অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া!
এই শনিবারে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে দুইটি নেগেটিভ সংখ্যাকে গুণ করলে কেন পজিটিভ সংখ্যা হয়।
প্রচলিতভাবে এটি মাইনাসে-মাইনাসে প্লাস নামে পরিচিত।
প্রত্যেক সংখ্যার একটি যোগাত্মক বিপরীত (Additive Inverse) সংখ্যা আছে। মানে হলো প্রত্যেক সংখ্যার সঙ্গে এমন একটি সংখ্যা যোগ করা যায় যার ফলে যোগফল হবে শূন্য।
যেমন 5 এর সঙ্গে -5 যোগ করলে হবে শূণ্য। নেগেটিভ সংখ্যার এটিই কারণ।
একটু খেয়াল করলে বোঝা যাবে যে, একটি বিপরীত সংখ্যার বিপরীত সংখ্যা নেওয়া হলে মূল সংখ্যাটিই কিন্তু পাওয়া যাবে। যেমন -5 এর বিপরীত সংখ্যা কতো? 5।
কাজে এটাকে আমরা লিখতে পারি -(-5)=5!!! বুদ্ধি করে বলা যায়, নেগেটিভ সাইন দুইবার নিলে পজিটিভ সাইন পাওয়া যাবে।
এখন আমরা গুণের বেলায় এইটা খাটাতে পারি কিনা দেখি।
গুণফলের উৎপাদকগুলোর যে কোন একটির সাইন বদলালে গুণফলের চিহ্নও বদলাবে।
মানে হলো
(-কিছু একটা)(অন্যকিছু) হবে (কিছু একটা)(অন্যকিছু)-এর বিপরীত। নইলে দুই এর যোগে শুন্য পাওয়া যাবে না।
উদাহরণ হিসাবে বলা যায় (-4)×(-5) হবে (4) ×(-5) এর বিপরীত! কারণ যদি তাদের যোগ করা হয় আর বিতরণ নীতি (distributive law) প্রয়োগ করা হয় তাহলে পাওয়া যাবে-
(-4) ×(-5) + (4) × (-5)
=(-4+4) × (-5)
=0×(-5)
=0
কাজে আমরা বলতে পারি (-4) ×(-5) হলো (4) × (-5) এর বিপরীত।
(4) × (-5) কিন্তু আসলে (4) × (5) এর বিপরীত।
তার মানে, (-4) ×(-5) হলো (4) ×(5) এর বিপরীতের বিপরীত!!! অথবা 20 এর বিপরীত (-20) এর বিপরীত (20)!!
তার মানে হলো দুইটি নেগেটিভ সংখ্যাকে গুণ করে যে একটি পজিটিভ সংখ্যা পাওয়া যায় তার একটি ধনাত্মক সংখ্যার বিপরীতের বিপরীত হলো ঐ সংখ্যা নিজে!!!
আর একটা বুদ্ধি আছে।
প্রথমে আমরা জানি, 1 কী। এক হলো একক (1 এবং-1)। মানে হলো কোন সংখ্যাকে 1 দ্বারা গুণ করলে সেটি থাকে।
আর -1 দিয়ে গুণ করলে বিপরীত(নেগেটিভ) সংখ্যাটা পাওয়া যায়। মানে
-3= (-1) × (3)
তাহলে
(-2) × (-2)
= (-1) × (2) × (-1) × (2)
= (-1) × (-1) × (2) × (2)
=(-1) × (-1) × (4)
কাজে আমাদের বোঝা দরকার (-1) × (-1)=?
এবং আমরা মেনে নিয়েছি (-1) × (-1)= +1 !!!!!!!!
এটা যদি আমরা মেনে না নেই তাহলে নানা রকম উল্টাপাল্টা হতে পারে-
যেমন, ধরি (-1) × (-1)= -1
এখন বিতরণ নিয়ম প্রয়োগ করি
(-1) ×(1+ -1) = (-1) × (1)+(-1) × (-1)
বা, (-1) × (0) = -1 +(-1)
বা 0 = -2 !!!!! হাহাহা
কাজে (-1) × (-1)= -1 হতে পারে না। কাজে (-1) × (-1)= 1 হবে।
সুবিন বা আমার জন্য কালকের ক্লাশটা সোজা ছিল না! কারণ, ক্লাশ ফোরের একটি শিশুকে ডিস্ট্রিবিউটেড রুল পড়ানো যায় না।
কাজে আমরা ক্লাশে সংখ্যা রেখার দৌড়, মেজাজি হেড স্যার, আয়না - এসবের আমদানী করেছি।
আমি ক্লাশের মধ্যে দৌড়ের ভান করেছি!
সংখ্যারেখা দিয়েও সুবিন বুঝিয়েছে। যেমন সংখ্যা রেখায় 2 কে 3 দিয়ে গুণ করার অর্থ কী?
গুণের অর্থ হলো একজন লোকের সংখ্যা রেখা বরাবর লাফ দেওয়া। কতোবার লাফ দেবে আর এক লাফে কতোধাপ যাবে। 2 কে 3 দিয়ে গুণ মানে হলো 2 বার লাফ এবং প্রতিবারে 3 ধাপ যাওয়া! এখানে দুইটি বিষয়। প্রথমটি লাফের সংখ্যা আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে লাফের ধাপ।
এখানে সংখ্যা রেখার কোন দিকে যেতে হবে আর কোথা থেকে শুরু করতে হবে?
গুণের বেলায় শুরু করতে হবে শুণ্য থেকে। যদি পজিটিভ বার লাফ দিতে হয় তাহলে প্রথমে সংখ্যা রেখার দিকে এসে ডানদিকে (যোগবোধক সংখ্যার দিকে) তাকাতে হবে। আর যদি নেগেটিভ বার লাফ দিতে হয় তাহলে দাড়াতে হবে বামদিকে মুখ করে, মানে নেগেটিভ দিকে তাকিয়ে। এরপর প্রতিবারে লাফ দেওয়া।
এখানেও দুইটি ব্যাপার।
যদি প্রতিবারে লাফের ধাপের সংখ্যা পজিটিভ হয় তাহলে সামনের দিকে লাফ দিতে হবে। আর যদি প্রতিবারে লাফের ধাপের সংখ্যা নেগেটিভ হয় তাহলে লাফটা দিতে হবে পেছনের দিকে!!!
তাহলে -2 কে -3 দিয়ে গুণ করলে কী করতে হবে। প্রথমে শূণ্যে এসে দাঁড়াতে হবে নেগেটিভ সংখ্যার দিকে তাকিয়ে। তারপর পেছন দিকে লাফ দিতে হবে দুই বার, প্রতিবারে 3 ধাপ করে। তাহলে সে কোথায় থামবে??
+6।
এটাও আমরা চেষ্টা করেছি!!!
ইনভার্স অফ এ ইনভার্স অফ এ নাম্বার ইজ দি নাম্বার ইটসেল্ফ।
এটি ওদের মাথার মধ্যে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ধারণা, পরের ক্লাশ গুলোতে ওদের এই ধারণাগুলো আরো পোক্ত হবে।
কালকে ওরা বুঝে ফেলেছে
-25 কে 3 দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল 8 আর ভাগশেষ -1 হবে না!
আগামী শুক্রবার এদের প্রথম ফানি পরীক্ষা। দেখা যাক ওরা কতোটা শিখতে পারছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।