আমি কোনকিছুই সু-ভাবে প্রকাশ করতে পারি না। হরতাল নিয়ে আমি বেজায় খুশি। একে তো ছাত্রজীবনে হরতাল মানে হলো বাপের হোটেলে পেঠ পুরে খেয়ে সারাদিন শুয়ে বসে থাকা। আর, সময় পেলেই সেই বাপের টাকা দিয়েই মোবাইলের মাধ্যমে হাল জগতের ফ্যাশান "ফেসবুকে" ঢুকে বার বার নিজের ফেস অন্যদের দেখানোর জন্য মিনিটে মিনিটে নিজের স্ট্যাটাস আপডেট মারা।
কাল সেই হরতাল।
ভাবতেই মনটা ফুরফুরে হাওয়ায় ভরে উঠছে। যদিও এই হরতালে কিছুটা চিন্তিত মেডিকেলের যম "প্রফ পরীক্ষা" সামনে দাড়িয়ে সাদরে আমন্ত্রন জানাচ্ছে তাই।
আবার, অনেক দিন পর হরতালের সুবাসে সবার মধ্যে চনমনে ভাব। যারা ৩দিনের ছুটি পূর্ণরূপে উপভোগ করতে চান তারা ইতোমধ্যে ঢাকার মায়া ত্যাগ করেছেন। আর, যারা ঢাকায় আছেন, তারা একগাদা মুভি, সিরিয়াল যোগার করেছেন দিনটাকে উপভোগ করার জন্য।
আসুন, জানি নোবেল প্রাইজ দেওয়ার কাহিনী।
আজ আমি কলেজ থেকে বের হয়ে নিয়মমতো ফার্মগেট আসলাম। গন্তব্য বাড্ডা। ফার্মগেট থেকে বাড্ডা পর্যন্ত আসে দুইটা বাস---- "তরঙ্গ" ও সরকার পরিচালিত "বি,আর, টি, সি"।
আমি গিয়েই দেখি "তরঙ্গ" বাস দাড়িয়ে, যা বাড্ডা আসে।
কিন্তু, এই সরকারের ভাড়া কমেনোর নানা রঙ্গ-তামাশা আমরা জনগন টিভিতে দেখলেও, বাস মালিকরা মনে হয় টিভি দেখননা। তাই, "তরঙ্গ"-এর উচ্চ মূল্যের প্রতিবাদে দাড়িয়ে রইলাম ভাব নিয়ে। ওদের কাউন্টারের সামনে এমন ভাব নিয়ে দাড়ালাম, "আমি তোমাদের থোড়াই কেয়ার করি। আমার প্রিয় "বি,আর, টি, সি" আছে না। "
তরঙ্গের বাসটা আমি যাওয়ার পর আরো ৫মিনিট ধরে লোক খুজল।
তারপর চলে গেলো নিজের গন্তব্যে।
এরপর ধীরে ধীরে সম্রাট শাহাজাহানের (নাকি বাবরের??? ) মতো করে এগিয়ে গেলাম আমার অতি প্রিয় বি,আর, টি, সি কাউন্টারের দিকে। কাছাকাছি যেতেই কেমন সন্দেহ হতে লাগলো। কাউন্টারের টেবিলের উপর চেয়ার উল্টা করে রাখা এবং দুটো জিনিষই সুন্দর করে শিকল দিয়ে বাঁধা। কাছাকাছি গিয়ে তালা পরীক্ষা করে বুঝলাম যা দেখছি তা সত্যি।
তালা বেশ পোক্ত করে লাগানো যাতে কেউ ওটা চুরি করে পালাতে না পারে।
তারপর আবার আসিলাম ফিরে সেই চিরচেনা তরঙ্গ কাউন্টারে। কাউন্টারে বসে থাকা লোকটি জানালো, হরতালে ভাঙচুরের ভয়ে বি,আর, টি, সি সার্ভিস নাকি আজ বন্ধ।
আমি তখন হাসব নাকি কাঁদব ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল, "হে ধরিত্রী তুমি দ্বিধাবিভক্ত হও, আমি উহার মধ্যে হান্দাইয়া যায়।
"
সরকারী বাস হরতালের ভয়ে বন্ধ। তার মানে তো সরকার নিজেই হরতালকে ভয় পাচ্ছে, নাকি??????
তো তারপর এই গাধাকে সেই তরঙ্গেই বেশী ভাড়ায় ঠিকিট কাটিয়া আসতে হলো। বাসে আসতে আসতে মনে হলো, এই আওয়ামি লীগ সরকারকে আমার পক্ষ থেকে NO-BEL prize দিলে কেমন হয়?????
এমনিতেও দিন দিন সরকারের বেল সব জায়গাতেই হারাচ্ছে দিন দিন। তারপর হরতালের আগের দিন থেকেই হরতালের সমর্থনে সরকারী বাস বন্ধ। তাইলে তাদের আর বেল থাকলো কোথায়??????
তাই, BAL (বাংলাদেশ আওয়ামি লীগ) -কে আমার পক্ষ থেকে NO-BEL prize দিয়ে দিলাম।
আপনারা কি দিবেন সমর্থন এতে?????? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।