আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নতুন বিমানবন্দরের যৌক্তিকতা এবং খাদ্যসঙ্কটের হুঁশিয়ারি

সত্যের সাথে আপোষ নাই

নতুন বিমানবন্দরের যৌক্তিকতা এবং খাদ্যসঙ্কটের হুঁশিয়ারি সিরাজুর রহমান দুনিয়াজোড়া এয়ারলাইনগুলোর অস্তিত্ব সঙ্কট চলছে। জ্বালানির ব্যয় বহু গুণ বেড়েছে ষাট-সত্তর এবং আশির দশকের চেয়ে। ও দিকে পরিবেশের দূষণ ও উত্তাপ বৃদ্ধি বিমান পরিবহনের ওপর প্রভাব ফেলেছে। উভয়বিধ কারণে ভাড়া এত বেশি বেড়ে গেছে যে, বর্তমান অর্থনৈতিক সঙ্কটের পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিমানভ্রমণের কথা অনেকেই ভাবতে পারেন না, অবসরযাপন কিংবা প্রমোদের জন্য বিমানভ্রমণ বিরাট রকম হ্রাস পেয়েছে। ব্রিটিশরা অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয়।

সুযোগ পেলে বেছে বেছে সবচেয়ে দূরের গন্তব্যস্থলগুলোতে তারা ছুটি কাটাতে যায়। কিন্তু বিগত দু-তিন বছরে সে অবস্থার নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে। ক্রমেই বেশি ব্রিটিশ নাগরিকরা ছুটি কাটাচ্ছেন স্বদেশের মনোরম সমুদ্রসৈকতগুলোতে। কিংবা লেক ডিস্ট্রিক্ট ও স্কটল্যান্ডের চোখ জুড়োনো হ্রদগুলোর শোভা দেখে। এ অবস্থা শুধু ব্রিটেনেই নয়, বিশ্বজোড়া।

আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন শিল্পের ওপর তার প্রভাব হয়েছে মারাত্মক। বহু ছোটখাটো এয়ারলাইন বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যরা একে অন্যের সাথে মিলে গিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করছে। যুক্তরাষ্ট্রে কয়েকটি এয়ারলাইন পরস্পরের সাথে মিশে গেছে। এ কালের সবচেয়ে বিখ্যাত ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ সম্প্রতি স্পেনের আইবেরিয়া এয়ারলাইনসের সাথে একত্র হয়েছে।

১৯৬০ সালের প্রথম দিকে আমি যখন লন্ডনের হিথরো এয়ারপোর্টে নামি তখন এখানে ছিল বড়সড় হাইস্কুলের আকারের দুটো টার্মিনাল। তার পর থেকে বিমানভ্রমণ হু হু করে বেড়ে যায়। লন্ডন যেহেতু পূর্ব-পশ্চিম উভয় দিকের ভ্রমণের মণিকেন্দ্র সেহেতু এখানে যাত্রীদের আনাগোনা অসম্ভব রকম বেড়ে যায়। একের পর এক বিশাল টার্মিনাল তৈরি হতে থাকে। হিথরোতে বর্তমানে টার্মিনালের সংখ্যা পাঁচ আর বিমান ওঠানামার জন্য রানওয়ে দু’টি।

সত্তরের দশক থেকে হিথরো আর লন্ডনের চাহিদা মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত বিবেচিত হয়নি। মাইল পঞ্চাশের ভেতর গ্যাটউইক, স্ট্যানস্টেড আর লুটনে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরি হয়েছে, বৃহত্তর লন্ডনের মধ্যে তৈরি হয়েছে সিটি এয়ারপোর্ট। বিমানভ্রমণ এতই বেড়ে গিয়েছিল যে, পরিকল্পনাবিদরা ধরে নিয়েছিলেন আগামী বছর দশেকের মধ্যেই এই বিমানবন্দরগুলো লন্ডনের চাহিদা মেটাতে পারবে না। তারা হিথরো, গ্যাটউইক আর স্ট্যানস্টেডে আরো একটি করে রানওয়ে তৈরির পরিকল্পনা করেন। পরিবেশবাদীরা এবং যাদের ঘরবাড়ি, ব্যবসায়-বাণিজ্য সেসব প্রকল্পে বিলুপ্ত হওয়ার কথা ছিল তারা প্রতিবাদ করেছে কিন্তু লেবারদলীয় সরকার লন্ডন মহানগরীর বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের কথা ভেবে সেসব আপত্তি অগ্রাহ্য করেছিল।

