মহাজোট সরকার ‘দিন বদলের সনদ’ নিয়ে ক্ষমতায় বসেই যে ধরনের তুঘলকি এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ শুরু করেছে তাতে যুগপৎভাবে দেশবাসী হতবাক এবং উৎকণ্ঠিত। আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল ড. ফখরুদ্দিনের অবৈধ সরকার যে প্রশাসন সাজিয়ে গিয়েছিল তা তছনছ করে ফেলা হয়েছে। এখন প্রশাসনে চলছে বদলি আতঙ্ক এবং নজীরবিহীন বদলি বাণিজ্য। অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে সরকার নিজেই সৃষ্টি করে চলেছে বিশৃঙ্খলা এবং ভেঙ্গে দেয়া হচ্ছে চেইন অব কমান্ড। শত শত সরকারি কর্মকর্তাকে ওএসডি করে বসিয়ে রাখা হয়েছে।
পুলিশ প্রশাসনে ইতিহাসে যা হয়নি সরকার এবার তাই করেছে এবং সেখানেও সৃষ্টি হয়েছে অস্খিরতা।
সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধীদলকে সরকারের একটি অংশ বলে গণ্য করা হয়। ডেপুটি স্পিকার পদটি বিরোধী দলকে দেয়ার কথা ঘোষণা করেও ওয়াদা ভঙ্গ করলো আওয়ামী লীগ। বিরোধীদলের সংসদ সদস্যদের সংসদে বসার আসন নিয়ে সরকার যা করলো তাতো রীতিমত ন্যক্কারজনক। সংসদে প্রদত্ত ভাষণে প্রেসিডেন্ট ইয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার নামটা পর্যন্ত উচ্চারণ করলেন না।
উপরন্তু শেখ ফজলুল করিম সেলিম প্রেসিডেন্ট জিয়াকে পাকিস্তানের দালাল বললেন। জিয়া পরিবার তথা বেগম জিয়া সম্পর্কে অশালীন এবং অশ্লীল বক্তব্য দেওয়া হলো।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও যাবতীয় অঙ্গ সংগঠনগুলো নির্বাচনী সাজানো প্রক্রিয়ায় বিজয় লাভের পর থেকে দেশের যাবতীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করা শুরু করে দিল। সচিবালয়ে শ্লোগান দিয়ে মন্ত্রীদের অভ্যর্থনা জানানো থেকে শুরু করে দলীয় ক্যাডারদের অত্যাচার, অনাচারে সচিবালয় বলতে গেলে এখন অস্খির এবং অচল। দলীয়করণে চ্যাম্পিয়ন আওয়ামী লীগ এবার দেশবাসীকে দেখিয়ে দিল কিভাবে আগের সরকারের সব সিদ্ধান্ত উল্টিয়ে দেয়া যায়।
আওয়ামী লীগদের মামলা মোকদ্দমা পর্যন্ত প্রত্যাহার শুরু হলো এবং প্রতিপক্ষের উপর নতুন মামলা চাপানো শুরু হলো।
প্রধানমন্ত্রীর এক উপদেষ্টা বললেন, সংবিধান সংশোধন করে স্বাধীনতাবিরোধীদের শাস্তি দিতে হবে এবং তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। প্রশ্ন হলো, যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিলো তারা ক’জনই বা বেঁচে আছেন যে সংবিধান সংশোধন করে তাদের চাকরি থেকে বঞ্চিত করতে হবে। তবে একটা ব্যাখ্যা আছে সেটা হলো কেউ যদি আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করে থাকে বা করে তাহলে সেই স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে গণ্য হবে এবং এ জন্যই সংবিধান সংশোধন করা প্রয়োজন। আওয়ামী লীগের নিয়োজিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সম্প্রতি তার এক বক্তব্যে বলেছেন, একমাত্র মুসলমানরাই সন্ত্রাসী অন্য কোন ধর্মের লোক সন্ত্রাস করে না।
সংবিধান থেকে ইসলাম বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা আনতে হবে। পিলখানার ঘটনা নিয়ে সরকারের সর্বনাশা খেলায় দেশবাসী দারুণভাবে উদ্বিগ্ন। জনগণের ও সেনাবাহিনীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দিন দিন ক্ষোভে পরিণত হচ্ছে। সকাল সাড়ে নয়টায় খবর পাওয়া সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী বা সেনা প্রধান তাদের বাঁচানোর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সাড়ে এগারটার মধ্যে সেনা কর্মকর্তাদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
এটা যদি সত্য হয় তাহলে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী কেন খুনীদের সাথে তার বাসভবনে আলোচনা করে তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করছেন? ডিএডি তৌহিদকে কে খুঁজে বের করলেন এবং তাকে বিডিআরের কমান্ডার বানানো হলো কিভাবে? যে ১৪ জন প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করলেন তাদের প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করলেন কে বা কারা?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।