রাজনীতি বুঝিনা। বাঁকা পথে চলিনা । গন্তব্য ওই তো কিছুদূর সামনেই রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার ব্যাপারে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভুল বুঝিয়েছেন ঢাকা-১৯ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ। সাভার পৌর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলেছেন যুবলীগের সঙ্গে সোহেল রানার কোনো সম্পর্ক নেই। খোদ সাভারের আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতারা ঢাকা টাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, সোহেল রানা এমপি মুরাদ জংয়ের খুবই ঘনিষ্ঠজন। মুরাদ জংয়ের বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সহযোগী হিসেবে সোহেলের পরিচিতি সাভারের সব মহলেই আলোচিত। সোহেলও এমপি মুরাদ জংয়ের ছত্রছায়ায় নিজের ‘সন্ত্রাসী’ কর্মকাণ্ডের বিস্তার করেছেন। তাই নিজের আস্থাভাজন সোহেলকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডাহা মিথ্যা বলেছেন মুরাদ।
ঢাকা টাইমসের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।
জানা গেছে, তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সাভারে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য গুছিয়ে নিয়েছেন। সাভারে জুট ব্যবসায় একছত্র নিয়ন্ত্রণ তার। এছাড়া জমিজমার ব্যবসাও রমরমা। তার ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, মুরাদ জংয়ের এসব ব্যবসা-বাণিজ্য দেখাশোনা করে সোহেল রানা। এর বিনিময়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন রানা।
এছাড়া ক্ষমতা কেন্দ্রীক যেকোনো দাঙ্গা-হাঙ্গামায় ‘সোহেল বাহিনী’র দাপটের কথা সাভারে কারও অজানা নয়।
সাভারের স্থানীয় সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘সন্ত্রাসী’ কাজের মদদ দেয়ায় সাভারে সাধারণ জনগণের মধ্যে মুরাদ জংয়ের জনপ্রিয়তা তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। তারা অপেক্ষায় আছে নির্বাচনের। সুযোগ পেলে মুরাদকে জবাব দিতে ভুলবেন না বলেও মত প্রকাশ করেছেন ক্ষুদ্ধ জনগণ।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আশরাফ উদ্দিন খান ঢাকা টাইমসকে জানান, অর্থ বৈভব ও প্রতিপত্তির কারণে সোহেল রানার সঙ্গে স্থানীয় সাংসদ তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদের সাহচর্য হয়।
তাঁর সুনজরে পড়ে সোহেল রানা হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য। একপর্যায়ে তাঁকে দেওয়া হয় পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ। তিনি জানান, রানা সাভারের সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। সাংসদ তৌহিদ জং মুরাদ তার বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে রানা ও তার বাহিনীকে ব্যবহার করেন।
অভিযোগ রয়েছে, ভবন ধসের দিন রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা ওই ভবনের নিচতলাতে ছিলেন।
এ সময় তিনি জনতার রোষানলে পড়েন। পরে রানা এমপি তৌহিদ জং মুরাদকে ডাকেন। এমপি এসে রানাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে এমন চিন্তা করে রানাকে গোপন ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন। জানা গেছে, রানাকে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন মুরাদ জং।
স্থানীয়রা জানান, হরতালবিরোধী মিছিল, সাংসদের জনসভা, সরকারি সম্পদের ইজারা—এসব কাজে সোহেল রানার একচ্ছত্র আধিপত্য গড়ে ওঠে। জমি ব্যবসার নামে নিরীহ লোকজনের জমি দখলের অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। গত বুধবার ভবনধসের আগেও হরতালবিরোধী মিছিল করার জন্য লোক জড়ো করেছিলেন রানা।
‘কলু খালেকে’র ছেলে রানা থেকে সোহেল রানা:
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার জয়মণ্ডপ গ্রামে থাকতেন রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা। তার বাবার নাম আবদুল খালেক।
ওই এলাকার লোকজন রানার বাবাকে ‘কলু খালেক’ হিসেবে চিনতেন। তিনি একসময় ফেরি করে তেল বিক্রি করতেন। প্রায় ৩০ বছর আগে তিনি সাভারে এসে ভাড়া বাসায় থেকে তেলের ব্যবসা করেন। একসময় তেলের ঘানি দেন। সেখান থেকে শুরু করেন খৈলের ব্যবসা।
একপর্যায়ে সাভার নামাবাজারে তেলের মিল গড়ে তোলেন। এভাবেই সোহেল রানার পরিবারে অর্থনৈতিক উত্থান শুরু।
১৯৯৪ সালে সাভার কলেজের ভিপি ছাত্রদলের নেতা হেলালউদ্দিনের ডানহাত বলে পরিচিত গাড়িচালক জাকিরের সঙ্গে পরিচয় হয় সোহেল রানার। গাড়িচালক জাকিরের সঙ্গে সোহেল রানার বোন সুফিয়া আক্তারের বিয়ে হয়। এভাবেই ছাত্রদলের নেতা হেলালউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠে রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার পরিবারের।
হেলালউদ্দিনের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে সোহেল রানা গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। এলাকায় তার বাহিনী পরিচিতি পায় ‘রানা বাহিনী’ নামে।
সন্ত্রাসী বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে সোহেল রানা গড়ে তোলেন বিভিন্ন ব্যবসা। ২০০৭ সালে তিনি নির্মাণ করেন রানা প্লাজা। সাভার পৌরসভা সূত্র ঢাকা টাইমসকে জানিয়েছে, ‘রানা প্লাজা’র নির্মাণ শুরু হয় ২০০৭ সালে।
এর আগে জায়গাটি ছিল পরিত্যক্ত। পেছনের দিকে ছিল জলাশয়। ভবন নির্মাণ করার আগে বালু ফেলে ভরাট করা হয়। এর উদ্বোধন হয় ২০১০ সালে। ভবনের পেছনের অংশ রানা দখল করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/ ২৭ এপ্রিল/ এইচএফ/ ১২.১০ঘ.)
Click This Link
একেই বলে নিজ স্বার্থ । হায়রে আমার নেতা , ওরা নাকি দেশ প্রেমিক । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।