তবে একলা চলরে.......
0বাংলাদেশকে দেখভাল প্রয়োজন0
0বাংলাদেশে রাজনৈতিক ইচ্ছার বিপুল বিনিয়োগ চাই0
আবু সোহায়েল : ভারত তার প্রতিবেশীদের ব্যাপারে হতাশ, আশার আলো দেখছে শুধু শেখ হাসিনার বাংলাদেশে। আণবিক শক্তির অধিকারী পাকিস্তানের দিক থেকে কোনো আশা নেই। নেপালকে হাতের মুঠোয় রাখা যাচ্ছে না। এলটিটিই'র বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ী শ্রীলংকা এখন বেয়াড়া। গত নির্বাচনে শেখ হাসিনা বিজয় লাভের ফলে বাংলাদেশই এখন তাদের জন্য একমাত্র আশার আলো।
এই আশার আলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য বাংলাদেশকে ভালভাবে দেখভাল করা দরকার। এ ধরনের অভিমত ব্যক্ত করেছেন ভারতের ব্রিগেডিয়ার (অবঃ) এস.কে চ্যাটার্জি তার গত ২৬ মার্চ তারিখের এক প্রবন্ধে। "Why India needs to nurture Bangladesh" শীর্ষক প্রবন্ধে ব্রিগেডিয়ার (অবঃ) এস.কে চ্যাটার্জি বলেছেন, এই আশার আলোর একটা কাল পর্যন্ত স্থিতির জন্য প্রয়োজন হবে রাজনৈতিক ইচ্ছার বিপুল বিনিয়োগ (Huge investments in terms of sustained political will need to remain evident for a sustained period of time)।
ব্রিগেডিয়ার বাবু ‘বিপুল রাজনৈতিক বিনিয়োগ' বলতে কি বুঝিয়েছেন তার ব্যাখ্যা করেননি তার লেখায়। কিন্তু লেখার পরবর্তী অংশে বাংলাদেশের জন্য যেসব রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার বিষয় উল্লেখ করেছেন তাতে বুঝা যায় ইসলামী শক্তির দমনই তাদের টার্গেট।
এজন্য যে রাজনৈতিক ইচ্ছা ও সামর্থ্যের প্রয়োজন তার যোগান দেয়াকেই তিনি ‘‘রাজনৈতিক ইচ্ছার বিপুল বিনিয়োগ’’ বলে উল্লেখ করেছেন।
লক্ষণীয়, শেখ হাসিনার সরকার এবং আওয়ামী লীগ ব্রিগেডিয়ার চ্যাটার্জিদের এই রাজনৈতিক কৌশলেরই অনুসরণ করছে। ব্রিগেডিয়ার বাবুরা সবসময় বাংলাদেশের ব্যাপারে more catholic than Pope। অর্থাৎ বাংলাদেশের রাজনীতির ব্যাপারে আওয়ামী সরকারের কি বলণীয় কি করণীয় তা ব্রিগেডিয়ার বাবুরাই বেশি জানেন এবং তাদের এই রাজনৈতিক ইচ্ছাই Export হয় বাংলাদেশে। অথবা বলা যায় আওয়ামী সরকার ব্রিগেডিয়ার বাবুদের রাজনৈতিক ইচ্ছাই নিজেদের জন্য Import করেন বাংলাদেশে।
ব্রিগেডিয়ার চ্যাটার্জির উল্লেখিত প্রবন্ধে এরও জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত মিলেছে। প্রবন্ধের এক জায়গায় ব্রিগেডিয়ার চ্যাটার্জি বাবু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছেন, হাসিনা ‘জিহাদ'কে দমন করার যে উদ্যোগ শুরু করেছেন তার সাথে কৃষি অর্থনীতির উন্নয়নও যোগ করতে হবে (Hasina's attempts at combating Jihad will have to be accompanied by development in a primarily agrarian economy)। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘জিহাদ' দমন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন কিনা আমরা জানি না। কারণ ‘জিহাদ' দমন করার উদ্যোগ নিলে তাকে পবিত্র কুরআনের বিরুদ্ধেই লড়াই শুরু করতে হবে। কিন্তু ব্রিগেডিয়ার চ্যাটার্জি বাবুরা ‘জিহাদ' অর্থাৎ কুরআন, অন্য কথায় ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছেন।
ব্রিগেডিয়ার চ্যাটার্জি বাবুরা ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের এ লড়াই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে দিয়েই লড়াতে চান। এটাই তাদের রাজনৈতিক অভিসন্ধি। এটাকে ব্রিগেডিয়ার চ্যাটার্জিরা তাদের ‘‘রাজনৈতিক ইচ্ছার বিনিয়োগ’’ বলে অভিহিত করেছেন, যে ‘‘রাজনৈতিক বিনিয়োগ’’ দ্বারা তারা শেখ হাসিনার শাসনকে একটা কাল পর্যন্ত ধরে রাখতে চান। ব্রিগেডিয়ার চ্যাটার্জি বাবুরা ইসলাম ও জাতীয়তাবাদীদের ঐক্য প্রতিরোধ করতে চান । তাদের আশা এইভাবেই ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্য নস্যাৎ করে ও ইসলামী শক্তিকে রাজনৈতিক ময়দান থেকে সরিয়ে শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার মাধ্যমে কালক্রমে বাংলাদেশকে সিকিম বানানো অথবা বাংলাদেশকে বশংবদ করে রাখার রাজনৈতিক অভিসন্ধি পূরণ করতে পারবে।
লালা রাজপথ রায় পৌনে একশ' বছর আগে চিত্তরঞ্জন দাসকে লেখা এক চিঠিতে বলেছিলেন, মুসলমানদেরকে যদি বশংবদ করে রাখতে হয় তাহলে তাদেরকে কুরআন ছাড়াতে হবে এবং তিনি এটাকে অসম্ভব বলেছিলেন। পৌনে একশ বছর পর ব্রিগেডিয়ার চ্যাটার্জি বাবুরা শেখ হাসিনার সরকারকে বাহন সাজিয়ে অত্যন্ত কৌশলে এই অসম্ভবকে সম্ভব করার কাজে হাত দিয়েছেন বলে পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন।
আবু সোহায়েল-এর লেখা থেকে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।