আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলছি

বুদ্ধিজীবী হতে ডিগ্রী লাগেনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি আপনাকে ঘৃণা করি। কেন করবো না বলেন! যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম তখন চোখে ছিল রঙিন চশমা। আবেগ আর যুক্তি দিয়ে পথ চলতে চাইতাম। সংসারের বোঝা ঘাড়ে না চাপলেও পেট চালাতে পরের ছাত্র পড়াতে হত।

পড়াশোনা শেষ করেছি অনেক প্রত্যাশা নিয়ে। ভেবেছিলাম আমার জন্য চাকরী নিয়ে বসে আছে প্রতিষ্ঠানগুলো। পড়াশোনা শেষ হবার সাথে সাথে একটা না একটা চাকরী পেয়েই যাবো। কিন্তু বাস্তবতার পৃথিবীতে হেঁটে টের পেলাম চাকুরী নামক সোনার হরিণের পিছনে ছুটতে গেলে দিলে আর পকেটে কি পরিমান তাকতের প্রয়োজন হয়। পরিবারের প্রত্যাশা থাকে ছেলেকে তো অনেক কষ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালাম।

এবার সে একটা চাকরী জোগাড় করে নিক। তাই এই বেকার অবস্থায় তারাও আর সেভাবে পকেটমানির ব্যবস্থা করে না। অথচ একেকটা সরকারী চাকরীর দররখাস্ত করতে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা চলে যায়। কোথা থেকে আসে এই টাকা! আপনি কি একবার ভেবে দেখেছেন? ধনী দেশগুলো যেখানে ছাত্র- বেকারদের ভাতার ব্যবস্থা করে সেখানে আমাদের চাকরীর পরীক্ষায় বসার খরচটাও নিজেদের যোগাতে হয়। তাও যদি চাকরী জুটতো।

আপনি যেখানে যান নিজের সরকারের গুনগান নিজেই গাইছেন। তার মানে কি দাঁড়ায় সেটা কি একবার ভেবে দেখেছেন? আপনার গুনগান গাওয়ার জন্য দেশে আর কেউ নেই যে আপনার গুনগান আপনাকেই গাইতে হয়। তার মানে আপনি চরম ব্যর্থ। দেশের সাধারণ মানুষ কোন দিকে? সেটা কি কখনো ভেবেছেন? যে তরুন নতুন ভোটাররা আপনাকে গণজোয়ার এনে দিয়েছিল তারাই এবার আপনাকে ডোবাবে। আমি তাদেরই একজন।

কি করেছেন আপনি আমাদের জন্য? চাকরীর ক্ষেত্রগুলো ছাত্রলীগের জন্য ছেড়ে দিলেন। তার উপর তো কোটা নামক প্রথা দিয়ে আপনি রাজনৈতিক নোংরামী শুরু করলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আপনি যা খুশি করেন। আমাদের আপত্তি করার অবকাশ থাকেনা। থাকবেও না।

কিন্তু তাদের নাতি-নাতনীদের কোটা দিয়ে সাধারন জনগনের বুকে লাথি মারলেন নাকি পেটে সেটা ভোট এলেই টের পাবেন। তখন আপনি কি বলবেন? মনে আছে সেটা! গত নির্বাচনের আগের নির্বাচনে রাত আটটার পরে যে ডায়লগ মেরেছিলেন! আটটার আগপর্যন্ত বললেন নিররাবচন সুষ্ঠ হয়েছে। যেই দেখলেন বিএনপির পালে হাওয়া লেগেছে সেই বললেন, নির্বাচনে সুষ্ঠ(!) কারচুপী হয়েছে। আসলে আপনার বাংলাদেশের জনগনের প্রতি আস্থা নেই। আপনার নেই, খালেদা জিয়ারও নেই।

আপনারা জনগনকে গাধা মনে করেন। বলদ কে যেভাবে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরানো যায় আপনারা জনগনকে সেভাবেই ঘোরান। দোষ আসলে আমাদের জনগণের। আমরাই নিজেদের কপালে লাথি খাওয়ার জন্য আপনাদের ক্ষমতায় আনি। আপনার আদরের আবুল হোসেন, সুরঞ্জিত হাতে নাতে ধরা খাওয়ার পরও আপনি তাদের ভাল ছেলে বলে সার্টিফিকেট দেন।

পদ্মা সেতু না হলে আপনার কিচ্ছু যায় আসে না। কারণ আপনাকে তোও বাসে চড়তে হয় না। ফেরীতে পার হতে হয় না। আমরা আপনার জন্য প্লেন কিনে রেখেছি। আপনি উড়ে যাবেন।

আর আমরা কচ্ছপের গতিতে কস্তুরী ফেরীতে ভুটুর ভুটুর শব্দ তুলে মাওয়া থেকে পাড়ি জমাবো কেওড়াকান্দি ঘাটের উদ্দেশ্যে। ইদে বাড়ী যাব। জ্যামে পড়ে যদি পদ্মানদীর মাঝে ইদের জামাতের সময় হয় তাতে এমন কি ক্ষতি। পদ্মার চরে ফেরী থামিয়ে আমরা ইদের নামাজ পড়ে নেব। যাত্রীদের মধ্যে হুজুর নিশ্চই কাউকে না কাউকে পাওয়া যাবে।

