মানুষ আমি আমার কেন পাখির মত মন....
বাড়িভাড়া হচ্ছে মানুষের মৌলিক অধিকার বাসস্থানের সাথে সম্পর্কিত একটি বিষয়। এটি অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ন অংশ। দেশের প্রায় ৯৯% মানুষ বাড়িভাড়া দিয়ে, নিয়ে বা না দিয়ে এর সাথে সম্পর্কিত (ভাসমান মানুষ ছাড়া)। বর্তমানে বাড়িভাড়া এত বেড়ে গেছে যে সাধারন মানুষের জন্য বাড়িভাড়া এখন একটি আতংকের নাম। কয়েক দন আগে পত্রিকায় দেখলাম বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রনে আইন করা হবে।
কিন্তু আসলে কি আইন করে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব???
আমারতো মনে হয় সম্ভব নয়। কারন, এটি একটি অর্থনৈতিক বিষয় আর আইন করে অর্তনৈতিক বিষয় নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব নয়। এক্ষত্রে একটি উদাহরন দেইঃ গত তত্ববাধায়ক সরকারের আমলে একবার তেলের দাম, আটার দাম ইত্যাদি খুব বেড়ে গেলে সরকার বড় বড় ব্যবসায়ীদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকী দিয়ে ও গ্রেফতার করে চেস্টা করেছিল দাম নিয়ন্ত্রনে রাখতে। এর ফলাফল কি হয়েছিল? ফলাফল হয়েছিল যে ব্যবসায়ীরা আসলে ব্যবসা করতে বাধ্য নয়। বড় বড় ব্যবসায়ীরা এতদিন ব্যবসা করে ইতিমধ্যেই অনেক অর্থের মালিক হয়েছে।
এখন কয়েক বছর ব্যবসা না করলেও তাদের কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু আমরা সাধারন মানুষেরা কিন্তু তেল বা আটা খাবার অভ্যাস ত্যাগ করতে পারবো না। ফলে কি হলো, ব্যবসায়ীরা হুমকীর মুখে ব্যবসা স্থগিত করে দিল, এতে করে তেল বা আটার দাম আরো বেড়ে গেল।
ঠিক তেমনি, এখন হয়ত বাড়িভাড়া এলাকা ভেদে স্কয়ার ফুট প্রতি ১০-১৫ টাকা করে আছে। তাতে করে ১০০০ স্কয়ারফুটের একটি বাড়ির ভাড়া হয়ত ১৫০০০ টাকা।
কিন্তু যদি সরকার স্কয়ার ফুট প্রতি ৫ টাকা ভাড়া নির্ধারন করে দেয় তখন কি হবে?
এখন যারা ১৫০০০ টাকা দিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন তারা চেস্টা করেন ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে ১০০০ স্কয়ার ফুটের একটি এপার্টমেন্ট কিনতে। হয়ত নিজের জমানো ১০ লক্ষ টাকার সাথে ব্যাংক থেকে ৩০ লক্ষ টাকা লোন নিয়ে অনেকে কিনেও ফেলেন। ভাবেন যে ব্যাংকের ইন্টারেস্ট দিতে হলেও প্রতি মাসে বাড়িভাড়াতো আর দিতে হবে না। আর একসময় ব্যাংকের টাকা সব দেয়া হলে নিজে এপার্টমেন্টটির মালিক হয়ে যাবেন। কিন্তু সরকার কর্তৃক যদি ৫ টাকা করে ১০০০ স্কয়ারফিটের জন্য ৫০০০ টাকা ভাড়া নির্ধারন করে দেয়া হয় তখন কি কেউ ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে এপার্টমেন্ট কিনবে? কখনো কিনবে না।
সে চিন্তা করবে যে ৪০ লক্ষ টাকা ব্যাংকে রাখলে মাসে প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাভ পাওয়া যাবে যা দিয়ে বাড়িভাড়া দিয়েও ৩৫ হাজার টাকা থেকে যাবে। ঠিক একইভাবে যাদের বাড়ি আছে তারা ৫ তলা বাড়ি দিয়ে হয়ত ৫০হাজার টাকা ভাড়া পাবেন। তখন বাড়িয়ালা ভাববে যে তার বাড়িটি ২ কোটি টাকা দিয়ে বেচে দিয়ে সেই টাকা ব্যাংকে রেখে নিশ্চিন্তে মাসে ২ লক্ষ টাকা মুনাফা পাওয়া যাবে। অতএব বাড়িয়ালারাও বাড়ি বেচে দিয়ে নিজে ভাড়া থাকা শুরু করবে বা একটি এপার্টমেন্ট রেখে বাকীগুলো বেচে দিবে। আর নতুন কেউ বাড়ি বা এপার্টমেন্ট কিনবে না।
ফলে নতুন কোন এপার্টমেন্ট বা বাড়ি নির্মান হবে না।
এর ফলাফল কি হবে? ঢাকা শহর থেকে কি মানুষ কমে যাবে? কখনোই না। ঢাকায় মানুষ দিন দিন বাড়বেই। কিন্তু নতুন বাড়ি নির্মান না হলে তারা থাকবে কোথায়? ফলাফল হবে হচ্ছেঃ যতই আইন থাক তখন ভাড়াটিয়ারা এসে বাড়িয়ালাকে বলবে যে দরকার হলে সরকারী রেটের ৪গুন ৬গুন ভাড়া দেব তাও বাড়িটা আমার কাছে ভাড়া দিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।