আর কেন সম্মেহন-এ পাপ, থাক- ‘বেদনা আমারি থাক’
নেলসন ম্যান্ডেলার দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা এবার আলোকিত হয়ে উঠেছে বিশ্ব ফুটবলের আলোয়। আর ফিফার হিসাবে এ আলোকিত আসরের সেরা ফেবারিট স্পেন। তবে স্পেনের কোচ ভিসেন্তে বেলবস্ক নিজেদের ফেবারিট মানলেও প্রশংসার জোয়ারে গা ভাসিয়ে খেলার গতি নষ্ট করার পক্ষপাতি নন। ভাল খেলে জয় পেলেই নিজেদের ফেবারিট ভাববেন তিনি।
এদিকে বর্তমান ফুটবল বিশ্বের যে কয়জন স্ট্রাইকারকে এ মুহুর্তে বিপজ্জনক হিসেবে ধরা হয় তার মধ্যে অন্যতম স্পেনের ফার্নান্দো তরেস।
যদিও বিশ্বকাপ শুরুর আগে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ায় তাকে নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছিল কোচ বেলবস্ক। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই আবারো মাঠে ফিরেছে তরেস। এতে স্পেন ভক্তরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও বিপদের গন্ধ পাচ্ছে প্রতিপক্ষের ফুটবলাররা। আর তাই স্পেনের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় তরেসের প্রত্যাবর্তনে দুই তৃতীয়াংশ জনগণই মনে করছে বিশ্বকাপ এবার তাদের ঘরেই উঠবে।
স্পেনের ফুয়েনলাব্রাডাতে ১৯৮৪ সালের ২০ মার্চ জন্ম গ্রহণ করে দেশটির সেরা স্ট্রাইকার ফার্নান্দো তরেস।
মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই ফুটবলে হাতে খড়ি তার এবং সেসময়ই স্থানীয় শিশুদের একটি দলে ফুটবলার হিসাবে যোগ দেন তিনি। ফুটবলার হওয়ার পেছনে তাঁর বাবা-মার উৎসাহ ছিল সবচেয়ে বেশি। আর তাইতো ছোটবেলা থেকেই ইনডোর ফুটবল খেলতে শুরু করেন তরেস।
তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, ক্যারিয়ারের শুরুতে গোলরক্ষক হিসেবে ফুটবল খেলা শুরু করেন বর্তমান বিশ্বের এই নামকরা স্ট্রাইকার। স্থানীয় কাব এথলেটিকো মাদ্রিদের জুনিয়র দলে নাম লেখার মাধ্যমেই তার ফুটবল ক্যারিয়ারের শুরু।
তারপর ২০০১ সালে একই কাবে পেশাদার ফুটবলার হিসাবে নাম লেখান তরেস। মাত্র ১৯ বছর বয়সেই দুর্দান্ত পারফরমেন্সের মাধ্যমে শুরুতেই সকলের নজর কাড়েন তিনি। আর তাই পুরস্কার স্বরূপ পেয়ে যান দলের অধিনায়কত্ব।
একটানা ১২ বছর অধিনায়ক ছিলেন তরেস। এসময় এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে ১৭৪টি ম্যাচে ৭৫টি গোল করেন প্রতিভাবান এ ফুটবলার।
অবশেষে ২০০৭ সালে ইংলিশ কাব লিভারপুলে তরেসের ডাক পড়ে আর তাই ২০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে নিজের দেশ ছেড়ে পাড়ি জমান ইংল্যান্ডে। সে সময় প্রথম মৌসুমেই ২৯ গোল করে বুঝিয়ে দেন তার ফুটবল প্রতিভা কতটুকু। চলতি মৌসুমেও ২২ ম্যাচে ১৮ গোল করেছেন অল রেড’দের হয়ে। এরপরই তরেসের সাফল্যে চারিদিকে তার জয় জয়কার পড়ে যায়। আর তাইতো প্রতিপক্ষের ভয়ের কারণও তিনি।
ফুটবল বিশ্বের যে কয়জন স্ট্রাইকারকে এ মুহুর্তে বিপজ্জনক হিসেবে ধরা হয় তরেস তার মধ্যে অন্যতম বলে মনে করেন ফুটবল বোদ্ধারা। অন্যাদিকে ২০০৩ সালে পর্তুগালের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হয় তরেসের। এরপর শুধু রেকর্ড আর রেকর্ড; মাত্র ২৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই ৬০ ম্যাচে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার রেকর্ড করে বসেন তিনি। তবে কাবের মত বিশ্ব ফুটবলে কিন্তু এত সহজে গোল পাননি তরেস। আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হওয়ার দীর্ঘ ছয় মাস পর ২০০৪ সালে ইটালির বিপক্ষে প্রথম গোলের দেখা পান তিনি।
এখন পর্যন্ত ৭১ ম্যাচে ২৩ গোল করেছেন তরেস। দুই বছর আগে ইউরো কাপের ফাইনালের গোলটিই তরেসের জীবনের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ গোল। কারণ তাঁর করা জয়সূচক গোলেই জার্মানিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় স্পেন। আর দীর্ঘ চার দশকে প্রথম কোন আন্তর্জাতিক শিরোপা লাভ করে তারা।
এদিকে গত বিশ্বকাপে স্পেন বাদ পড়লেও তরেসের পা থেকে তিনটি গোল এসেছিল সে আসরে।
বরাবরই প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে ক্ষিপ্র গতিতে খেলে থাকেন তরেস। বাতাসে ভেসে থাকা বলের ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণও চোখে পড়ার মত। তবে তাঁর যে জিনিসটি সবচেয়ে বেশি চমকে দেয় তা হলো প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকদের ভরকে দেয়ার ক্ষমতা। আর দূর থেকে আচমকা বুলেট গতিতে জোরালো শটের মাধ্যমে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। তাইতো এবারের বিশ্বকাপেও তরেসের সেই ক্ষিপ্র গতির শর্ট দেখার আশায় রয়েছে কোটি কোটি ফুটবল ভক্ত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।