মনের জানালায় দাঁড়িয়ে ভাবনাগুলোর মিলিয়ে যাওয়া দেখি। গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘ হয়ে, ঐ দূর দিগন্ত পানে...
সিঁড়ির মধ্যিখানে দেখলাম তোমায়
প্রদীপ হাতে দাঁড়ানো।
আমি নীচে স্তব্ধ, মুগ্ধ, বিহবলিত
আবছা আলোতে তোমাকে দেখাচ্ছে,
ঠিক যেন দেবীর মতোন।
কিছু একটা বলবো ভাবছি
কিন্তু কোথায় সে কথা!
নড়তে চড়তেও যেন ভুলে গিয়েছি।
মনের গহীনে বেজে উঠলো কি কোন সুর?
নাকি আমি ভুল শুনলাম!
হে সুন্দরের প্রতিমা,
তুমি কি কেবলি দাঁড়িয়েই থাকবে...
ট্রেনে বসে কল্পনায় বুঁদ হয়ে ভাবছিলাম এর পরের লাইনগুলো কি হতে পারে।
কি হতে পারে কাল সারাটিদিন ভেবেও উদ্ধার করতে পারিনি। লাভের মধ্যে এমন এক ছন্নছাড়া অনুভূতিতে ঝেঁকে ধরেছিল যাকে না পারছিলাম 'বৃষ্টি' করে ঝরাতে না শব্দে বন্দী করতে। অবগুন্ঠন খোলো হে আমার মানসী প্রতিমা, বাণী দাও -
"এবার অবগুন্ঠন খোলো।
গহন মেঘমায়ায় বিজন বন ছায়ায়
তোমার আলসে অবলুন্ঠন সারা হল। ।
শিউলিসুরভি রাতে বিকশিত জ্যোৎস্নাতে
মৃদু মর্মরগানে তব মর্মের বাণী বোলো। ।
বিষাদ-অশ্রুজলে মিলুক শরমহাসি–
মালতীবিতানতলে বাজুক বঁধুর বাঁশি।
শিশিরসিক্ত বায়ে বিজড়িত আলোছায়ে
বিরহ-মিলনে-গাঁথা নব প্রণয়দোলায় দোলো"
হঠাৎ চুড়ির মিষ্টি রিনিঝিনি শব্দে আমার ধ্যান ভেঙ্গে গেল। ধীরে ধীরে চোখ মেলে থাকাতেই দেখি প্রতিমা আমার সামনেই দাঁড়িয়ে।
এ কি হল! কোথায় আমি! আবার চোখ বুজে ফেললাম। এবং আবার চুরির রিনিঝিনি শব্দ। চোখ মেলে আবার তাকাতেই বুঝলাম এ আমার কল্পনা নয়। আমি এখনো ট্রেনেই বসে আছি। আমার কল্পনা অবয়ব নিয়ে যেন আমার সামনেই দাঁড়িয়ে।
দরজার পাশেই হাতল ধরে দাড়িয়েছিল সে। ট্রেনের ঝাকুঁনিতে তার হাতের চুড়িই এতক্ষণ রিনিঝিনি শব্দে আমার কানে সুধা ঢালছিল।
কানে তখন রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজছিল। একটু পরে সুমন আমার মনের কথাগুলোই যেন গেয়ে উঠলো।
"আমি আপনমনের মাধুরী মিশায়ে, তোমারে করেছি রচনা।
তুমি আমারি তুমি আমারি মম অসীম গগণ বিহারী। "
পরের স্টেশনেই প্রতিমা নেমে গেল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।