কিন্তু বিমানভ্রমণের দ্রুত অধোগতি দৃষ্টে লেবার সরকার গ্যাটউইক আর স্ট্যানস্টেডে বাড়তি রানওয়ে তৈরির পরিকল্পনা ত্যাগ করে। গত মাসের নির্বাচনে জয়ী হয়ে নতুন টোরি সরকারও কালবিলম্ব না করেই ঘোষণা দেয় যে, হিথরোর বাড়তি রানওয়ে তৈরি হবে না। বিশ্বব্যাপী বিমানভ্রমণের এই হচ্ছে পরিস্থিতি। বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর? এই পরিস্থিতিতেই খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতা বঙ্গবন্ধুর নামে একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা করেছেন। এ বিমানবন্দর তৈরি হবে ঢাকা থেকে বেশ কিছু মাইল দূরে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে।

ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম স্বাধীনতার ঘোষক ও মুক্তিযুদ্ধের বীরোত্তম শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে রাখার পর থেকে ঈর্ষা ও প্রতিহিংসায় বর্তমান সরকারের আহার-নিদ্রা যেন হারাম হয়ে গেছে। বাংলাদেশের এই প্রধান প্রবেশপথে জিয়ার নাম­ সেটা কী করে সহ্য করা যায়? অবৈধভাবে অন্যের সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার নাম যেমন দুর্নীতি, আমার মতে বিতর্কিতভাবে স্থাপনাগুলোর নাম পরিবর্তন করে দেয়াও সে রকমেরই দুর্নীতি হিসেবে হওয়া উচিত। গত বছর ক্ষমতা পেয়েই সরকার ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার নাম মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। সন্দেহ নেই যে, তখন মতলব ছিল এ বিমানবন্দরের নাম বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাখা। কিন্তু দেশজোড়া প্রতিবাদের মুখে সে সাহস হয়নি।

তা ছাড়া ভয় ছিল বিএনপি আবার ক্ষমতায় এলেই ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করে আগের নাম ফিরিয়ে আনবে। তখন শেষ রক্ষার জন্য বিরাট একটা ছলনার আশ্রয় নিলো সরকার। জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করে হজরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এটি ইসলামপ্রীতির পরিচয় বহন করে না, এ ক্ষেত্রে ধর্ম এবং ইসলাম ধর্মের নায়কদের নাম ব্যবহার করা হয় শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। সরকার স্থির করল, বাংলাদেশের বহু ধর্মপ্রাণ মানুষের ভক্তি ও শ্রদ্ধাভাজন হজরত শাহ জালাল রঃ-এর নামে বিমানবন্দরের নাম রাখা হলে সেসব মানুষের ধর্মানুরাগে আঘাত করার ভয়ে বিএনপি ও অন্যরা প্রতিবাদ করতে সাহস পাবে না, এমনকি বিএনপি ক্ষমতা পেলেও হয়তো সে নাম পরিবর্তন করবে না।

এভাবে বিএনপি’র ওপর বিরাট একটা আঘাত হানা হলো বটে, কিন্তু সরকারের মূল অভিপ্রায় সফল হলো না­ দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাথায় তার কাঙ্ক্ষিত নাম স্থাপন করা গেল না। তখনই ভাবতে হলো এবং সে ভাবনার ফসল হচ্ছে সম্পূর্ণ নতুন একটা বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা। বাংলাদেশের যেকোনো মানুষ আপনাকে বলে দেবে এ পরিকল্পনা ঋণ করে ঘি খাওয়া ছাড়া আর কিছু নয়। বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতির দেশ। জনসংখ্যা বাড়ছে হু হু করে।

তার ওপর পরিবেশের উষ্ণতা বৃদ্ধির অপরিহার্য পরিণতিতে আসছে কিছু বছরের মধ্যেই দেশের দক্ষিণের এক-চতুর্থাংশ ডুবে যাওয়ার শঙ্কা। সে বিশাল অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষকে উত্তরমুখী সরে আসতে হবে। গত জুলাইয়ের আইলা ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্লাবনে যে অঞ্চল ডুবে যায় সে অঞ্চলের পুনর্বাসনে সরকার কিছু করতে পারেনি­ শুধু বড় বড় ও মধুর মধুর কথা ছাড়া। আইলা-পীড়িত অঞ্চলের প্রায় আড়াই লাখ মানুষ ইতোমধ্যে আরো উত্তরে সরে এসেছে। ভূমিসঙ্কট, খাদ্যসঙ্কট বিশ্বব্যাপী খাদ্যসঙ্কট ঘনিয়ে আসছে।