আহলে হাদিস মাযহাবের কেউ ইমামতি করলে হানাফী মাযহাবের নাকি নামাজ কবুল হয় না। যদিও আল্লাহর নবী এইসব হানাফী- আহলে হাদীস গোষ্ঠী দেখে যান নাই। কেমন খটকা লাগা কথা তাই না। আচ্ছা জামাতী মাযহাবের পেছনে কি আওয়ামী মাযহাবের নামাজ কবুল হয়? চিন্তায় পড়ে গেলাম বড়! বাংলাদেশের মোবাইল ফোন কোম্পানীগুলোর ব্যাপারে আপনার আইডিয়া কতটুকু তা আমি ঠিক জানিনা। তাদের একটা অফার হল, বন্ধ সিম চালু প্যাকেজ।

বন্ধ সিম চালু করলেই কম কলরেট, রিচার্জ অফার, ফ্রি ইন্টারনেট, ফ্রি এসএমএস সহ নানা সুবিধা পাওয়া যায়। আর আমরা যারা তাদের প্যাকেজ আগে থেকে সচল রেখেছিলাম তারা বলি, ধ্যুস! সিমটা বন্ধ থাকলেই ভাল হত। কিছু সিম চালু করতে গিয়ে মোবাইল কোম্পানি অনেক গ্রাহকের বিরাগভাজন হয় এটা আমি বাস্তবতা থেকে দেখেছি। গ্রাহকেরা এক কোম্পানি থেকে আরেক কোম্পানির সেবা নিতে ছুটে যায়। আপনি ভাল করেই জানেন, বাংলাদেশের মানুষ একাধিক মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে ভালবাসে।

আর সিম কার্ড এখানে কত সহজলভ্য! আপনি সংসদে যে মোবাইল নাম্বার দিয়েছিলেন সেটা বন্ধ কেন? বন্ধ সিমের অফার নেবেন বলে বন্ধ করে রাখেন নি তো আবার। বাঙালী ফ্রি পেলে নাকি সাদা লুঙ্গি পেতেও আলকাতরা নিতে চায়। আমি ভীতু মানুষ একবার সাহস করে আপনার নাম্বার ডায়াল করেছিলাম। আপনাকে সালাম দেব বলে। চাকরীর তদবীর করে দুচারটা কথা বলতাম না সেরকম মহামানব কিন্তু আমি নই।

আদর্শের খুঁটি আঁকড়ে ধরে যে ধুকে ধুকে মরতে নেই তার চরম আদর্শ তো আপনি। এরশাদ আংকেলকে ক্ষমতা থেকে নামাতে আপনি জামাতীদের সাথে নিলেন। আপনারা স্লোগান দিলেন জয় বাংলা, বিএনপি দিল বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, জামাতীরা দিল নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার। স্লোগানে স্লোগানে কি মিক্সার হয়ে যায়নি! কিন্তু আজ একি করছেন। তাদের বিচার করতে চাইছেন।

করতে চাইছেন করেন। আমার আর কি। কিন্তু কিছু ঘটলেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বুলি দিবেন না। পদ্মা সেতু প্রকল্প বাতিলের সাথে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কোন সুত্রে বাধা সেটা আবিষ্কার করতে গেলে নিউটন বেটা হার্টফেল করত নিশ্চিত। তবে বাংলাদেশ বৈজ্ঞানিক লীগ একটা সুত্র আবিষ্কার করে ফেলত।

কিন্তু সেটা এত সহজ যে বাঙালী বুঝতে পারবে না। বাঙালীর দোষের ভিতর ছোট দোষ এরা সহজ জিনিস সহজে বোঝে না। সেজন্যই তো সামনের বারের পরেরবার আপনি আবার ক্ষমতার স্বাদ পাবেন। কথা দিলাম। আপনি কিছু লোকের সহমর্মিতা পেতে হাজার হাজার ছেলের চাকরীর বাজার নষ্ট করছেন ।

আমরা যদি এখন অন্য কোম্পানীর সিম কার্ড কিনতে দৌড় লাগাই তাহলে প্লিজ মাইন্ড নিয়েন না। আরেকটা কথা জানতে ইচ্ছে হয়, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি এতই সফল তাহলে তাকে সরালেন কেন। তিনি কিন্তু খুবই সচেতন ছিলেন। আমরা ঘরে তালা লাগাতে যাতে না ভূলে যাই সেটাও তিনি মনে করে দিতেন। নাকি আপনি আমাদের ভোলাতে চাইছেন, বাংলাদেশে সাহারা খাতুন বলে কেউ ছিল? নাপিত যদি চুল কাটতে জানেন তাহলে একটা কেউচি যথেষ্ট, ধামাভরা খুরকাঁচির দরকার হয় না।

আপনি ক্ষমতা ছাড়ার সময় তো বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ বলে কিছু রেখে যাবেন বলে মনে হয় না। জাতীয় সংসদের নাম পালটে জাতীয় মন্ত্রণালয় করে যাইয়েন প্লিজ। নাম পরিবর্তন যে একটা সাহিত্য সেটা আমরা আপনার কাছ থেকেই শিখেছি। প্লিজ বাংলাদেশের নামটা আবার বদলে দিয়েন না। ছোটকাল থেকে এই নামটাকে কেন জানিনা বড় বেশী ভালবেসে ফেলেছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.