রণব মুখার্জি।
কিন্তু শুধু ঋণ দিয়ে চলে যাওয়াকে যথেষ্ট মনে করেননি এই ‘বাঙালি’ মন্ত্রী। তিনি তাই ‘র্যাটস’-এর ‘আর’ তথা রাজ্জাককে ছাড়া ‘অ্যাটস’ তথা আমু-তোফায়েল ও সুরঞ্জিতের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন। উদ্দেশ্যও গোপন রাখা হয়নি। বলা হচ্ছে, বৈঠকটির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আসলে ‘ধমক’ দিয়ে গেছেন প্রণব মুখার্জি। শেখ হাসিনা যদি কোনো কারণে ‘অবাধ্য’ হওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে ভারত তার ‘সেকেন্ড লাইন’কে কাজে লাগাবে।
তেমন অবস্থায় নেতৃত্বে চলে আসবেন ‘র্যাটস’ নামে পরিচিত চার নেতা—যারা এক সময় শেখ হাসিনাকে ‘মাইনাস’ করার কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সঙ্গে নিশ্চয়ই আরও অনেকেই থাকবেন। বড় কথা, বাংলাদেশের রাজনীতিকে কীভাবে দিকভ্রান্ত করতে হয় এবং মইন উ’র মতো লোকজনকে কীভাবে দলে ভেড়াতে হয়—এ সবই রয়েছে ভারতের নখদর্পণে। রয়েছে মাত্র সেদিনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাও। শেখ হাসিনা সম্পর্কেও সবচেয়ে বেশি জানে ভারতই।
কীভাবে তাকে ক্ষমতায় আনা হয়েছে সে ব্যাপারেও ভারতের রয়েছে সুনির্দিষ্ট ধারণা ও অভিজ্ঞতা। এসব কারণেই প্রণব মুখার্জি ‘ধমক’ দেয়ার বা ‘বার্তা’ পাঠানোর কাজটুকু সেরে গেছেন। তবে তিনি সম্ভবত এখনই শেখ হাসিনাকে হারাতে চান না। রাজনৈতিক অর্থে রশি টানাটানিতে শেখ হাসিনা এবং প্রণব মুখার্জির মধ্যে কার জয় হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। শেখ হাসিনা ঝামেলামুক্তভাবে টিকে গেলে বুঝতে হবে, প্রণব মুখার্জি সঠিক ‘চাল’ই দিয়ে গেছেন!
লেখক : শাহ আহমদ রেজা, সাংবাদিক ও ইতিহাস গবেষক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।