পরাঞ্জয়ী...
২০০৪, এপ্রিল
সকালে ঘুম ভেঙ্গে দীপন দেখে ঘড়িতে ১১ টা বাজে। রুমুর কথা ওর মনেই হলনা। পুরুষ সহজে ভুলে যায় বলেই বোধ করি নারীর মনে রাখবার এত চেষ্টা! খাওয়া নাওয়া সেরে অফিসে ছুটলো সে। সেল ফোন একটা হওয়ায় সেটা বাসাতেই রেখে যায় দীপন। কাজের ঝামেলায় রুমুর কথা মুছে যায় মন থেকে।
সামিয়া ঘরের কাছে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আকাশের বয়স তিন বছর হলেও বয়সের তুলনায় একটু বেশিই স্থির সে। তাই সামিয়ার অসুবিধা তেমন হয়না বললেই চলে। সেল ফোনের রিং টোনর শব্দে সামিয়া একটু চঞ্চল হয়ে পড়ে। স্বামীর ফোন ভেবে মুচকি একটা হাসি যে তার সমস্ত মুখে ছড়িয়ে পড়েনি সে বললে একটু অবিচার করা হয় বৈ কি! ফোন রিসিভ করেই হতাশ হল সামিয়া।
তার স্বামী নিয়াজ নিঃসন্দেহে একজন পুরুষ মানুষ! ফোনের অপরপাশের কণ্ঠটি কোন ক্রমেই নিয়াজের সাথে মেলে না।
:দীপন আছে?
:না, কে বলছেন?
:আমি রুমু, আমার একটা জিনিস খুঁজে দেয়ার কথা ছিল ওনার। উনি আসলে বলবেন দয়া করে
:জ্বী বলবো
:আপনি কে বলছিলেন?
:আমি ওর বড় বোন।
তারপর ফোন রেখে দিল বিদায় নিয়ে। কাজ পড়ে আছে অনেক।
কাজের লোকেরও পাত্তা নেই। ঢাকায় এখন আর কাজের লোক পাওয়া যায়না। সবাই এখন গার্মেন্টস কর্মী। বুয়া পদবির চেয়ে এই পদবীর প্রতি মানুষের লোভ বেশি। কী আর করা।
রান্না করতে চলে গেল সে। আকাশ এখনও ঘুমে। অবশ্য জেগে থাকলেও মহাভারতের পান্ডুলুপি খোয়া যাওয়া সম্ভাবনা কম। কারন মা'কে বিরক্ত করাটা আকাশের কাছে চরম বিরক্তির কাজ! নিশ্চিন্তে কাজ করে সামিয়া।
সামিয়াদের বাসাটা যাত্রাবাড়িতে।
খানিকটা অতি-আবাসিক এলাকার মত হওয়ায় সুনসানও বটে। বিয়ের পর থেকে এানে আছে। সেই যে কবে এই সংসারটা কে আপন করে নিয়েছে বাবার ঘর ছেড়ে। বাবার কথা মনে হতেই চোখ দিয়ে জল এসে পড়লো ওর। কতদিন বাবাকে দেখেনা, মা'কেও না!
ওদের বাবা স্কলের প্রধান শিক্ষক, রকিবুল ইসলাম।
সৎমানুষ হিসেবে একটু বাড়াবাড়ি রকমের সন্মানিত একজন মানুষ। মাস্টারের ছেলে মেয়ে বলে খাতির যত্নটাও একটু বেশিই পেয়েছে ওরা। মা তো একবারেই নিরীহ মানুষ। স্বামী সন্তানদের পাশাপাশি এলাকার প্রতিবেশিদের খোঁজ বর রাখাও যেন তার দায়িত্ব ভেবে নিয়েছেন তিনি।
ভাবতে ভাবতে রান্না চাপায় সামিয়া।
আকাশের গলার আওয়াজ পাওয়া যায়য়। ঘুম ভেঙ্গেছে বোধ হয়!
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।