আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজউকের উদাসীনতার কারণে সাভারে ভবনধস

সাভার ট্র্যাজেডিসহ দেশের অপরিকল্পিত নগরায়ণের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) দায়ী করেছেন নগর গবেষণা কেন্দ্রের আলোচকেরা। তাঁরা বলেন, রাজউক প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত নিজেদের ইচ্ছামতো নগরায়ণের অনুমতি দিয়েছে সংস্থাটির কর্তৃপক্ষ। কোনো ধরনের পরিকল্পনার ধার ধারেনি তারা।
আজ শনিবার রাজধানীর এশিয়াটিক সোসাইটি মিলনায়তনে নগরকেন্দ্র গবেষণা আয়োজিত দিনব্যাপী সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। আয়োজক সংগঠনের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী নগরায়ণের ওপর বিভিন্ন বিষয়ে আলোচকেরা আলোচনা করেন।


আলোচনা সভার মূল ও তৃতীয় অধিবেশনে বক্তারা রানা প্লাজা ধসে যাওয়ার ঘটনা, বর্তমান বাংলাদেশ ও রাজউকের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। এই অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি খাদেম আলী।
এ সময় সংগঠনের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম রানা প্লাজা নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের বরাত দিয়ে বলেন, রাজউকের উদাসীনতা, রাজউকের পরিদর্শকের অবহেলা ও সর্বোপরি ভবনের মালিক কর্তৃক নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণেই এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
গণপূর্ত বিভাগের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী হারুন-উর-রশীদ বলেন, বাংলাদেশে প্ল্যান (পরিপূর্ণ নকশা) অনুমোদন (আপ্রুভ) করা হয় না, লে-আউট (প্রাথমিক নকশা) অনুমোদন (আপ্রুভ) করা হয়। ফলে খসড়া নকশায় তৈরি ভবনের নির্মাণ ত্রুটি থেকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।


হকস বে অটোমোবাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল হক বলেন, নগরায়ণ মানে শুধু ভবনের উন্নয়ন নয়, দেশের উন্নয়ন। ঢাকার চারপাশে যেভাবে নগরায়ণের নামে আবাসিক ও বাণিজ্যিক প্রকল্প তৈরি হচ্ছে, এতে করে রাজধানীর পানি নিষ্কাশনের জন্য ইঞ্চিমাত্র জায়গা থাকবে না।
বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক মো. শহীদুল আমিন রাজউকের পরিদর্শকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে অবশ্যই জানতে হবে সেটি আবাসিক, নাকি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে। সে অনুযায়ী ভবন তৈরি করলে ঝুঁকির পরিমাণ অনেকাংশে কমানো সম্ভব।


এই অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন সাবেক প্রধান স্থপতি আবদুস সালাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
দিনের শুরুতে ‘বাংলাদেশের নগরায়ণে সাম্প্রতিক গবেষণা’ শীর্ষক আলোচনার উদ্বোধন ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম রহমান। তিনি নগরায়ণকে বাংলাদেশের উন্নয়ন কৌশলের আওতায় নিয়ে পরিকল্পিত উপায়ে নগরগুলোকে দেশের অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকায় পরিকল্পিত উন্নয়নের ওপর জোর দেন তিনি।
দ্বিতীয় দফায় সংগঠনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক রোজী মজিদ আহসানের সভাপতিত্বে নগরায়ণ বিষয়ে সাম্প্রতিক গবেষণার ওপর মোট আটটি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।

ঢাকা, খুলনা, বুয়েট ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ নগর গবেষকেরা নিজেদের মাস্টার্স বা উচ্চতর ডিগ্রির জন্য এসব গবেষণায় কাজ করেছিলেন।
দিনব্যাপী আলোচনা সভায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সংগঠনের সচিব নুরুল ইসলাম নাজেম। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.