দীর্ঘদিন সরকারের চাপে কোণঠাসা থাকার পর আবারও নিজেদের শক্তির মহড়া দেখাল জামায়াত। এরই অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার জামায়াত নেতাকর্মীরা রাজধানীসহ সারা দেশে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ইট-পাটকেল ছুড়ে কয়েকজন পুলিশকে হাসপাতালেও পাঠায় তারা। এ সময় পুলিশও এর পাল্টা জবাব দেয় লাঠিপেটা ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
গতকাল শেষ বিকেলে হওয়া জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড় থেকে শাপলা চত্বর পর্যন্ত এলাকা রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
বিক্ষুব্ধ জামায়াতকর্মীরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। তারা গাড়ি ভাঙচুর করে। আগুন দেয় একটি পুলিশ ভ্যানে। এছাড়া আগুন দেয় ৬টি মোটর সাইকেলে এবং একটি যাত্রীবাহী বাসে। সংঘর্ষকালে ২২ পুলিশসহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়।
এ সময় পুলিশ প্রায় অর্ধশত জামায়াত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। আহত পুলিশ সদস্যদের রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জামায়াতের এই মারমুখী অবস্থান শুধু রাজধানীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। রাজধানীর বাইরেও হয়েছে। তারা বেশ কয়েকটি জেলা শহরেও ঢাকার মতো পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং শক্তির মহড়া দেখায়।
তবে জামায়াত-শিবিরকে মোকাবেলা করতে দেশের কিছু-কিছু স্থানে সরকারদলীয় সমর্থক ও ক্যাডাররাও তাদের ওপর হামলা চালায়।
রোববার ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল দুপুর থেকেই মিছিলের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। আর তাদের মোকাবিলায় রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব, মতিঝিল শাপলা চত্বর মোড়সহ রাজধানীজুড়ে দুপুর থেকেই সতর্ক অবস্থান নেয় পুলিশ। জামায়াত নেতাকর্মীরা যেন রাস্তায় জড়ো হয়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করতে না পারে এ ব্যাপারে মাঠপর্যায়ের পুলিশের ওপর নির্দেশ ছিল। সে মোতাবেক প্রস্তুতি নেয় পুলিশ।
পুলিশের এই প্রস্তুতির মধ্যেই বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জামায়াত। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে দৈনিক বাংলা মোড়ের দিকে আসতে থাকে জামায়াত নেতাকর্মীরা। এ সময় দৈনিক বাংলা মোড়ের কাছাকাছি এসে থেমে যায় জামায়াতের মিছিল। শুরু হয় রাস্তায় ওপর প্রতিবাদ সমাবেশ। এ এ সময় আইল্যান্ডের ওপর দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখেন দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, মহানগর নায়েবে আমির হামিদুর রহমান আযাদ, মহানগর সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম বুলবুল।
সমাবেশশেষে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বায়তুল মোকাররমের দিকে আসতে থাকলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। আর তখনি মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় জামায়াত নেতাকর্মীরা। তারা পুলিশকে লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পুলিশ তাদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এতেও কাজ না হলেও ছোড়ে টিয়ার শেল।
এ সময় ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা এ সময় গাড়ি ভাঙচুর এবং মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। জামায়াত-শিবিরের ইট ও গজারির লাঠির আঘাতে সেখানে কমপক্ষে ১০ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়। তাদের মধ্যে কনস্টেবল দোলন, জালাল, নায়েক আব্দুল লতিফ, নায়েক সোহরাব, নায়েক নাজমুল, নায়েক আহাদুলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের পুলিশ ধাওয়া করলে ছত্রভঙ্গ হয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর শুরু করে।
তারা দৈনিক বাংলার মোড় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক, পূর্বাণী হোটেলের সমানের রাস্তা, উত্তরা ব্যাংক ভবনের পার্শ্বের রাস্তাসহ আশপাশের অলিগলিতে যানবাহন ভাঙচুর করে। তাদের তাণ্ডব থেকে পুলিশের গাড়িও রেহাই পায়নি। তারা মতিঝিল স্বাধীনতা ভবনের সামনে পুলিশের রিকুইজিশন করা একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নয়াপল্টন সিটি হার্ট মার্কেটের সামনে জামায়াত নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
এ সময় পুলিশ তাদের শান্ত হতে বললে তারা পুলিশের ওপর হামলে পড়ে। তখন পুলিশ তাদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ এবং টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে জামায়াতকর্মীরা ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষের বিষয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার (রমনা) নুরুল ইসলাম জানান, পথচারী বেশে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা সড়কে অবস্থান নেয়। তারা পুলিশের ওপর হামলা করে।
নগরে পুলিশের কড়া নজরদারি থাকলেও পল্টন-মতিঝিল এলাকার হোটেল-অফিস থেকে দলটির কর্মীরা একযোগে বেরিয়ে আসে এবং পুলিশের ওপর হামলাসহ ব্যাপক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড শুরু করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, জামায়াত শিবির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষকালে মতিঝিলসহ আশপাশ এলাকায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। লোকজন আতংকে চারদিকে ছোটাছুটি করতে থাকে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে প্রহসন বন্ধ, শীর্ষপর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের আটককৃত নেতাদের মুক্তি, সংবিধানে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃস্থাপনসহ বিভিন্ন দাবিতে রোববার জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে জামায়াত। এসময় দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জামায়াতকে আন্দোলনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে সরকারের সমালোচনা করেন।
খুলনা প্রতিনিধি জানান, খুলনা মহানগরের পাওয়ার হাউস মোড়ে গতকাল বিকেলে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ ১১ জন আহত হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনকে আটক করেছে।
