আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চালের বাজার লাগামহীন

অসতী মাতার পুত্র সে যদি জারজ-পুত্র হয়, অসৎ পিতার সন্তানও তবে জারজ সুনিশ্চয়!

দেশে খাদ্য মজুদ এখন উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে এসেছে। গত বছরের তুলনায় বর্তমানে ২ লাখ ৭৪ হাজার টন কম খাদ্য মজুদ আছে। মজুদ বাড়াতে সরকারি পর্যায়ে গম আমদানির সিদ্ধান্ত হলেও এর আগেই চাল ও গমের বাজারে অস্থিরতার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যেই লাগামহীন হয়ে পড়েছে চালের বাজার। বিশেষ করে মোটা চালের দর গত এক মাস ধরেই বাড়ছে।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে গত মৌসুমে বোরোর উত্পাদন বিপর্যয়কে দায়ী করছেন চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীরা। খাদ্য পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ ইউনিট (এফপিএমইউ) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে মোট খাদ্যের মজুদ রয়েছে চাল ৩ লাখ ৩৩ হাজার টন ও গম ৩ লাখ ৩ টন। গম ও চাল মিলিয়ে খাদ্যের মজুদ আছে ৬ লাখ ৩৬ হাজার টন। অথচ গত বছর এ সময়ে চালের মজুদ ছিল ৭ লাখ ৩৫ হাজার টন ও গম ১ লাখ ৭৫ হাজার টন। চাল ও গম মিলে মজুদের পরিমাণ ছিল ৯ লাখ ১০ হাজার টন।

গত বছরের তুলনায় বর্তমানে ২ লাখ ৭৪ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্যের কম মজুদ আছে। বাজার তদারকি সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) জানিয়েছে, গত এক মাস ধরেই চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। বিশেষ করে গত এক সপ্তাহে মোটা চালের দাম কয়েক দফা বেড়েছে। টিসিবি’র বাজার দর অনুসন্ধান ও গবেষণা সেল সূত্র জানিয়েছে, গত এক মাসে মোটা চালের দর শতকরা হিসেবে বেড়েছে ১২ শতাংশ। কেজিপ্রতি ৪/৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

মোটা চালের দাম গত এক বছরে বেড়েছে ৩২ শতাংশ। বাজার ঘুরে জানা গেছে, স্বর্ণা ও লতা নামের মোটা চাল এখন প্রতি কেজি ৩১ থেকে ৩২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ চালের প্রধান ক্রেতা গরীব ও নিম্ন আয়ের মানুষ। চাল বিক্রেতারা দাবি করেন, চলতি বছর বোরো মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ছিল ২৩ থেকে ২৪ টাকা। সে তুলনায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ৭ থেকে ৮ টাকা।

বাবুবাজার এলাকার চাল ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন গতকাল আমার দেশকে জানান, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চালকলগুলো থেকে মোটা চালের সরবরাহ কিছুটা কমিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের অভিযোগ, চালকল মালিকরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিপুল পরিমাণ ধান মজুদ রেখেছেন। এখন তারা ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছেন। তিনি জানান, মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ছিল ৩৩ থেকে ৩৪ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে ৩৭ থেকে ৩৯ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাবুবাজারের আরেক চাল ব্যবসায়ী জানান, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সব ধরনের চালের দাম মণপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। টিসিবি জানায়, গত ২০০৬ সালে রাজধানীর বাজারে মোটা চালের দাম ছিল ১৭ টাকা কেজি। এ সময় সরু চাল বিক্রি হয়েছে ২২ টাকা দরে। জরুরি সরকারের আমলে (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) এক কেজি মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ২৮ টাকা দরে। সরু চালের দাম ছিল তখন ৩৫ টাকা।

জানা গেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল থেকেই চালের বাজার চড়া। এখনও সেই চড়া দামেই ক্রেতারা চাল কিনে খাচ্ছেন। সারাদেশে মোটা চালের যে চাহিদা আছে তার বড় একটা অংশই যোগান দেয় নাটোরের চলনবিল এলাকার চালকল মালিকরা। চালকল মলিকরা বলেন ‘পথে-ঘাটে বেপরোয়া চাঁদাবাজি হচ্ছে। মিলে ধান কেনার সময় বস্তাপ্রতি ১০ টাকা, মিল থেকে চাল ট্রাকে ওঠাতে বস্তাপ্রতি ৫ টাকা এবং ট্রাক নিয়ে চাল রাজধানীতে পাঠানোর পথে আরও ১০ টাকা দিতে হয় প্রতি বস্তায়।

’ তিনি বলেন, তার মিল পৌর এলাকার ধানের বাজার থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে হলেও তাকে ধান-চাল বেচাকেনায় পৌর ট্যাক্সও দিতে হয়। এছাড়া এখন মৌসুমী ফল বহন করতেই বেশিরভাগ ট্রাক মালিক ব্যস্ত। ট্রাক ভাড়া পাওয়া যায় না। পেলেও ট্রাকের ভাড়া গুনতে হচ্ছে বেশি। এসব কারণে চালের দাম বাড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি।

একই অভিযোগ করেন নাটোরের চাল ব্যবসায়ী আলী হোসেন। তিনি জানান, বিভিন্ন সমিতির নামে চালকল মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় শুরু হয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে শ্রমিক লীগের কিছু নেতা এসব চাঁদা আদায় করছেন বলে জানান তিনি।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।