কুড়িগ্রামের মেয়ে শি্উলি ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা শেষে শুক্রবার তিনি সাভারের ভাড়া বাসায় ফিরে যান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমি ওই সময় অষ্টমতলায় একটি সেলাই মেশিনে বসে সেলাই করছিলাম। মূহুর্তের মধ্যে মেশিন নিয়ে আমি নিচে পড়ে যাই। ”
ভবন কাঁপার সময় আমি আমার সেলাই মেশিনটি ধরেছিলাম। শুধু এটুকু মনে ছিল।
পরে নিজেকে হাসপাতালে বিছনায় দেখতে পাই।
সাভার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাষ্টার মো. খলিলুর রহমান বলেন, শিউলিকে ২৪ এপ্রিল ঘটনার দিন বিকাল ৫টার ধসের পড়া ভবনের ভিতর একটি অংশ থেকে উদ্ধার করা হয়। তবে কোনস্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল তা স্বরণ নেই।
শিউলি অচেতন হয়ে মেশিনের ওপর পড়েছিল। তার মাথায় আঘাত ছিল।
প্রথমে শিউলিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অজ্ঞাত হিসেবে ভর্তি করা হয়। পরে তার ভাই মো. শাহিন এসে শিউলিকে সনাক্ত করেন।
অাবার কাজে ফিরে যাবেন কিনা জানতে চাইলে চমকিয়ে উঠে শিউলি বলেন, না না ভাই-গার্মেন্টে আর কাজ করবো না।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “ওই দিনের বিভিষীকাময় স্মৃতি আমি ভুলতে পারবোনা। মেশিনের সামনে বসতেই মনে হবে আমি মেশিন নিয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছি।
”
“এ চাকরি করতে পারবোনা কোনদিন ভাই, না সুচকভাবে হাত নাড়িয়ে বলে উঠেন শিউলি। অন্য কোন ভাবে জীবন গড়ার চেষ্টা করবো, তবুও না। ”
ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ২০৪ নম্বর ওয়ার্ডের এক নম্বর বিছানার রোগী আমেনা বেগমও জানান। এমন ভয়ংকর স্মৃতি নিয়ে আবার গার্মেন্টের কাজে ফিরা সম্ভব নয়।
বিজিএমইএর সহকারী যুগ্ম সচিব আব্দুর রাজ্জাক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ভবন ধসের পর ২ হাজার ৪ শত ৩৭ জন উদ্ধার করা হলেও প্রায় ১৪শত জন শ্রমিককে বিভিন্ন হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়।
বর্তমানে প্রায় ৪শ’ শ্রমিক বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরা সুস্থ হওয়ার পর বিজিএমইএ তাদেরকে বিভিন্ন গার্মেন্টে চাকরির ব্যবস্থা করবে।
পঙ্গু হাসপাতালে মোট ১শ’ ১৩জনকে ভর্তি কর হয়েছিল তবে বর্তমানে ৭০ জন ভর্তি রয়েছেন সেই হাসপাতালে।
ঢাকা জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ২৪ এপ্রিল সাভারের ভবন ধসের ঘটনায় ১১২৭ জন মারা যায়। এদের মধ্যে ৮শ’৩৬ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে আর অসনাক্ত ২শ’৮৬ জনের লাশ ডিএনএ নমুনা রেখে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে জুরাইন করবস্থানে দাফন করা হয়েছে। বাকি পাঁচটি লাশের একাধিক দাবিদার থাকায় ঢাকা ও মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
২০০৫ সালে সাভারের বাইপাইলে স্পেকট্রাম গার্মেন্ট ধসের ঘটনায় নিহত হন ৮৫ জন। আর পরের বছর একই ধরনের ঘটনায় তেজগাঁর ফিনিক্স গার্মেন্টে নিহত হন ২১ জন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।