সত্যানুসন্ধিৎসু
পাবনা জেলার ঈশ্বরদী মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের পর চলছে গণনা। পাশে উপবিষ্ট সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
গত ২৬ জুন অনুষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচনে মেজর জেনারেল (অবঃ) হেলাল মোর্শেদ খানের পরিষদ বিজয়ী হয়েছে। হেলাল তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আবদুল আহাদ চৌধুরীর চেয়ে ১৮ হাজার ১৫৪ ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গত শনিবার সারাদেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়।
সারাদেশে ৬৪টি জেলা ও ৪৮২টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। একটানা ভোট গ্রহণ চলে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। ১৯৭২ সালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গঠনের পর এবারই প্রথম মুক্তিযোদ্ধাদের সরাসরি ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো।
এই নির্বাচনে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল, জেলা ও উপজেলা কমান্ড কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা এক যোগে নির্বাচিত হন। এবারের নির্বাচনে ৩টি পূর্ণাঙ্গ প্যানেলসহ বেশ কয়েকটি পরিষদের মোট ২১৬ জন প্রার্থী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের ৪১টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
সারাদেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৬২ হাজার ৩৫৫ জন। নির্বাচনে পূর্ণ প্যানেলগুলোর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক চেয়ারম্যান আহাদ চৌধুরী দোয়াত-কলম প্রতীক, মে. জে. হেলাল মোরশেদ খান টেলিভিশন প্রতীক এবং ইসমত কাদির গামা’র আনারস প্রতীক। এই তিনজনসহ চেয়ারম্যান পদে মোট ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ ছাড়া নঈম জাহাঙ্গীর, নূরুল হুদা, খালেকুজ্জামান, ওছমান আলী খন্দকার, মোঃ আলমগীর, আবীর আহাদ ও ফরিদ উদ্দিন জাকির খান চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলেন। এছাড়া প্রত্যেক জেলা ও উপজেলা কমান্ড কাউন্সিলও একইসাথে সরাসরি ভোটে গঠিত হয়।
২৭ জুন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্বাচনী কন্ট্রোল রুম এই ফলাফল ঘোষণা করে।
নির্বাচনে প্রধান কয়েকটি পদে বিজয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্ধীর প্রাপ্ত ভোটের ব্যবধান ও অন্যান্য বিজয়ীরা হচ্ছেন:
চেয়ারম্যান:
হেলাল মোর্শেদ খান - ৫৪ হাজার ৪১২ টেলিভিশন প্রতীকে ভোট
অধ্যক্ষ আবদুল আহাদ চৌধুরী - ৩৬ হাজার ২৫৮ দোয়াত-কলম প্রতীকে ভোট
ইসমত কাদির গামা - ১০ হাজার ৮৫৪ আনারস প্রতীকে ভোট।
মহাসচিব (প্রশাসন):
এমদাদ হোসেন মতিন - ৫৩ টেলিভিশন প্রতীকে ভোট
মহিউদ্দিন আহম্মেদ - ৩২ হাজার ৮৯৫ দোয়াত-কলম প্রতীকে ভোট
মহাসচিব (অর্থ):
মনোয়ারুল হক খান লাভলু - ৫১ হাজার ১৮ টেলিভিশন প্রতীকে ভোট
কেএম মোদাচ্ছের - ৩০ হাজার ৫৬৪ দোয়াত-কলম প্রতীকে ভোট
মহাসচিব (কল্যাণ):
মোঃ মনিরুল হক - ৪৬ হাজার ৩৩৮ ভোট টেলিভিশন
মেজর ওয়াকার হাসান বীরপ্রতীক - ৩১ হাজার ৬২৯ ভোট দোয়াত-কলম
সাংগঠনিক সম্পাদক
আনোয়ার হোসেন পাহাড়ি বীরপ্রতীক - ৪৬ হাজার ৪৭৫ ভোট টেলিভিশন
সৈয়দ শাহাজাহান আলী - ২৫ হাজার ৩৪৮ ভোট দোয়াত-কলম
অন্যান্য বিজয়ীগণ
ভাইস চেয়ারম্যান:
১. প্রকৌশলী মোঃ ওয়াহিদুর রহমান,
২. সুলতান উদ্দিন আহম্মেদ,
৩. এএম হাবিব উল্লাহ খান,
৪. ব্রিগ. জেনারেল (অব.) মোঃ মাহমুদুল হক,
৫. শামসুল কাওনাইন (কতুব)
৬. মোঃ আবুল মনসুর
যুগ্ম সম্পাদক:
১. শফিকুল বাহার মজুমদার (টিপু),
২. সৈয়দ আহম্মদ মজুমদার,
৩. মোঃ আসাদুজ্জামান আরজু
৪. আলহাজ শরীফ উদ্দিন
সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক:
১. হামদে রাব্বী,
২. মোঃ সাইদুজ্জামান তারা,
৩. এসএম মর্তুজা হোসাইন
৪. মোঃ বাদশা মিয়া
সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য:
১. সৈয়দ আবদুল মালেক,
২. হাজী কে এম নজরুল ইসলাম,
৩. আতাহার উদ্দিন তালুকদার,
৪. মোঃ আলাউদ্দিন মিয়া,
৫. ক্যাপ্টেন (অব.) কাজী কবির উদ্দিন,
৬. মোঃ আক্তারুজ্জামান তারা,
৭. মোঃ শাহ আলম,
৮. মোঃ রহমত আলী,
৯. একেএম গোলাম কবীর শিকদার,
১০. মোঃ হাফিজর রহমান,
১১. আঃ মান্নান মজুমদার,
১২. মোঃ শাহাবুদ্দিন,
১৩. মোঃ হেদায়তেুল বারী,
১৪. এবিএম সুলতান আহম্মেদ
১৫. মোঃ ফজলুল হক বেগ
বিজয়ী হওয়ার পর হেলাল মোর্শেদ খান সাংবাদিকদের মাধ্যমে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের ২৪ দফা দাবি ক্রমান্বয়ে পূরণ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা ২৪ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন।
৩টি ভাগে ভাগ করে এ দাবি পূরণ করা হবে। এর মধ্যে কিছু দাবি আমাদের কমিটির আমলে, কিছু দাবি বর্তমান সরকারের আমলে এবং কিছু দাবি ভবিষ্যতে পূরণ করা হবে।
এখানে উল্লেখযোগ্য, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের কারোই দেশব্যাপী কোনরূপ প্রভাব ছিল না। সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা ভোটারদের বেশিরভাগই এসব প্রতিদ্বন্ধীকে চিনেন না বা তাদের কোনদিন দেখেন নি। আর প্রতিদ্বন্ধীরাও নির্বাচনের আগে সবগুলো জেলা বা উপজেলা সফর করে ব্যক্তিগতভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগাযোগ করাও ছিল দুঃসাধ্য ব্যাপার।
একারণে স্থানীয় জেলা বা উপজেলা কমান্ডের নির্বাচন তাদের কাছে যতটা না গুরুত্বপুর্ণ ছিল কেন্দ্রের নির্বাচন ততটা ছিল না। বেশিরভাগ সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাই কেন্দ্রীয় প্রার্থীদের ভোটদানে বিরত থাকেন। কয়েকজন পরাজিত প্রার্থী এই নির্বাচনকে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কারসাজি বলেও অভিযোগ করেছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।