আমি কেমনে তারে দেখি, তারই কাছে যাইতাম উইড়া- হইতাম যদি পাখি। । তার লাগিয়া পরান কাঁন্দে- জলে ভেজে আখি, কাছে পাইলে রাখতাম বুকে- করতাম মাখামাখি। । তার কারনে সব হারাইলাম- আর নাই কিছু বাকি, শায়খ বেধা পাখির মত- একা পড়ে থাকি।
। কেন এত পাষান সেযে- দেয় যে শুধুই
ভালোবাসার রঙ কী? সবুজ, লাল, নীল, গোলাপি, কমলা না সাদা! পৃথিবীর তাবৎ রঙ মিলেই তো ভালোবাসা। ভালোবাসা মানেই তো সৃষ্টি, সুন্দরের পূজা, সততার আরাধনা, প্রগাড় বিশ্বাস, নির্ভরতা আর ভরসার আশ্রয়স্থল। আমরা তো এটাই জানি। কিন্তু তারপরও কেন আমাদের জানার ভিতটা মাঝে মাঝে কেঁপে ওঠে! কেন? তবে কি ভালোবাসা রঙচটা, বিবর্ণ, বিকৃতরূপে নীল দংশন হয়ে উঠছে ক্রমশ! না, আমরা তা বিশ্বাস করতে চাই না।
তাহলে যে পৃথিবীর অনেক সত্য মিথ্যা হয়ে যাবে। মা, এই একটি মাত্র অক্ষরের বিশাল অর্থের পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শব্দটি মৃত্যুর হুমকিতে পড়বে। আমরা কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে চাই না, অন্য কোনো পুরুষকে ভালোবেসে মা তার নিজের সন্তানকে হত্যা করতে পারেন। বিশ্বাস করতে চাই না স্বামীর ওপর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে মা তার সন্তানকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করতে পারেন। তাহলে এ সমাজ-সংসার বড় বেশি অসহায় হয়ে পড়বে।
মানুষের মনকে জানা পৃথিবীতে কঠিনতম কাজ। কারণ প্রতিটি মানুষের ভেতরে বাস করে অন্য এক মানুষ। তাই হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ায় জেগে ওঠা অতি সহজ-সরল মানুষের হিংস্র রূপ দেখে আমরা চমকে উঠি, হতবাক হই, দেখব না বলে চোখ বুজে রাখতে চাই, শুনব না বলে কানে আঙুল চাপা দেই। আয়শা হুমায়রা এশা কি একবারও টের পেয়েছিলেন তার ভেতরের মানুষটি আদিম লালসার নেশায় ক্রমেই হিংস্র হয়ে উঠেছিল? এ কোন ভালোবাসা, যার নেশায় উন্মত্ত মমতাময়ী মা এতটা নিষ্ঠুর হলো! যদিও এখনও স্পষ্ট নয় সন্তান সামিউলের হত্যাকাণ্ডে মা আয়শা জড়িত। এখনও তদন্ত চলছে।
আমাদের চিরকালের বিশ্বাসের জায়গা ধরে রাখতে 'দৈনিক কালের কণ্ঠ' পত্রিকায় 'মাকে লেখা সামিউলের চিঠি' শিরোনামে সাংবাদিক লুৎফর রহমান রনো লিখেছেন_
'মা তুিম চিৎকার করে বলে দাও, তুমি তোমার সামিকে হত্যা করোনি। এই পৃথিবীর সব সজীব বন, বৃক্ষ, নদী, সমুদ্র, পর্বত,আকাশ,বাতাস শুনুক তুমি সামি হত্যাকারী মা নও, তুমি নির্দোষ। ' 'মানুষ অনেক সময় ভুল দেখে মা, সত্যিকার ঘটনার প্রকৃত দোষীদের ক'জন শাস্তি পায় পৃথিবীর আইন-কানুনের কাছে। একটি তাৎক্ষণিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে অস্বাভাবিক কোনো দুর্ঘটনার কারণে কোনোক্রমেই মায়ের স্বাভাবিক শাশ্বত ভালোবাসাকে অস্বীকার করা যায় না। মায়ের ভালোবাসা যে চিরন্তন, তুলনাহীন।
'
