ভালোবাসি বাংলা,বাংলার জল,আকাশ,নদী পাহাড়..
শ্রীমঙ্গল চা-বাগানের জন্য বিখ্যাত— এ কথা প্রায় সকলেই জানেন। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চা-বাগান আছে মৌলভীবাজার জেলায়। আর এ জেলার বেশিরভাগ চা-বাগানই শ্রীমঙ্গলে। সাধারণত মে মাস থেকে চাপাতা সংগ্রহের মৌসুম শুরু হয়। চলে অক্টোবর অবধি।
এ সময়ে বাগানও থাকে সবুজ-সতেজ আর কর্মচঞ্চল। তাই পাহাড়-টিলার বাঁকে বাঁকে চা-শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততা দেখতে যাওয়ার এখনই মোক্ষম সময়।
‘চা-কন্যা’ ভাস্কর্য দেখে শ্রীমঙ্গলের চা-বাগান ভ্রমণ শুরু করতে পারেন। বাগানে চাপাতা তুলছে এক তরুণী শ্রমিক— এই আদলে তৈরি সাদা ভাস্কর্যটি শ্রীমঙ্গলের প্রবেশপথেই দৃষ্টি কেড়ে নেবে। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন দৃষ্টিনন্দন এ ভাস্কর্যটি তৈরি করেছে সাতগাঁও চা-বাগানের সহায়তায়।
‘চা-কন্যা’র সামনেই বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সাতগাঁও চা-বাগান। সেটিও দেখে নিতে পারেন।
‘চা-কন্যা’ থেকে শ্রীমঙ্গল শহরের দূরত্ব বেশি নয়। ছোট্ট শহরকে পিছু ফেলে ভানুগাছ সড়কে উঠলেই চোখে পড়বে ফিনলের চা-বাগান।
চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিটিআরআই) ভেতর থেকে দক্ষিণমুখী সড়কটি ধরে এগিয়ে গেলে ফিনলের চা-বাগান, এ ছাড়াও আছে বিটিআরআই-এর নিজস্ব বাগান।
ভানুগাছ সড়কের টি-রিসোর্ট ফেলে সামনে দুটি বাঁক ঘুরে হাতের ডানের সড়ক ধরে কয়েক কিলোমিটার গেলেই জেরিন টি-এস্টেট।
লাউয়াছড়ার আগে হাতের ডানে জঙ্গলঘেরা পথটি চলে গেছে নূরজাহান টি-এস্টেটের দিকে। এ পথে দেখা মিলবে আরও বেশ কিছু বাগান।
শ্রীমঙ্গল থেকে কমলগঞ্জের দূরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। পথের মাঝেই লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান।
কমলগঞ্জ থেকে আরও ৫ কিলোমিটার গেলে পাহাড়ঘেরা চা-বাগানের মধ্যে বিশাল মাধবপুর লেক।
তবে চা-বাগান দেখতে দেখতেও মাধবপুর যাওয়া যায়। এর জন্য ধরতে হবে নূরজাহান টি-এস্টেটের পথ। বাহন হিসেবে অবশ্যই জিপ নিতে হবে।
মাধবপুর লেক থেকে বের হয়ে প্রধান সড়ক থেকে হাতের ডানের রাস্তা চলে গেছে ধলাই সীমান্তের দিকে।
এ পথে সীমান্ত পর্যন্ত সড়কের দুপাশে শুধুই চা-বাগান। সীমান্তে আছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ফাঁড়ি। এর পাশেই বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ।
এখান থেকেও চা-বাগান দেখতে দেখতে ভিন্নপথে ফিরতে পারেন। ধলাই সীমান্ত থেকে ফিরতি পথে সামান্য এগিয়ে হাতের বাঁয়ে বেশ পুরনো চা-বাগানের বাংলোর পাশ ঘেঁষা রাস্তা ধরে চললে, চা-বাগানের বাঁকে বাঁকে ফেরা যাবে শ্রীমঙ্গল শহরে।
ভ্রমণশেষে পান করতে পারেন নীলকণ্ঠ কেবিনের সাতরঙা চা। শহরের বিজিবি সদর দপ্তরের পাশেই নীলকণ্ঠের একটি শাখা আছে।
প্রয়োজনীয় তথ্য
যে কোনো চা-বাগানে প্রবেশের আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। বাগানগুলোতে ভ্রমণের জন্য জিপ গাড়ি প্রয়োজন পড়বে। শ্রীমঙ্গল শহরেই ভাড়ায় জিপ পাওয়া যায়।
এসব গাড়ির চালকদের বাগানগুলোও চেনাজানা।
চা-বাগানে সারাদিন ভ্রমণে জন্য একটি জিপ ভাড়া করতে খরচ হবে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫শ’ টাকা।
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে রেল ও সড়ক পথে শ্রীমঙ্গল যাওয়া যায়। ঢাকার কমলাপুর থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস। দুপুর ২টায় প্রতিদিন ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস।
বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ১০টায় ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস।
ভাড়া ১৭৫ টাকা থেকে ৭৬৫ টাকা।
এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে সোমবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল সোয়া ৮টায় ছাড়ে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস। শনিবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ৯টায় ছাড়ে উদয়ন এক্সপ্রেস।
ভাড়া ১৪০ টাকা থেকে ৯৪৩ টাকা।
ঢাকার ফকিরাপুল ও সায়দাবাদ থেকে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, বিআরটিসি ইত্যাদি পরিবহনের নন এসি/এসি বাস যায় শ্রীমঙ্গল।
ভাড়া ৩শ’ টাকা থেকে ৪০০ টাকা।
যেখানে থাকবেন
শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য সবচেয়ে ভালো মানের জায়গা ভানুগাছ সড়কে টি-রিসোর্ট। অন্যান্য থাকার জায়গার মধ্যে আছে— হীড গেস্ট হাউস, রেইন ফরেস্ট রিসোর্ট, টি টাউন রেস্ট হাউস, হোটেল প্লাজা ইত্যাদি।
এসব হোটেল ও রিসোর্টের ভাড়া ৫শ’ টাকা থেকে ৫ হাজার ৫শ’ টাকা।
তথ্যসূত্র:http://bangla.bdnews24.com/lifestyle/article662505.bdnews
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।