আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিটিমিটি জোনাক জ্বলে....

অনির্দিষ্ট কালের জন্য আমি ছুটিতে.... তুমি কি সুখে ঐ ডানা দু'টি মেলেছো? ও জোনাকী! কোন এক গৃহায়ন প্রকল্পের সেই টিভিসিটার কথা নিশ্চয়ই আপনার মনে আছে । গ্রাম থেকে দাদু এসেছেন শহরে ছেলের বাসায় । সাথে করে নাতি-নাতনীর জন্য একটা বোয়ামে করে নিয়ে এসেছেন জোনাকী পোকা । ইট-কাঠ-পাথরের এই নগরে তো আর ওরা এসব দেখতে পায় না । আচ্ছা সেই দাদুর নাতি-নাতনীর কথা ছাড়ুন ।

আমরাই বা ক'জন চিনি জোনাকী পোকা । বিশ্বাস করবেন কি না আমি নিজেই গতকাল পোকাটা নিজ চোখে প্রথম দেখলাম । রাতের আঁধারে মিটিমিটি জোনাক জ্বলতে দেখেছি । তবে তার কারিগরকে কালই প্রথম দেখলাম । সবার সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দিতেই পোস্টের অবতারণা... জোনাকী (Firefly/ Lightning Bugs) গ্রীষ্মমণ্ডল ও নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে প্রায় দু'হাজার প্রজাতির জোনাকী পোকার দেখা মেলে ।

এই পাখাওয়ালা গুবড়ে পোকারা শিকার অথবা সঙ্গীকে আকৃষ্ট করতে 'প্রাণালোক' (Bioluminescence) তৈরিতে সক্ষম । এদের উদরের নিচের দিকটাতে রাসায়নিকভাবে তৈরি শীতল আলোতে (Cold light) অবলোহিত বা অতিবেগুনী তরঙ্গ অনুপস্থিত । আলোর রঙ সাধারণত হলদে, সবুজাভ বা হালকা লালচে হয়ে থাকে । যার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ৫১০ থেকে ৬৭০ ন্যানোমিটার । জোনাকী পোকার আলোক উৎপাদী রাসায়নিক বিক্রিয়াটিকে বলে Bioluminescence ।

বিশেষায়িত আলোক উৎপাদী অঙ্গে এ প্রক্রিয়া ঘটে, জোনাকীর ক্ষেত্রে যা উদরের নিচের দিকটাতে অবস্থিত । আলো তৈরির জন্য ম্যাগনেসিয়াম আয়ন, ATP ও অক্সিজেনের উপস্থিতিতে লুসিফারেজ নামের অনুঘটক লুসিফেরিন প্রোটিনের উপর ক্রিয়াশীল হয় । একটা মজার তথ্য দিয়ে শেষ করি । ধারনা করা হয় আলোক সংবেদী তল তৈরির জন্য চিত্রশিল্পী কারাভাজ্জিও তার ক্যানভাসে শুকনো জোনাকী পোকার গুড়ো ব্যবহার করতেন!! তথ্যসূত্রঃ Branham, M. A.; Wenzel, J. W. (2003), "The origin of photic behavior and the evolution of sexual communication in fireflies (Coleoptera: Lampyridae)" ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।