জীবন ,সে তো পদ্ম পাতায় শিশির বিন্দু"
আওয়ামি লীগ ক্ষমতায় আসলেই ২/৪টা পত্রিকা বাতিল হবে । যুগে যুগে এটা হয়ে আসছে। এটা তাদের পুরোনো নিয়ম। দেশ স্বাধীন হবার অব্যবহিত পরে 'হক কথা ,গণকন্ঠসহ আরও কয়েকটি পত্রিকা বাতিল, বাকশাল কায়েম পরবর্তি সময়ে ৪টা পত্রিকা বাদে সবগুলি পত্রিকা নিষিদ্বকরন, ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসীন হয়েই খোঁড়া অজুহাতে ২৮ কোটি টাকা ভুর্তুকী দিয়ে সরকারি পত্রিকা দৈনিক বাংলা,সাপ্তাহিক বিচিত্রা, সিনে-ম্যাগাজিন 'আনন্দ বিচিত্রা' এবং গতকালের "আমার দেশ"। মোটকথা ,পত্রিকা নিষিদ্বকরনটা তাদের একটা খাসলত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যাইহোক, এই মূহুর্তে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের একটা পুরোনো কথা মনে পড়ছে। একবার কোন এক প্রসঙ্গক্রমে উনি বলেছিলেন-"বাংলাদেশের সর্বমোট পত্রিকার সংখ্যা ১৬০০। এই যে ভোরের কাগজ,দুপুরের কাগজ,মধ্যরাতের কাগজ,সবগুলোর অনুমোদন কিন্তু আমরাই দিয়েছি। অথচ ওরাই কিনা কোন কিছু যাচাই না করে নানান কিচ্ছা-কাহিনীসহ আমাদের বিরুদ্বে যাচ্ছেতাই লিখে যাচ্ছে দিনের পর দিন"।
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, কোন এক অজ্ঞাত কারনে বাংলাদেশের বেশীর ভাগ পত্রিকাগুলোই আওয়ামি কন্ঠস্বর।
যদিও হওয়ার কথা ছিল উল্টোটা। কেননা বাংলাদেশের ইতিহাসে সংবাদ মাধ্যমের কন্ঠনালী চেপে ধরে পত্রিকা বাতিলের কালো অধ্যায়টি শুরু করেছিলেন স্বয়ং শেখ মুজিব সাহেবই। অথচ সেটা মনে না রেখে সব পত্রিকাওয়ালারাই তার দলের স্তুতিবাক্য গাইতে সবসময়ই তৎপর। যাইহোক,সময়ের পরিক্রমায় জিয়াউর রহমান সাহেব সেসমস্ত পত্রিকার নিষেধাজ্ঞা শুধু তুলেই নেন নাই, তাদের জন্য তৈরী করে দিয়েছিলেন ঊম্মুক্ত মঞ্চ "প্রেসক্লাব"। আর অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে সেকালের হাতেগোনা কয়েকটি পত্রিকা আজ কয়েক শ'তে উন্নীত।
এসব পত্রিকার বেশীর ভাগই ভিন্নমতালম্বী। এটা থাকবেই। যেহেতু বহু মত বহু পথ। তাই ভিন্ন মতালম্বী হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু একটা জায়গায় সবাই একই প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে।
সংবাদ প্রকাশনা শিল্পে সবাই একে অপরের সুখ দুঃখের সাথী। তবে আশ্চর্য্য হলাম- "আমার দেশ" প্রকাশনা বন্ধে কোন একটা পত্রিকায় সরকারের এহেন ফ্যাসিবাদি আচরনের নিন্দা জ্ঞাপন করতে না দেখে। আপাতঃ দ্ৃষ্টিতে মনে হয় সব পত্রিকাওয়ালারা বোধ হয় খুব খুশী।
এবার মূল প্রসঙ্গে আসি। ধীরে ধীরে সরকারের বয়স প্রায় দু'বছরের কাছাকাছি হয়ে গেল।
যা খুব একটা বেশী নয় আবার খুব একটা কমও নয়। তবে একটা সরকারের সার্বিক দিক পর্যালোচনা করার জন্য এটা যথেষ্ট সময়। এ দিক বিচার করলে চোখে পড়ে ,তাদের ভাল'র চেয়ে মন্দের দিকটাই বেশী হাইলাইটেড। যেমনঃ চালু হওয়ার সাথে সাথেই যমুনা টিভির প্রস্হান, চ্যানেল ওয়ান বন্ধ, কাজী জেসীনের পয়েন্ট অব্ অর্ডার বন্ধ, দিগন্তের টক শো বন্ধ,ফেস বুক বন্ধ। আরও কত কি !তবে নির্বাচনের আগে তারা সবাইকে শুনিয়েছিলেন ডিজিটাল বাগাড়ম্বর আর নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সবাই দেখছে তাদের ফ্যাসিবাদী নাৎসী রুপ।
যে কোন নির্বাচনে প্রত্যেক দলেরই সরকার গঠনের জন্য দুই আড়াই কোটি তরুন ভোটার একটা ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। তো, সেসব তরুন ভোটাররা ভোট দিয়ে যাদের ক্ষমতায় এনেছিল, তাদের পৃষ্টদেশে লাত্থি মেরে সরকার বন্ধ করে দিলো তরুনদের সময় কাটানোর প্রিয় স্হান 'ফেসবুক'। যা কিনা বহির্বিশ্বে সরকারকে খানিকটা "তালেবানী" ইমেজের পরিচিতিও এনে দিল। আর সাম্প্রতিক নিষিদ্ব "আমার দেশের কথা বলাই বাহুল্য।
যাই হোক, আওয়ামি লিগের বাজে দিক আলোচনা করে বিএনপিকে Glorify করা আমার কোন উদ্দেশ্য নয়।
সে চেষ্টা করবোও না। কারন হাত উচালে সবার বগল থেকেই দুর্গন্ধ বের হয়। বিএনপি ও এর বাইরে নয়। তবে অন্য হাজারটা দোষ থাকলেও বিএনপি কখনো সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে সেটা কেউ বলতে পারবেনা। তবে হ্যা ! সায়মন ড্রিংক এর টেরিস্টরিয়াল একুশে টিভিতে বিএনপি ক্ষমতার ছড়ি ঘুরিয়েছিল।
কেন ঘুরিয়েছিল তার ও অনেকগুলো কিন্তু আছে।
টেণ্ডারের ১১নং এ থাকা একুশে, সামনের দশটি টেণ্ডারকে ডিঙ্গিয়ে কিভাবে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া সাহেবকে বশ করে এবং সরকারের জন্য চ্যানেলের দেনা ২৬০ কোটি টাকা মওকুফ করে একমাত্র বেসরকারী চ্যানেল হিসেবে বিটিভির কারিগরী দিকটা বাগিয়ে নিয়েছিল, সেটা অনেকেরই মনে আছে। এ বিষয়ে অন্য সময় না হয় আলোচনা করা যাবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।