আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভাতের মাড় বা ফ্যানের বহু গুণ



অতি সহজলভ্য খরচবিহীন এই ভাতের মাড়কে আমরা নিম্নমানের জিনিস বিবেচনা করে ফেলে দেই। এটা ক্যালোরিসমৃদ্ধ সুষম খাবার বলে বিবেচনা করা যায়। ভাতের বাড় হলো চালের নির্যাস। এই নির্যাস ফেলে দিলে ভাতের কিছু থাকে না। তাই ভাতের মাড় ফেলে না দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

মনে রাখা দরকার খাবারে ক্যালসিয়াম বেড়ে গেলে তা ফসফরাস শোষন ক্ষমতা-হ্রাস করে। আবার অধিক ফসফরাস সমৃদ্ধ খাদ্য ক্যালসিয়াম শোষনে বাধা দেয়। এতে ক্যালসিয়াম ঘাটতি হতে বাধ্য। তাই ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের ভারসাম্য রক্ষা করতে ভাতের মাড় অদ্বিতীয়। ভাতের মাড় ক্যান্সার প্রতিরোধক।

এতে রয়েছে প্রোটিন, আঁশ ও ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স। ভাতের মাড় কোষ্টকাঠিন্য দূর করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়, শুধু তা-ই নয়, যাদের উচ্চ রক্সচাপ আছে তারা মাড় না ফেলে জাউ রান্না করে খাবেন। এতে প্রচুর পরিমাণ পটাসিয়াম থাকায় উচ্চ রক্তচাপ কমায়। ভাতের মাড়ে অধিক পরিমাণে গ্লুকোজ আছে বিধায় রক্তে যথেষ্ট শর্করা সরবরাহ করে। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

যাদের বিভিন্ন প্রকারের আলসার হওয়ার প্রবনতাথাকে তারা নিয়মিত ভাতের মাড়ে সামান্য লবন দিয়ে চামচে তুলে স্যুপের মতো খেলে এই প্রবণতা থাকে না। ভিটামিন ই নিয়ে এখন উন্নত বিশ্বে যথেষ্ট গবেষনা হচ্ছে। ভাতের মাড়ে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ই রয়েছে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এতে আরো রয়েছে টোকোট্রাইনোল যা অত্যন্ত কার্য়কর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ভাতের মাড়ের মধ্যে আরো একটি প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে, যাকে বলে Oryza Sative Linn ।

এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও স্টেরয়েড। প্রাকৃতিক স্টেরয়েড আমাদের দেহের মাংসপেশিকে শক্তিশালী করে। এখন বাজারে এই স্টেরয়েড বড়ি পাওয়া যায়। খেলোয়ার ও ক্রীড়াবিদরা তাদের মাংসপেশীকে শক্তিশালী ও অধিক কার্যক্ষম করতে এই বড়ি নিয়ে থাকেন। তবে এ বড়িতে কারো কারো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

কিন্তু ভাতের মাড় খেলে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না। চীন ও জাপানে ভাতের মাড় নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা হয়েছে এবং হচ্ছে। ২০০৪ সালে চীনের বিজ্ঞানী মি. লিন মাড় ফেলা ও মাড় বিদ্যমান ভাত নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি গবেষণায় ভাতের মাড়ে জিংক, মেলেনিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও কপার এই ছয়টি উপাদান আবিস্কার করেছেন। ফেলে দেয়া ভাতের মাড়ে তিনি মেলেনিয়াম ২ গুণ, জিংক ৩, আয়রন ১০, ক্যালসিয়াম ৪, ম্যাঙ্গানিজ ১২ এবং কপার ৬ গুন পেয়েছেন।

আরো কয়েকটি বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, ভাতের মাড়ের অরাইজামোল মানবদেহের ক্ষতিকর LDL কোলেস্টেরল হ্রাস করে এবং HDL অপরিবর্তিত রাখে। জাপানে মেয়েরা ভাতের মাড় রূপচর্চায় ব্যবহার করে। মুখের ত্বকে ভাতের মাড় লাগালে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় বলে তরা এটা ব্যবহার করে। একটি বিদেশী পত্রিকা বলছে, তারা এক সমীক্ষায় দেখেছে ভাতের মাড় মানবদেহের মেলানিন ছড়িয়ে পড়তে দেয় না। মেলানিনের কারণে মানুষ ফর্সা, কালো বা শ্যামলা হয়।

সূর্যের আলট্রাভায়োলেট রশ্মি দেহে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে। আসুন, আমরা ভাতের মাড় ফেলা বন্ধ করে মাড় শুকানো ভাত খাই এবং সুস্থ থাকি। (গুড হাউজ কিপিং)।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।