আমি এবং আরণ্যক ছাইরংয়া বধ্যভূমিতে দাড়িয়ে দেখছি শেষ সূর্যাস্ত
(প্রসঙ্গ হুমায়ুন আজাদ------)
আজ মধ্যরাতে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেল
একশো একষট্রিটি জানালা,
আজ মধ্যরাতে ঘাসের শরীর থেকে
বাষ্পায়িত হল রাতের শিঁশির;
আজ মধ্যরাতে কয়েক ফোঁটা রক্তের মিছিলে
জারি করা হল চিরস্থায়ী কারফিউ ।
শুধূ রাস্তার এককোনে পড়ে থাকা কয়েক টুকরো
থ্যাতলানো মাংসপিন্ডে শব্দভূক পরজীবী
টিপ্ টিপ্ করে জানান দিল আনুবিক্ষনীক অসতিত্ব;
সতেজ শরীর থেকে খুবলে নেওয়া রক্ত-মাংসের
আকন্ঠ আস্বাদন শেষে রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ারগুলো
সেঁধিয়ে গেল অন্ধকারে।
স্ট্রিটল্যাম্পের ভৌতিক আলোর বামপাশে পড়ে রইল
একটি অসামাজিক উপন্যাসের কয়েকটি আহত শব্দ-
' বাক-স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব' ।
বিশেষনের পর বিশেষনের পসরা সাজিয়ে
শহুরে ফেরিওয়ালার দল, আলো ফুটলেই বেরিয়ে পড়বে
সস্তা-মুল্যে সত্যের বেচাকেনায়।
তারপর মিছিল- মিটিং-সভা-সেমিনার......
অবশেষে উচ্চ আদালতের রায়ে,
ধার্মিকতার সিলমোহরে দাফন করা হবে
অসামাজিক উপন্যাসটির প্রতিটি পাতা।
আজ মধ্যরাতে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেল
একশো একষট্রিটি জানালা,
আজ মধ্যরাতে সত্যের রাজপথে কারফিউ জারি করে
নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হল
নরমাংস ভক্ষনের উপর থেকে।
আজ এই মুহূর্ত থেকে আমার আর আমাদের পৌঢ় জমিনে
পুনঃরায় রোপিত হল দুষিত রক্তের বীজ ;
শহরে-বন্দরে, গ্রামে-গন্জে
বিপত্নিক আলখাল্লাবাহীর অর্ধনমিত পতাকা,
মাথা ছাড়িয়ে উঠে গেল কয়েকশো ফুট উপরে।
পরাজিত শ্লোকে প্রতিনিয়ত ভেঙ্গে পড়ছে
নগরের বিশূষ্ক দেয়াল,
সুচতুর ঘুনপোকগুলো মসতিষ্কের চার দেয়াল ভেঙ্গে
যোগ দিয়েছে বিকৃতির মিছিলে,
সুবিধাভোগী নপুংসকেরা লালসার লেপ-কাথা
গায়ে জড়িয়ে একে একে বন্ধ করে দিয়েছে
চেতনার সবকটি কপাট,
বন্ধ জানালার ফাঁক গলিয়ে রক্তের গন্ধ নয় বরং
মেহেদী, আতরের গন্ধে ভরে উঠছে
আমাদের জারজ ফুসফুস।
আজ মধ্যরাতে বন্ধ হয়ে গেল
একশো একষট্রিটি জানালা,
স্ট্রিটল্যাম্পের ভৌতিক আলোর বামপাশে পড়ে রইল,
অসামাজিক উপন্যসটির সবচেয়ে দরকারী শব্দ ' বাক-স্বাধীনতা'।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।