নিত্য-নতুন উদ্ভাবনের সঙ্গে নতুন বিজ্ঞানী তৈরিকেও ব্রত হিসেবে নিয়েছেন পাটবিষয়ক মৌলিক ও ফলিত গবেষণা প্রকল্পের বিজ্ঞানীরা। জাতীয় সংসদ ভবনের ঠিক বিপরীতে আমাদের জাতীয় গৌরবের প্রতীক হয়ে ওঠা শ্বেত শুভ্র ওই জিনোম গবেষণা ভবনটিকে তরুণ গবেষক তৈরির আঁতুড়ঘর হিসেবে তৈরি করতে চান তাঁরা। দেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওই জিনোম গবেষণাকেন্দ্রে নিয়ে এসে তাঁদের হাতে-কলমে জৈব প্রযুক্তি গবেষণার কাজ শেখানো শুরু করে দিয়েছেন আমাদের বিজ্ঞানীরা। পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের একটি প্রকল্পের আওতায় এই ভবনে এখন জিনোম গবেষণা চলছে। প্রকল্প শেষ হলেই কি গবেষক তৈরির এই আঁতুড়ঘরের মৃত্যু হবে? মাকসুদুলরা তা অবশ্য মনে করেন না।
তাঁরা স্বপ্ন দেখেন, এই ভবন বাংলাদেশের একটি জাতীয় জিনোম গবেষণাকেন্দ্রে পরিণত হবে। মাকসুদুলের স্বপ্ন, এখানে দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানীরা আসবেন। তাঁরা দেখবেন, কীভাবে আমাদের মতো একটি স্বল্পোন্নত দেশে উন্নত দেশের চেয়ে দ্রুতগতিতে প্রাণের জীবনরহস্য উন্মোচিত হচ্ছে। মাকসুদুল বলছিলেন, আমাদের জিনোম গবেষণাকেন্দ্রের সামর্থ্য বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর গবেষণাকেন্দ্রের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। এখনো বিশ্বের যেকোনো উদ্ভিদ ও প্রাণের জীবনরহস্য উন্মোচনের সামর্থ্য আছে।
এমনকি মানুষের জীবনরহস্য উন্মোচনও এখানকার প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানীদের ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। শুধুই নিজেরা গবেষণা করে চমক লাগানো সব ফলাফল দিয়েই ক্ষান্ত থাকবেন মাকসুদুলরা তা তো নিশ্চয়ই না। অন্য সরকারি গবেষণা সংস্থাগুলোকেও জিনোম প্রযুক্তি দিয়ে সহযোগিতা করার স্বপ্ন আছে তাঁদের। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, আণবিক কৃষি গবেষণাসহ বিভিন্ন গবেষণাকেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের নতুন জাত উদ্ভাবন ও পুরোনো জাতের সমস্যা সমাধানের পথ বাতলে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন আমাদের জিনোম গবেষকেরা। তাই জিনোম গবেষক দলের আরেক দলনেতা মনজুরুল আলম বেশ বিনয়ের সঙ্গে বলেন, ‘আমাদের দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে কৃষিবিজ্ঞানীদের অনন্য অবদানের কারণে।
কিন্তু সামনে আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ। প্রতিকূল প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের লড়তে হবে। লবণাক্ততা, বন্যা, খরা তো আছেই, রোগজীবাণুকে কীটনাশক ছাড়া প্রযুক্তি দিয়ে দমন করার কৌশল বের করা এখন আমাদের জন্য অনেক সহজ হয়ে গেছে। আমরা যে জিনোমবিজ্ঞানের যাত্রা শুরু করেছি, তা দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দিতে না পারলে তো এই গবেষণার কোনো মূল্য নেই। ’ চোখে স্বপ্ন আর অবয়বে আত্মপ্রত্যয় নিয়ে দলনেতা মাকসুদুল আলমও পাশে বসে ওই কথায় সায় দেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।