উন্নত দেশে ব্যক্তি স্বাধীনতা
বিটিসিএল এর অবসান কি আসন্ন?
এক সময় এই প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা পাওয়ার জন্য নানা প্রকারের তোষামোদ করতে হোত। ঐ সময়ে এই প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল , বিটিএণ্ডটিবি সংক্ষেপে টিএণ্ডটি বলা হোত। এখনও বিটিসিএল কে জনগন টিণ্ডটি হিসেবেই বেশি চেনে। পূর্বে একটি প্রচলন ছিল, "টি এণ্ড টি থেকে সংযোগ পেতে হলে, দু জন ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে চিনতে হবে, লাইনম্যান ও চেয়ারম্যান"।
তত্বাবধায়ক সরকার বিটিএণ্ডটিবি কে বিটিসিএল করল।
কিন্তু কোন লাভ হয়েছে কি? আমার মনে হয় মোটেই না।
বর্তমানে সকল প্রকার সিদ্ধান্তের জন্য সচিব ডাক ও টেলিযোগাযোগ মণ্ত্রনালয়ের নিকট নথি পাঠাতে হয়, কারন কোম্পানী করনের ফলে সচিব সরাকরী সিদ্ধান্তে সয়ংক্রিয়ভাবে এর পরিচালক বোর্ড এর সভাপতি। তিনি শুধু এি এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হলে কোন অসুবিধা হয়তো হোত না। তিনি এরকম প্রায় ছয়টি প্রতিষ্টানের সভাপতি তথা সিদ্ধান্ত গ্রহনকারি। এগুলো হোল
১।
বিটিআরসি
২। বিএসসিসিএল
৩। বা কে শি লিঃ
৪। টেলিফোন শিল্প সংস্থা
৫। টেলিটক
এর অন্তর্ভুক্ত চার নং প্রতিষ্ঠানটি তথা "টেশিস" কোন কাজ করছে না, অর্থাৎ এটি বন্ধ।
বাংলাদেশে আসার পর গত মার্চ মাসে টেলিফোনের জন্য আবেদন করি, ইচ্ছে ছিল ডি এস এল সংযোগটা বিটিসিএল থেকেই নেব। আবার বিটিসিএল টেলিফোন না থাকলে ডিএসএল সংযোগ দেবে না(আশ্চর্য যুক্তি)। চার মাস পর গুরু গাম্ভির্য কন্ঠস্বরে লাইনম্যান আমার মোবাইলে গত তিরিশে জুলাই ফোন করলেন।
--- "আপনার নাম কি ফেরদাউস আল আমিন?"
আমি বলি, "হাঁ"।
--- "আমি লাইনম্যান 'অমুক', আপনে কি টেলিফোনের জন্য 'ঐ' ঠিকানায় এ্যপলাই করছেন?
আমি বলি, "হাঁ"।
--- "আপনারে তো বাসায় পাওয়া যায়না"।
আমি বলি, "ঠিক আছে, আগামিকাল আসেন, বাসায় লোক থাকবে"।
জুলাই মাস চলে গেল, আগষ্ট মাস এলো, লাইনম্যান এর খোঁজ নেই। লাইনম্যান এর ইউনিয়ন আছে সুতরাং ওনাকে কিছু বলা যাবে না, উনি তো ওনার কাজ করছেন, বাসায় এসছেন, লাইন দিতে, গ্রাহক নাই, তাই ওনার কিছু করার নাই। কিন্তু বিটিসিএল তো কোন আয়ের সংযোগ হোল না।
উত্তর আমেরিকায় এই সকল কাজ একটি আলাদা কোম্পানী করে থাকে। একটি সংযোগ প্রদানে তাদের চুক্তি অনুসারে এককালিন অর্থ প্রদান করা হয়। এবং লাইন রেন্ট এর পরিমানও তাদেরকে দেয়া হয়। কোন ফোন কাটা গেলে দু ঘন্টা সময়ে সাড়া না হলে ঐ লাইন রেন্ট কর্তন করা হয়। প্রতিনিয়ত একই ধরনের ত্রুটি কয়েকটি ঘটে থাকলে অনুসন্ধান করা হয়।
চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান এর ব্যর্থতা প্রমান হলে, অর্থ দন্ড প্রদান করত চুক্তি বাতিল করে নতুন প্রতিষ্ঠানকে একই প্রকারের সেবা প্রদানে চুক্তি করা হয়।
এই ধরনের বৈপ্লবিক পরিবর্তন বিটিসিএল এ আনা না হলে, আমার ধারনা বিটিসিএল এর অবসান আসন্ন। এজন্য সরকারকেই দায় দায়িত্ব নিতে হবে।
বিশ্বে যে কয়টি দেশে টেলিকম এ কাজ করেছি, সরকারের নিজস্ব প্রতিষ্ঠানকে যুগোপযোগি না করে, অবসানের দিকে ঠেলে দেবার উদাহরন এরকম বাস্তবতা এই পর্যন্ত দেখিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।