আমি আমার সম্পের্ক জানানোর মত কিছু আছে মনে করিনা।
সেই অনেক দিন আগের কথা জীবন জীবিকার তাগিদে সবেমাত্র প্রবাস জীবন শুরু । খুব বেশী হলে মাস ছয়েক হবে মধ্যপ্রাচ্যের সংযুত্ত আরব আমিরাতের রাস আল খাইমা শহরে এসেছি মাসখানেক বেকার থাকার পর একটি অটো পার্টসের দোকানে Accountent হিসাবে চাকুরী পেলাম । দৈনিক প্রায় ১২ ঘন্টা Duty. বেতন কত? সর্বেমোঠ ৫০০ দেরহাম। থাকার ফ্রী ব্যবস্থা কিন্তু ছিল।
চাকুরী হিসাব রক্ষকের হলেও কাজ করতে হতো মুলত Salseman এর তাই আরবী শিখা আমার জন্য একটু সহজই হলো। কারন প্রায় সারাদিনই আরবী গ্রাহকের কাছেই বেছাকেনা করতে হত। স্থানীয় এক আরবী কাষ্টমার প্রায় প্রতিদিনই আমাদের প্রতিষ্টানে আসতো এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আসতো আলোচনার জন্য এবং এক পর্যায়ে তর্কে রূপ নিত।
একদিন বিষয় নিয়ে আসলো Road Accident. সড়ক দূর্ঘটনার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে আমাদের দেশের সড়ক দূর্ঘটনার কথা আসতেই সে কমেন্ট করে বসলো তোমাদের দেশের দূর্ঘটনার কথা বলার দরকার কি সেখানেতো এমনিতেই প্রতিদিন মানুষ খুন হয়। দূর্ঘটনা হতে হয়না।
যেখানে মানুষের জীবনের বিন্দুমাত্র মূল্যনেই সেখানে দূর্ঘটনার আলোচনা অবান্তর। সে বললো তোমাদের দেশের মানুষের চেয়ে আমাদের দেশের গাধার মুল্য বেশী। কি ভাবে ? দেখ একসময় আমরা ছিলাম বেদুইন আমাদের কাছে শিক্ষাদীক্ষা ছিলনা সভ্যতা আমাদের নিকঠ হতে যোজনযোজন দুরে অবস্হান করছিল আমরা মাছ পোড়ে খেতাম ইত্যাদি অনেক কথার পর বললো আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র বাহন ছিল গাধা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে উট ও ছিল বৈকি। গাধা আমাদের কাছে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পশু হিসিবে পরিগনিত হত, তাজা গাধার বেশ কদর ছিল এককথায় আমরা গাধার মাধ্যেমই পরিবহনের সমস্ত কাজ সম্পন্ন করতাম।
আজ কালের ক্রমবিবর্তনে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা,সভ্যতা উন্নতির সূউচ্চ শিখরে অবস্থান করছে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় পৃথিবীর উন্নত দেশগুলির ভিতরে আমাদের দেশও একটি। এখন গাধার প্রয়োজন নেই,নির্বোধ এই জীব আমাদের সমাজে এখন বেমানান। যে গাধা গুলির এতদিন আমরা সেবা নিলাম,যাদের শ্রম ব্যতিত আমাদের একদিনও চলতনা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশার্থে আইন করা হল যে, গাধাকে হত্যা করা দন্ডনীয় অপরাধের একটি। তারা এ জনপদে অবাধে বিচরণ করবে।
যদি গাড়ি দুর্ঘটনায় কোন গাধা মারা যায় সে ক্ষেত্রে ঘটনার হোতাকে ৫০০ দেরহাম জরিমানা করা হবে। যে কারনে এদেশে গাধার কোন প্রয়োজন না থাকা সত্বেও তারা এখনও পর্যন্ত নিরাপদ। আরবী লোকালয় গুলিতে আজো তারা দলবেঁধে বিচরন করতে দেখাযায়। কিন্তু তোমাদের দেশে প্রতিদিন অগনিত মানুষ গুপ্ত হত্যা ছাড়াও গাড়ি দুর্ঘটনায় কত মানুষ জীবন দিচ্ছে কোন জরিমানা আছে?থাকলেও আইনে আছে প্রয়োগে নাই। দুর্ঘটনায় কেউ মারা গেলে তথাকথিত উত্তেজিত জনতা নামক একদল প্রাণী আরো অনেক গাড়ি ভাঙ্গচূড় করলো আরো কিছু মানুষকে আহত করলো।
কিন্তু যিনি মারা গেলেন তার পরিবার কি পেলো? উল্লেখ্য এদেশে রোড এক্সিডেন্টে নিহত হলে নিহতের পরিবার ১,৫০,০০০ দেরহাম পায়। ক্রমশঃ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।