জাতিসঙ্ঘসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রধান সংস্থা ক্রমেই বেশি ঘন ঘন হুঁশিয়ারি দিচ্ছে এ সম্পর্কে। বাংলাদেশের ভূমি উর্বর, কিন্তু সীমিত। জমি এবং প্রয়োজনীয় উপায়-উপকরণ পেলে এ দেশের কৃষক অসাধ্য সাধন করতে পারে, এ জমিতে সোনা ফলাতে পারে। কিন্তু ভূমি খুবই সীমিত। গৃহায়ন ও নগরায়নের চাহিদা মেটাতে গিয়ে কৃষিযোগ্য ভূমির পরিমাণ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে।

পরিকল্পিত বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর তৈরি করতে কী পরিমাণ কৃষিজমি নষ্ট হবে সঠিক হিসাব আমার জানা নেই। নিশ্চয়ই কয়েক লাখ একর হবে। তা ছাড়া সে বিমানবন্দরের সাথে রাজধানীর সড়ক এবং সম্ভবত রেল যোগাযোগ স্থাপন করতে আরো বহু হাজার একর কৃষির জমি বরাবরের জন্য হাতছাড়া হয়ে যাবে। সেসব জমি বাবদ কী পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন নষ্ট হবে? সে খাদ্যের ঘাটতি মেটানো হবে কী করে? বিদেশে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে আমাদের দেশের কর্মীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের অর্থে কি? তা ছাড়া প্রস্তাবিত বিমানবন্দর তৈরির ও তার উপকরণ আমদানি বাবদ যে লাখ লাখ কোটি টাকা ব্যয় হবে সে অর্থ আসবে কোথা থেকে? অবশ্যই মোটা সুদে বিদেশ থেকে পাওয়া ‘সাহায্য’ থেকে। সে সাহায্য (ঋণ) ও তার সুদ আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের গলায় গুরুভার হয়ে থাকবে চিরদিন।

মাঝখান দিয়ে সরকারদলীয় কিছুসংখ্যক দুর্নীতিবাজ হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নেবে। সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশে আর কোনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রয়োজন আদৌ নেই। দৃশ্যমান ভবিষ্যতে বিমানবন্দরের চাহিদা আরো কমে যেতে বাধ্য। একটা গুরুত্বপূর্ণ সত্য কথা বাংলাদেশের বহু মানুষ জেনেও না জানার ভান করে। বড় আকারে বিদেশী পর্যটক বাংলাদেশে আসবে না।

কক্সবাজারে দীর্ঘ একটা সমুদ্রসৈকত আছে বটে, কিন্তুç আরো সুদর্শন সৈকত আরো বহু দেশে আছে ভূরি ভূরি। পশ্চিমা পর্যটক আকর্ষণের জন্য যেসব বিনোদনের প্রয়োজন দৃশ্যমান ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সেসব দিতে পারবে না। শুধু ‘পৃথিবীর বৃহত্তম বালুকা বেলা’ দেখতে ইওরোপ কিংবা আমেরিকা থেকে কেউ বাংলাদেশে এলে লোকে তাকে উন্মাদ বলবে এবং আগেই বলেছি, আন্তর্জাতিকভাবেই বিমানভ্রমণে বিরাট ভাটা শুরু হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীরা­ যারা মধ্যপ্রাচ্য কিংবা দূরপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কঠোর পরিশ্রম করে রেমিট্যান্স পাঠান এবং যে রেমিট্যান্সের বদৌলতে বাংলাদেশ সরকার বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে গর্ব করে। কিন্তু বিদেশে বাংলাদেশী শ্রমিকের চাহিদা দিনকে দিন সঙ্কুচিত হয়ে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রীরা মুখের কথায় বিদেশে শ্রমের বাজার বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, কাজের বেলায় কিন্তু সে বাজার দিনকে দিন ছোট হয়ে আসছে। মাটি কাটার মতো কঠোর পরিশ্রমের কাজগুলোর জন্যই আবুধাবি, দুবাই ও কুয়েত প্রভৃতি দেশ এতকাল লাখ লাখ বিদেশী শ্রমিক ব্যবহার করেছে। কিন্তু অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হয়ে গেলে তাদের পরবর্তী পর্যায়ের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন হবে উচ্চশিক্ষিত এবং খুবই দক্ষ প্রকৌশলীর। সে চাহিদা মেটানো বাংলাদেশের সাধ্যের বাইরে। উত্তরবঙ্গে তৈরি করুন একান্তই আরেকটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করতে হলে সেটি হওয়া উচিত উত্তরবঙ্গে, রাজশাহী কিংবা রংপুরে।