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি জানান, নগরীর কাপাসগোলা এলাকায় শিবিরকর্মীরা মিছিল বের করে সড়ক অবরোধ করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে তিন শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়।
অন্যদিকে চান্দগাঁওয়ে সরকারবিরোধী পোস্টার লাগানোর সময় আটক হয় দুই কর্মী।
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, জেলার বিভিন্ন স্থানে মিছিল থেকে পুলিশ জামায়াতের ৮৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। খুলনা রোড থেকে জামায়াত বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বাধা অতিক্রমের চেষ্টা করলে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ ও পরে টিয়ার শেল ছোড়ে। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় সদর থানার এসআই আবদুল হান্নানসহ ৫ কনস্টেবল আহত হন।
এছাড়া জেলার পাটকেলঘাটা থানা পুলিশ নাশকতার অভিযোগে ৩০ জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, গতকাল মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিমবাজার থেকে বের হওয়া জামায়াতের মিছিলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় শিবিরকর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরে সংঘর্ষে ২৫ জন আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে সাত শিবিরকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনায় শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
দিনাজপুর থেকে আমাদের প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরে জামায়াত-শিবিরের হামলায় ৬ পুলিশ সদস্য এবং ৩ পথচারী আহত হয়। পুলিশ ১৬ শিবিরকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
চরফ্যাশন থেকে প্রতিনিধি জানান, ভোলার চরফ্যাশনে জামায়াতের মিছিলে আওয়ামী লীগ হামলা চালিয়ে ৩০ নেতাকর্মীকে আহত করে। এ সময় পুলিশ দুই জামায়াতকর্মীকে গ্রেফতার করে।
ডোমার প্রতিনিধি জানান, গতকাল ডোমার উপজেলা জামায়াতের একটি বিক্ষোভ মিছিল ডোমার বাজার রেলগেট থেকে বের হলে পুলিশ মিছিলকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। বাধা উপেক্ষা করে মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জামায়াত কার্যালয়ে এক সংক্ষিপ্ত পথসভায় অবিলম্বে আটক নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানানো হয়।
কক্সবাজার প্রতিনিধি বলেন, কক্সবাজার শহরে বিনা বাধায় জামায়াতের মিছিল হয়েছে। কোনও অঘটন ঘটেনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি জানান, গতকাল শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জামায়াত।
মসজিদ রোড থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক টিএ রোড দিয়ে যাওয়ার সময় কালীবাড়ি মোড়ে পৌঁছলে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ ও একজনকে আটক করে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জামায়াতকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। আটককৃত পৌর জামায়াত নেতা মাওলানা মোহাম্মদ জাকারিয়াকে পুরনো মামলায় চালান দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, পুলিশের বাধার মুখে গতকাল বিকেল ৪টায় কুষ্টিয়ায় জামায়াত-শিবিরের মিছিল পণ্ড হয়ে গেছে। জামায়াতের আক্রমণে ৫ পুলিশ আহত হয়েছে।
বগুড়া প্রতিনিধি জানান, বগুড়ায় জামায়াত-শিবিরের মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তাদের প্রহার ও নিক্ষিপ্ত পাথরের আঘাতে পুলিশের দুই এসআই অন্তত ৬ জন হন। আহতদের মধ্যে দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় জামায়াতকর্মীদের হামলায় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানসহ দুটি যানবাহন ভাংচুর করা হয়। পুলিশ গুলিবর্ষণ ও বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল ছোড়ে।
পুলিশ ঘটনাস্থল ও বিভিন্নস্থান থেকে জামায়াত-শিবিরের ৯ কর্মীকে আটক করে।
ফেনী প্রতিনিধি জানান, জেলায় পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে পুলিশের এক এসআইসহ ২০ জন আহত হয়। এ সময় জামায়াত-শিবিরের ১০ নেতাকর্মী ও দৈনিক সংগ্রামের সোনাগাজী সংবাদদাতাকে আটক করে পুলিশ। পুলিশ সুপার পরিতোষ ঘোষ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। জামায়াত আমির নাজেম ওসমানি জানান, পুলিশ অন্যায়ভাবে জামায়াত-শিবিরের মিছিলে হামলা চালিয়ে নেতাকর্মীদের আটক করেছে।
জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানান, পুলিশের বাধার মুখে পণ্ড হয় জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল। জামায়াত জেলা কার্যালয় থেকে প্রায় ২ হাজার নেতাকর্মীর মিছিল শহরে প্রধান সড়কের পশ্চিম দিকে অগ্রসর হলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। এতে পুলিশের এএসআই আসাদ ও কনস্টেবল আক্তারসহ ১৪ জামায়াত নেতাকর্মী আহত হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শটগানের গুলি, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে।
শরণখোলা প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাটের শরণখোলায় জামায়াতের নেতৃত্বে কেন্দ ীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আকস্মিক বিক্ষোভ মিছিল বের হলে পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় মাওলানা মোশারেফ হোসেন (৪৫) নামে এক জামায়াত নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সাতকানিয়া প্রতিনিধি জানান, গতকাল উপজেলার কেরানীহাটে মিছিল ও সমাবেশ করেছে উপজেলা জামায়াত। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির জাফর সাদেকের নেতৃত্বে বের হওয়া মিছিলটি পুলিশের ধাওয়ায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। একই দিন বিকেলে উপজেলা সদরে জামায়াত একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ সময় মো. জাহাঙ্গীর, মো. হারুন ও মো. সাজিদ নামে তিন জামায়াত-শিবিরকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে জামায়াত-শিবিরের আট নেতাকর্মী আহত হয় বলে উপজেলা জামায়াত আমির মাওলানা আবুল ফয়েজ দাবি করেন। তথ্যসূত্র: আমাদের সময়
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।