নোয়াখালীর উপকূলের মেঘনায় নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে ধরা হচ্ছে চিংড়ি পোনা। অতি ক্ষুদ্র ফাঁসের এ জালের ফাঁদ দ্বারা মাছের ডিমসহ মৎস্য প্রজাতির অন্য কোন পোনাই রক্ষা পাচ্ছেনা। দিনের পর দিন ধরে এ নিষিদ্ধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে জেলেরা। যেন দেখেও দেখছেনা প্রশাসন।
মৎস্য বিভাগের তথ্যমতে কারেন্ট জাল দিয়ে ১টি বাগদা পোনা সংগ্রহ করতে এদের জালে নষ্ট হয় আরো অন্তত ৯২ প্রজাতির মাছের পোনা ও জুপ্লাঙ্কটন।
কারেন্ট জাল দিয়ে বাগদা পোনা নিধনের ফলে মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র নামে পরিচিত নোয়াখালীর উপকূূলীয় মেঘনার মৎস্য সম্পদ ও এর জীব বৈচিত্র হুমকির মধ্যে পড়েছে।
মৎস্য অফিসের সূত্র মতে, জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত বাগদা ও চিংড়ি পোনা চাড়ার উপযুক্ত সময়। এ সুযোগেই এক শ্রেনীর মৎস্য অফিসের অসাধু কর্মকর্তা ও কোষ্ট গার্ডের যোগসাজসে এরা পোনা আহরণ করছে। প্রতিবছর এ অঞ্চল থেকে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে পোনা সংগ্রহ করতে থাকে এ অঞ্চলের শিক্ষা বঞ্চিত নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। তাছাড়া দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া ছাড়াও জেলার অন্যান্য উপজেলা থেকে আসা জেলেরা এখানে অস্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করে।
এদের হাত থেকে মৎস্য সম্পদকে রক্ষা করার জন্য সরকারের নির্ধেষনা থাকলেও স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। জেলার উপজেলা হাতিয়া উপকূলীয় নিঝুমদ্বীপ, জাহাজমারা, মোকতাইরার খাল, সোনাদিয়া, তমরুদ্দি, বাংলা বাজার, রহমত বাজার, বয়ারচর, ক্যারিংচর, নলেরচর, ঢালচর, জাগলারচর, মনপুরা ও সুবর্ণচর উপজেলাসহ হাতিয়া উপকূল সংলগ্ন মেঘনার মোহনায় হাজার হাজার নারী, শিশুসহ জেলেরা কারেন্ট জাল দিয়ে বাগদা পোনা আহরণ করছে। এর ফলে এ অঞ্চলের মৎস্য সম্পদ ও মেঘনার জীব বৈচিত্র এখন রয়েছে বয়াবহ হুমকির মধ্যে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপকূলীয় মেঘনায় বাগদা, গলদা, চাকা, চাপদা, কাঠালিয়া, হরিণ, বাঘাতার ভিনুয়া, ঘুসা, মটকা, বসনাই, ও ছটকাসহ নানান প্রজাতির চিংড়ি পোনা রয়েছে। তাছাড়া ইলিশ প্রজননের কেন্দ্রও এটি।
তাই ইলিশের পাশা পাশি পাঙ্গাস, টেংরা, মাগুর, দাতিনা, মেদ, ভেটকি, কাইন, ভাঙ্গল, চেনা, পোয়া, চিনা, ঢেলা ছাড়াও রয়েছে এখানে কয়েক প্রজাতির মাছ। এ অঞ্চল থেকে জেলেদেরা নির্বিচারে বাগদা পোনা সংগ্রহের পর তার উচ্ছিষ্টগুলো উপরে পেলে দেয়ায় সে গুলো মরে যায়। এর ফলে দেশের সমূদ্র থেকে বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ি মাছসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছগুলো ধীরে ধীরে বিলীণ হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ মৎস্য ঘবেষণা ইন্সটিটিউট এর এক তথ্য সূত্রে জানা যায়, একটি বাগদা পোনা ধরতে গিয়ে জেলেরা নষ্ট করে অন্তত ৪৬টি প্রজাতির চিংড়ি প্রজাতি, ৩৫টি জুপ্লাঙ্কটন প্রজাতির ও ১১টি সাদা মাছ প্রজাতির পোনা। এর ফলে একদিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য অন্যদিকে ধ্বংশ হচ্ছে দেশের জাতিয় সম্পদ মৎস্য।
কারেন্ট জাল নিষিদ্ধ হওয়া সত্বেও নোয়াখালীর এ উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় মৎস্য অফিস ও কোষ্টগার্ড এর কিছু অসাধূ কর্মকর্তার কারণে জেলেরা এমন নিষিদ্ধ কাজ নির্ধিদায় করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জাতিয় মৎস্য সম্পদা রক্ষা করতে হলে অসাধূ জেলেদের ধমন করে তাদের আইন গত ব্যবস্থা নেয়া একান্ত জরুরী বলে মনে করেণ স্থানীয়রা।
http://www.youtube.com/watch?v=FuiTMBG6kVc
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।