দেশের সে অঞ্চলে একটিও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নেই। কিন্তু ঢাকার জন্য আরেকটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৈরি করা সরকারের চমক ছাড়া আর কিছু নয়। আসলে চমক ও চটক ছাড়া আর কিছুই জানে না বর্তমান সরকার। দেশটাকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ পরিণত করবেন, কিন্তু যে দেশে বিদুøৎই নেই সে দেশকে ডিজিটাল দেশে পরিণত করার কথা মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়। বাংলাদেশের মানুষের বিনোদনের উপকরণ নেই বললেই চলে।

কিন্তু এ দেশের মানুষ ফুটবল খেলা ভালোবাসে, চার বছর পরপর বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতার মুখ চেয়ে থাকে তারা। কিন্তু তাদের দুর্ভাগ্য, বিজলির অভাবে বিশ্বকাপের খেলাগুলো তারা দেখতে পারছে না। বহু মানুষ ক্রোধ ও হতাশায় ফেটে পড়ছে দেশের সর্বত্র। তারা যানবাহনে আগুন লাগাচ্ছে, এটাসেটা ভাঙচুর করছে। গদিতে বসার দেড় বছর পরও (এবং একটা অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আরো দুই বছরের ব্যবধান সত্ত্বেও) সরকার সব কিছুর জন্যই সাবেক চারদলীয় জোটের সরকারকে দায়ী করে।

বৃষ্টি হওয়া ও না হওয়ার জন্যও হয়তো কোনো দিন বিরোধীদলীয় নেত্রীকে দায়ী করা হবে। কিন্তু এ কথা সত্যি যে, অতীতে বিদুøৎ ঘাটতি ছিল, লোডশেডিংও ছিল কিন্তু বিদুøৎ নিয়ে এমন দুর্গতি মানুষের হয়নি। সাধারণ মানুষ এখন বুঝতে শুরু করেছে যে, এ সঙ্কট কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে অন্য একটা অসাধু উদ্দেশ্যে। সঙ্কটের দোহাই দিয়ে বিনা টেন্ডারে বিদুøৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরির কনট্রাক্ট দেয়া হচ্ছে চিহ্নিত নেতাদের এবং তাদের আত্মীয়স্বজনের আরো লুটপাটের সুযোগ করে দেয়ার জন্য­ যেমন করে বিনা টেন্ডারে মার্কিন তেল কোম্পানি শেভরনকে মোটা অঙ্কের কনট্রাক্ট দিয়ে কাউকে কাউকে লুটপাটের সুযোগ দেয়া হয়েছিল। সরকারের অত্যাচার, নিপীড়ন ও দুর্নীতি দেশের মানুষের সহ্যসীমা ছাড়িয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনে মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরাজয় প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারেরই পরাজয় বলতে হবে। মহিউদ্দিনকে বিজয়ী করার জন্য সরকারের চেষ্টার অবধি ছিল না। চট্টগ্রামের দু’টি বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের অপেক্ষাকৃত শক্তিশালীটির ওপর মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রভাব প্রায় অসীম। তার জোরেই তিনি অতীতে একাধিকবার এ বন্দর অচল করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। তাকে মেয়র নির্বাচনে জয়ী করানো বর্তমান সরকারের জন্য খুবই জরুরি ছিল।

তারা ভারতকে চট্টগ্রাম বন্দর প্রায় দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিলেন দিল্লি সফরে গিয়ে। বন্দরনগরী ও বন্দরের নিয়ন্ত্রণ মহিউদ্দিন চৌধুরীদের হাতে রাখা সে জন্যই আওয়ামী লীগ সরকারের প্রয়োজন ছিল। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘নোটিশ’ দিয়ে দেয়া হলোঃ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিক্রি, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, অত্যাচার ও দুর্নীতি আর দেশবাসী সহ্য করতে চায় না। (সুত্র, নয়া দিগন্ত, ২৭/০৬/২০১০) Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.