আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সোনালী দিনের স্মৃতিচারন

আনাড়ী রন্ধন শিল্পীর ব্লগ B-)। ব্লগের বাজে-মানহীন লেখাগুলোর মাস্টার পিস দেখতে চাইলে এই ব্লগারের পোষ্ট গুলো পড়ে দেখতে পারেন। কথা দিচ্ছি, নিরাশ হবেন না। B-)

সোনালী দিনগুলোর স্মৃতিচারন করতে যেয়ে দেখি আরো কিছু বাকী রয়ে গেছে, যা উল্লেখ করলে ভাল হত। তাই আজকে আবার বসলাম।

দেখি কতটুকু পারি। কানামাছি: ছোট্টবেলায় ঢাকা থেকেছে কিন্তু কানামাছি ভোঁ ভোঁ খেলেনাই এমন মানুষ কমই পাওয়া যাবে। তো খেলাটার সময় বেশ চোরামী করা হত। আমরা চার জন খেলতাম। জুঁই-বেলীরা দুই বোন, আমি আর তাসনু আপু।

চোর হলে চোখ বাঁধার সময় কাপড়টা ধরে ঢিলা করে রাখতআম যাতে নিচের দিকে একটু ফাঁকা থাকে। তাহলে পরে কে কোথায় পা দেখে তার পেছনে দৌড়ানো যাবে। একাজে বেলী ছিল সবচেয়ে ওস্তাদ। ওর চোখ বাঁধারয় "ওরে বাবা ওরে মা...চোখ গেল" বলে এমন ভাবে চিৎকার করত যে ঢিলা করে বাঁধতে হত। আর তখন উপর নিচ দিয়ে দেখে দেখে সবার পেচনে দৌড়াত ফুলটোকা: এই খেলাটাতে মানুষ যত বেশী হয় তত মজা।

তাই এটা গ্রামেই বেশী খেলেছি। দুই দলে দু'জন রাজা থাকত। তারাই নাম ঠিক করে দিতো। পরে এক দলের রাজা অন্য দলের কারো চোখ ধরে তার কপালে টোকা দেওয়ার জন্যে আয়রে আমার.... বলে ডাকতো আর সে এসে টোকা দিয়ে জায়গায় যেয়ে বসে পড়তো। রাজা চোখ খোলার আগে তার দলের সবার উদ্দেশ্যে বলত " ক খ গ ঘ, মাথা নিচু করো।

রাজা বলে দিলে খেলবো...না" প্রতি দলের রাজার একটা কুটচাল ছিল যে কে টোকা দিলে কিরকম আচরন করবে। সেই আচরন দেখেই বলে দিতো। সঠিক ভাবে বলে দিতে পারলে একটা লাফ দিয়ে ঘর থেকে সামনে এগিয়ে যাবে। এভাবে যারা আগে অপর পক্ষের ঘরে যেতে পারবে তারাই জয়ী। রুটি থাপড়ানো: খেলাটার কথা পা.কা. ভাইয়া মনে করিয়ে দিয়েছে।

এটা গ্রামে খেলেছি। আমাদের গ্রামে এটাকো বলত রুটি চাপটা বড় চার কোন একটা ঘরে এক জন দাড়িয়ে থাকতো আর চার পাশ থেকে সবাই ঘরে এক পা দিয়ে চোর কে যে যেদিক থেকে পারত জোড়ে একটা থাপ্পর মেরে আসত। থাপ্পর মারা সাথে সাথেই সে যদি কাউকে উল্টা থাপ্পর মারতে পারে তাহলে যাকে মারবে সে চোর হবে। যে চোর হত তআর খবর হয়ে যেতো। স্টপ গাম্বুলা: এটাও পা.কা. ভাইয়া মনে করিয়ে দিয়েছে।

এক সাথে অনেক জনের সাথে পাতাো থাকত। যাদের সাথে পাতানো তাদের পিঠে যদি হাত না থাকতো তাহলে ঘামা বলে জোরসে এক রাম কিল বসিয়ে দেওয়া হত। এরকম কিলের হাত থেকে বাঁচার জন্যে আবার ঘন্টা/দিন নির্দিষ্ট করা থাকত। নির্দিষ্ট সময় পরে আবার কিল। স্টপ: আরেক আজব খেলা হল এটা।

এটা আমার পাতানো থাকত আমার দুই চাচাত ভাই-বোন আর এক ফুপুর সাথে। স্টপ বললেই যেভাবে ছিল সেভাবে দাড়িয়ে থাকতে বাধ্য। আর নড়লে সাড়ে সাতটা কিল(জোড়ে জোড়ে ছয়টা আর আস্তে একটা কিল=সাড়ে সাতটা) বিটলামী করে মাঝে মধ্যে দেখতাম আমি যদি আগে স্টপ দিতাম তাহলে সহজে ঘন্ট দিতাম না, দাড় করিয়ে রাখতাম আর ঢাকায় চলে আসায় সময় ঘন্টা দিতআম হলে আবার যেদিন বাড়ীতে যাবো সেদিন থেকে শুরু হবে কুমীর কুমীর: এটা এক্কেবারে কমন এটা খেলা। সেই পিচ্চিবেলা থেকে অনেক বড় হয়েও খেলেছি। কুমীর(চোর) একটু দূরে গেলেই ঘর থেকে নেমে "কুমীর তোর গাঙ্গে নেমেছি....." চ=দাঁত বের করে নাচা নাচি করতাম।

আর সে দৌড়ে আসতো ধরার জন্যে। এই খেলার শিকল সিস্টেমটা বেশী মজার ছিল। কুমীরের সামনে দিয়ে একেক জনের হাত ধরে ধরে এক ঘর থেকে আরেক ঘরে চলে যেতাম। তবে একটু এদিক সেদিক হলেই ছুয়ে আবার কুমীর বানিয়ে দিতো। খেলাটার কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যে কি নাম দিব কে ধন্যবাদ লুডু: এইটা খেলেনাই আমার মনে হয় এমন মানুষ নাই।

সে....ই একদম পিচ্চিবেলা থেকে খেলা শুরু করেছি এটা। আব্বা বসে বসে শিখাতেন। আমার গুটি যদি কেউ কাটতো তাহলে তার খবর ছিল। কেউ আমার গুটি কাটলে লুডু উল্টে ফেলে এক্কেবরে একাকার করে দিতাম তবে আমি সবার গুটি কাটতে পারতাম । পরের দিকে আব্বা ছড়া কেউ আমার সাথে খেলতে চাইতো না আমার জীবনের প্রথম পাশ দিয়েই সারা জীবন খেলে গিয়েছি।

এমন হয়েছিল যে কারো চয় না উঠলেও আমার ঠিকই উঠত। বছর দুই-তিন আগে আম্মা লুডুটা শোভন কে দিয়ে দিয়েছে। আর গুটি গুলোর কি হয়েছে আল্লায় ই জানেন। ছোয়া-ছুঁয়ি, বরফ পানি, রাম-শাম-যদু-মধু, চোর-ডাকাত-পুলিশ-বাবু গোল্লা ছুট, দাড়িয়া বান্ধা ওপেন্টি বায়োস্কোপ, নাইন টেন টোস্কোপ(পাকা ভাই আর কি নাম দিব মনে করিয়ে দিয়েছে) আরো কত্ত খেলা যে খেলেছি মনেও নাই.... পোষ্ট টা অনেক বড় হয়ে গেল। এজন্য আন্তরিক ভাবে ক্ষমা প্রার্থী।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।