নিশীথ রাতের বাদল ধারা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে এখনো কি রিনিঝিনি বেজে চলে প্রানচঞ্চলা তরুনীর পায়ের নূপুর? একদল নবীন-নবীনার হাসির রেশ কি ছড়িয়ে আছে কলাভবনের সামনের সবুজ মাঠে? ফুচকা মামুর গাড়ির সামনে কি আগের মতই ভিড়? সিড়িতে বসে অকিঞ্চিত যত বিষয়ে অফুরান আড্ডা আর হাল-ফ্যাসনের জামা পরিহিতাদের রুচির গতি-প্রকৃতি নিয়ে বিতর্কের ধুম কি এখনো মাতিয়ে রাখে আজকের ছাত্র-ছাত্রীদের? নিলক্ষেত পার হয়ে আমাদের গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ে, আমার প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার সময় এসব প্রশ্ন আমার মনে দোলা দিচ্ছিল। কতদিন পর পা রাখলাম এখানে। একদিন যেখানে সদর্পে, অনেক অধিকারের সাথে হেঁটে বেড়িয়েছি, আজ বিনীত ত্রস্ত পায়ে অতিথির বেশে ফিরে কেমন যেন লাগছিল- সে অনুভুতি ভাষায় প্রকাশ প্রায় অসম্ভব আমার পক্ষে।
আমাদের কাজের জায়গা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সাথে সাক্ষাৎকারের আয়োজন করা হয়েছিল তার বাস ভবনে। আসা-যাওয়ার পথে কত যে ঊঁকি দিয়েছি এই ধবল প্রাসাদোপম বাড়ির গেটের ফাঁক দিয়ে।
আজ সেখানে ঢোকার বিরল সৌভাগ্যে নিজেই হতবাক আমি। ভিসি স্যার আমাদের ঘুরে দেখালেন একতলার অফিস আর বাগান। শোনালেন এই ভবনের ইতিহাস। সেই ১৯২১ সালের প্রথম ভিসি ডক্টর স্যার ফিলিপ জোসেপ হারটোগ থেকে আজ অবধি সকল ভিসির ছবি টাঙ্গানো আছে একটি ঘরে। কৃতিমান বিদ্যান এই ৪৩ জন পুরুষ আমাদের দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে যে অবদান রেখেছেন তার পরিমাপ করার মত কোন যন্ত্র আজও উদ্ভাবিত হয়নি।
সোকেসে রাখা অনেক মেডেল, ট্রফি ঢাবির সাফল্যের ইতিহাস বহন করে চলেছে—যেন বুক ফুলিয়ে বলছে ৯০ বছরের গর্বগাঁথা-গাইছে গৌরবের জয়কাব্য। আমি কতখানি আপ্লুত হয়েছিলাম সেই বিকালে সে ইতিহাস অলিখিত থাকুক, আপনাদের আজ শুধু কিছু ছবি দেখাতে চাই—আমার ভাললাগার কিছু মূহুর্ত থমকে আছে এই ছবিগুলোতে। আমি ছবি-শিল্পী নই, অদক্ষ হাতে তোলা ছবি গুলোতে কোন কারুকাজ নেই সত্যি, কিন্তু মনের অন্তঃস্থল থেকে ভাললাগার আবীরে রাঙান ওরা। আশাকরি ভাল লাগবে আপনাদের।
ভিসির বাসভবনের সামনের দিকের আর বাগানের একাংশ।
বাসভবনের অফিসের সামনে প্রশস্ত বারান্দা এবং রাজকীয় লাল গালিচা পাতা সিড়ি। আগের দিনের জমিদার বাড়ির মত। সত্যজিতের ঘরে-বাইরের কিম্বা চারুলতা বৌ-ঝিরা এমনি বারান্দায় বসে কুটনা কুটত! আর এই বারান্দায় কত দেশের কত বিজ্ঞ বিদ্যান হেঁটেছেন। কত তেজস্বী ছাত্রনেতা এখানে প্রতীক্ষা করেছেন উপাচার্যের সাথে দেখা করার জন্য। দেশের কত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার প্রারম্ভ এখানে থেকে।
ইতিহাস ফিসফিসিয়ে সে সবকথা বলে বেড়ায়।
বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় ঢাবির জয়মাল্যের একাংশ।
বাড়ির পিছনের দিক আর বাগানের কই পন্ড। মাছ কিলবিল করছিল শাপলার পাতার ছায়ায়।
(ছবিগুলো অনুমতি নিয়ে তোলা।
দয়াকরে অন্যত্র ব্যবহার করবেন না। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।