মানুষের মনের প্রতিশোধের আগুন কতটা বিস্তৃত হতে পারে? যে আগুন নেভাতে বলি দিতে হয় সন্তানকে? স্বামী রাশেদুল কবিরের ওপর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ফারজানা রিতা দু'সন্তানসহ নিজেকে বলি দিলেন! এমন স্বামীর জন্য, যে স্বামী বিশ্বাস নষ্ট করে পদে পদে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা দিয়েছে। এমন স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেশে তো উপযুক্ত আইনের অভাব নেই । নারী নির্যাতন আইন অত্যন্ত কঠিন। তিনি সে সুযোগ গ্রহণ করতে পারতেন! নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে মায়ের সহযোগিতায় একাই হয়ে উঠতে পারতেন পবন আর পায়েলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য নিরাপদ আশ্রয়। দিনভর মানুষের কাছে চেয়ে-চিন্তে রাস্তার ফুটপাতে নিজের ছেঁড়া আঁচলে সন্তানকে জড়িয়ে বুকের কাছে চেপে ধরে হতদরিদ্র মা যদি পারেন সন্তানের আশ্রয় হয়ে উঠতে, রিতার মতো শিক্ষিত মেয়েরা কেন তা পারেন না? এ কোন মোহ, অন্ধ ভালোবাসা।
জীবননাশের আতঙ্কের মধ্যেও রাশেদুলের মতো স্বামী নামক হিংস্র পশুর আশ্রয় ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারেন না রিতার মতো স্ত্রীরা?
আমাদের সমাজে ঘরে ঘরে রিতার মতো স্ত্রী আছেন, যারা স্বামীর নানারকম নির্যাতন-অত্যাচার সহ্য করে সংসার করছেন। তাদের অনেকেই শিক্ষিত, স্বাবলম্বীও। বাবার বাড়ির আশ্রয়ের সুবিধাও আছে। কিন্তু তাদের কথা, সন্তানের জন্য সব অপমান সহ্য করছি। সন্তানের জীবন নষ্ট করতে চাই না।
পরিবারের মর্যাদাটাও তো দেখতে হবে। এতকাল সংসার করে কেমন একটা মায়ার জালে আটকে গেছি। দুর্বল মনের মানুষ নির্ভরতার আশ্রয় খোঁজে_ এটা মনোবিজ্ঞানের কথা। যুগ যুগ ধরে পুরুষশাসিত সমাজ ব্যবস্থাই মেয়েদের দুর্বল করে রেখেছে, করেছে পরনির্ভরশীল। শুরুতে বাবার আশ্রয়, তারপর স্বামী এবং সবশেষে ছেলে_ এভাবে পরগাছা হয়ে থাকতে থাকতে নারী হারিয়ে ফেলেন সব শক্তি।
কিন্তু আর নয়। এখন বদলে যাওয়ার সময় এসেছে। মা-বোনেরা দয়া করে ঘুরে দাঁড়ান। দেখুন আপনার চারপাশ। অনেককে পাবেন যারা ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, দাঁড়াতে শিখেছেন।
কেউ কেউ নিজের শক্তিতে বটবৃক্ষ হয়ে উঠেছেন। তার নিচে আশ্রয় নিয়েছে হাজারও সন্তান। আপনার অপার শক্তি। সন্তানের জন্য আপনি একাই যথেষ্ট।
কোনো মানুষের জীবনই শতভাগ প্রাপ্তিতে পরিপূর্ণ নয়।
অপ্রাপ্ত জীবনে ভালোবাসা আসতেই পারে। কিন্তু সমাজ সংসারের কথা বিবেচনায় রেখে সুস্থ ভালোবাসার চর্চাই সভ্যসমাজের কাম্য। ভালোবাসা জিঘাংসা নয়, উন্মাদনা নয়। ভালোবাসা মানুষকে সংযমী করে, শুদ্ধ করে। যদি একান্তই মনে হয় সঠিক মানুষটির দেখা পেয়েছেন জীবনের মধ্যাহ্নে এবং তাকে বড় বেশি প্রয়োজন, তাহলে সাহসী হোন।
বিকৃত ঘটনার জন্ম দেওয়ার চেয়ে বরং বিচ্ছেদের পথ বেছে নেওয়াই ভালো। ধর্মেও তা অনুমোদন আছে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও আইন আছে। শুরুতে সমাজ হয়তো বাঁকা চোখে তাকাবে, কিন্তু সময়ে তা স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।