না, এখনও প্রধানমন্ত্রী পুরা বাক্যটি বলেননি কিন্ত প্রায় অর্ধেক বলে ফেলেছেন । আমার বিশ্বাস, খুব শীঘ্রই তিনি পুরা বাক্যটিই মুখ ফসকে হলেও বলে ফেলতে পারেন । কারন,যেহেতু বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীসরকারের অধীনে বিরোধীদলকে নির্বাচনে আসার জন্য সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, সেহেতু বিরোধীদলীয় নেতৃ বেগম খালেদাজিয়ার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীসরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়ার প্রসংগটিও উঠে আসা স্বাভাবিক । সে ক্ষেত্রে বিরোধীদলীয় দাবী যদি সরকারের কাছে অগ্রহনযোগ্য হয়, তখন সরকারীদলের দাবীও বিরোধীদলের কাছে অগ্রহনযোগ্য হওয়াটাই যুক্তিক । তাছাড়া, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনেক মায়া বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য ! যার কিছুটা আভাস আমরা পেয়েছিলাম বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ।
সেই সময় দুই নেত্রীই মাইনাস টু ফর্মূলা বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে সংসদভবন এলাকার আধাকিলোমিটার দূরত্ত্বের দুই সাবজেলে বন্দি ছিলেন । তখন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি তার ভালবাসার নিদর্শন হিসাবে নিজ হাতে পায়েস রান্না করে খালেদা জিয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন ! তাছাড়া দূর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়ার পুত্রদ্বয় তৎকালীন সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক যে অবর্ননীয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, তাতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যে বেশ কষ্ট পেয়েছেন, তা অনেকবারই তিনি প্রকাশ করেছেন ! তাইতো খালেদা জিয়াকে বার বারই তিনি সেই কথাটিই মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে, আবার যদি সেই একই ধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে এবং এসে যদি আবার খালেদা জিয়ার ছেলেদেরকে নির্যাতন করে, তখন কি লাভ হবে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার এনে । এই কথাটি বলে প্রধানমন্ত্রী আসলে শুধু বেগম খালেদা জিয়াকে ভয় দেখাচ্ছেন না, নিজের ভয়টি খালেদা জিয়ার মাধ্যমে প্রকাশ করছেন মাত্র । কারন, এবার তো পালা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর । কারন, খালেদা জিয়ার পুত্রদ্বয় যে পরিমান দূর্নীতির জন্য এমন বর্ননাতিত নির্যাতনের শিকার হয়েছিল, সেই তুলনায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নিকটাত্ত্বীয়রা ও দলীয় নেতাকর্মীরা কি পরিমান দূর্নীতি করেছে, তা আর কেউ না জানলেও প্রধানমন্ত্রী তো ভালোভাবেই জানেন ! তাই পুত্রদ্বয়ের পূন:নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে যদি খালেদা জিয়াকে বশে আনা যায়-দূরদর্শী পিতা বংগবন্ধু কন্যার দূরদর্শী চিন্তা বটে ! আর যদি তাতে কাজ না হয়, তবে প্রধানমন্ত্রী আগেই ঘোষনা দিয়েছিলেন যে, তিনি বিরোধীদলে গেলেও পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী, যিনি বর্তমানের বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অধীনে নির্বাচনে অংশ নিতে তার কোন আপত্তি থাকবে না, সেই ঘোষনাটি এগিয়ে এনে বর্তমান বিরোধীদলীয় নেত্রীর অধীনে নির্বাচন করার ঘোষনা দিয়ে সবাইকে চমকে দিতে পারেন ।
কারন,বিগত তত্বাবধায়ক ধরনের সরকারের চেয়ে খালেদাজিয়ার অধীনে নির্বাচন করা অনেক নিরাপদ। কারন, সমস্যা তো দুইজনেরই এক-দূর্নীতি । তাছাড়া, চমক সৃষ্টিতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বেশ মজাও পান । আবার, এতে এক ঢিলে দুই পাখিও মারা যাবে,এক:বিভিষিকা সৃষ্টিকারী সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসা রোধ করা যাবে,ফলে মাইনাস হওয়ার আর আশংকা থাকবে না, দুই:সমঝোতার মাধ্যমে খালেদা জিয়ার ছেলেদের দূর্নীতি মুক্তির উছিলায় নিজেদের আত্মীয়-স্বজনদেরও দূর্নীতির দায় থেকে বাঁচানো যাবে । বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কোনক্রমেই সেনাসমর্থিত সরকার আসার সুযোগ দিবেন না, যতই তিনি হাক-ডাক ছাড়েন না কেন, কারন- তাতে তার দলের নেতা কর্মীদের ও তার নিজের আত্মীয়-স্বজনদের সবচেয়ে বেশী নিগৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা ।
তাই আমার অনুমান, শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেষ ভাষনে বলতে পারেন যে, প্রয়োজনে আপনিই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হন, তবু গর্ত খুড়ে সাপ বের করবেন না, অথবা খাল কেটে কুমীর আনবেন না ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।