মানুষ আমি আমার কেন পাখির মত মন....
গত ২২ এপ্রিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এফবিসিসিআই-এর কর্তাব্যক্তিরা অভিমত প্রকাশ করেছেন যে, ঢাকা শহরের ৭৫% বাড়িঅলা দফায় দফায় বাড়িভাড়া বাড়িয়ে সরকারের কর ফাঁকি দিচ্ছেন। যুক্তি হিসেবে তারা আরো খোলাসা করেছেন যে, বাড়িঅলারা বছরে দুই থেকে তিনবার বাড়িভাড়া বাড়ান এবং বর্তমানে নাকি প্রতি বর্গফুট ৮০ থেকে ১০০ টাকায় ভাড়া দিচ্ছেন তারা।
এফবিসিসিআই-র কর্মকর্তাদের কেউ বোধহয় বাড়ি ভাড়া দেন না। দিলে এমন উদ্ভট উক্তি করতে পারতেন না। বড় বাড়ির কথা বাদ দিয়ে ছোট বাড়িঅলারা বেকুব হতে পারে, কিন্তু ভাড়াটিয়ারা কি এতোই বেকুব যে চার মাস পর পর বাড়িঅলা নোটিস দিল ভাড়া বাড়াতে হবে এবং তারা সুর সুর করে তাতে রাজি হয়ে গেলেন।
বাসভাড়া আর বাড়িভাড়া এক কথা নয়। বাসঅলারা বিভিন্ন অজুহাতে বাসের ভাড়া ইচ্ছেমত বাড়াতে চেষ্টা করে, যা বাড়িঅলাদের পড়্গে সম্ভব নয়। বর্তমানে সারাদেশের ট্রান্সপোর্ট সেক্টরের মালিক-শ্রমিকরা অত্যনত্ম সংঘবদ্ধ। মালিক থেকে ড্রাইভার ও কন্ডাক্টর-এর গায়ে হাত তো দূরের কথা, কড়া কথাও বলা যায় না। আমিও বাসে চড়ি।
দেখি বাড়তি ভাড়া নিয়ে কোনো কোনো যাত্রী মৃদু আপত্তি তোলেন সত্য, কিন্তু সে আপত্তিতে কোনো কাজ হয় না। অনেকটা ¯^vMZ বক্তব্যের মতো। কিন্তু বাড়িঅলা এবং ভাড়াটিয়ারা (যারা ইনকাম ট্যাক্সের আওতায় আসতে পারেন) উভয়েই মোটামুটি শিড়্গিত, সচেতন ও নিজেদের মধ্যে সংঘবদ্ধ। দুই-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া ইচ্ছে করলেই কোনো ভাড়াটিয়াকে বলা যাবে না যে, “ভাড়া বাড়ালাম, ইচ্ছে হলে থাকুন নয়, বাড়ি ছাড় ুন” এ কথা সব বাড়িঅলার পড়্গে বলা সহজ নয়। তারাও সমাজ এবং যুক্তির বাইরে নন।
বাসত্মবতা খুবই কঠিন। দ্বিতীয়ত, ঢাকা শহরে দুই-একটি এলাকায় বাড়িভাড়া বেশি হতে পারে এবং সেগুলো সাধারণত বড় ব্যবসায়ী, বিদেশি কূটনীতিক বা এনজিওরা ভাড়া করে থাকে। তবু ১৫০০ বা ৩০০০ বর্গফুটের বাড়ি মাসে ১,৫০,০০০ বা ৩,০০,০০০ টাকায় ভাড়া দেয়ার মতো এলাকা দেখি না। আমার প্রবাসী মেয়ের ওয়ারিতে একটি ১৫০০ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্ট আছে। সে প্রতি বর্গফুট ১৩ টাকা হিসাবে নেট ভাড়া পায় ২৪,০০০/-টাকা।
আমার মানিকনগরে ৬০০ বর্গফুটের ১২টি ফ্ল্যাটের একটি বাড়ি আছে। ৬ টাকা বর্গফুট হিসেবে প্রতি ফ্ল্যাটের ভাড়া পাই ৪০০০/- করে। এর থেকে প্রতি মাসে ব্যাংক ঋণ বাবদ ৩০,০০০/- টাকা, গ্যাস বাবদ ৫,৪০০/- টাকা, পানি, হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ যায় ৪,০০০/- টাকা। আমার জন্য থাকলো ৪০০০/- টাকা। অবশ্য আমি নিজে এক ফ্ল্যাটে থাকি।
সুতরাং, এফবিসিসিআই-র কর্মকর্তাদের অভিযোগ সম্পূর্ণ বাসত্মবতাবহির্ভূত।
দেলওয়ার হোসাইন, ৪৩/৬ মানিকনগর, ঢাকা ১২০৩।
অরিজিনাল সোর্স Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।