আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চুয়াডাঙ্গায় বধ্যভূমির সন্ধান : ৪৫ মাথার খুলি ও হাড়গোড় উদ্ধার : রক্ষীবাহিনীর নৃশংসতা



চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদাহের মৃত নবগঙ্গা নদী থেকে মাটি কাটতে গিয়ে বধ্যভূমির সন্ধান মিলেছে। ওই বধ্যভূমি থেকে মাটি কাটা শ্রমিকদের কোদালের সঙ্গে উঠে এসেছে ৪৫টি মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড়। একসঙ্গে এত মানুষের খুলি ও হাড়গোড় উদ্ধারের ঘটনায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ এটাকে ’৭১ সালের পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা দাবি করলেও অনেকের মতে ’৭৫-পরবর্তী রক্ষীবাহিনীর নৃশংসতার চিহ্ন এটি। জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদাহ হাটখোলা বাজারের ওপর রয়েছে বর্তমানে কলিম উদ্দিনের আড়ত ঘর।

আর এর পেছনেই রয়েছে এক সময়ের শ্রোতধারা নদী বর্তমানে মৃত খাল নবগঙ্গা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একটি নতুন চাতাল দেয়ার জন্য কলিম উদ্দিন নবগঙ্গা থেকে মাটি কাটার জন্য কয়েকজন শ্রমিক কাজে নেন। গত সোমবার শ্রমিকরা নবগঙ্গার উত্তর দিক থেকে মাটি খুড়তে গেলে তাদের কোদালের সঙ্গে উঠে আসে মানুষের মাথার খুলি। এরপর শ্রমিকরা দক্ষিণ দিক থেকে আবার মাটি কাটতে শুরু করলে সেখানেও প্রতিটি কোদালের কোপের সঙ্গেই উঠে আসতে থাকে মানুষের হাড়গোড় ও মাথার খুলি। ভয়ে শ্রমিকরা মাটি কাটা বন্ধ করে দেয়।

গতকাল সকাল ৯টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উদ্ধারকৃত প্রায় ৩৫/৩৭টি মাথার খুলি ও হাড়গোড় ওই স্থানে এলোমেলো পড়ে আছে। এ প্রতিবেদক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের উপস্থিতিতে এক শ্রমিক কোদাল দিয়ে মাটিতে কয়েকটি কোপ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে বের হয় আরও দুটি মাথার খুলি। উদ্ধার হওয়া বধ্যভূমির পাশের সোনিয়া স’মিলের মালিক আবদুল মান্নান জানান, গত ৫/৬ দিনে এই মরা খাল থেকে ৪০/৪৫টি মানুষের মাথার খুলিসহ শরীরের নানা অংশের হাড়গোড় উদ্ধার করতে দেখেছি। তিনি আরও জানান, এর মধ্যে বেশ কয়েকটি কঙ্কালও ছিল। এসব কঙ্কালের গলার সঙ্গে মাটির কলসি রশি দিয়ে বাঁধা থাকায় ধারণা করা হচ্ছে জীবিত অবস্থাই তাদের ওই নদীতে ডুবিয়ে মারা হয়েছে।

স্থানীয় শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল রাজ্জাক বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, এখন দেখে গেলাম। বিষয়টি একেবারে অবাক করার মতো। নবগঙ্গার এ খালে এত মানুষের মাথা এলো কোথা থেকে? কবে ঘটলো এ নৃশংস ঘটনা? বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে কয়েকদিন ধরেই শত শত নারী-পুরুষ এ হাড়গোড় দেখতে ভিড় জমাচ্ছে ওই স্থানে। নবগঙ্গা খালের মধ্যে এত মানুষের মাথার খুলি এলো কোথা থেকে বিষয়টি জানতে ডিঙ্গেদাহ এলাকার একাধিক প্রবীণ ব্যক্তির সঙ্গে কথা বললেও কেউ-ই এ ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তবে শাহাবুদ্দিন নামে এক শিক্ষক জানান, ’৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হয়তো পাক হানাদার বাহিনী মানুষ খুন করে এখানে ফেলে যেতে পারে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি এ ব্যাপারে বলেছেন, ’৭৫-পরবর্তী রক্ষীবাহিনীর সময় ছাগলার বিলে ও নবগঙ্গা নদীতে বহু মানুষকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে দিতে দেখা যেত। এগুলো সে সময়কার লাশই হতে পারে। তবে এত মানুষের মাথার খুলি উদ্ধারের পরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওগুলো সংরক্ষণের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাশক ভোলানাথ দে’র সঙ্গে গতকাল সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আমি ঢাকা থেকে চুয়াডাঙ্গায় ফিরছি। চুয়াডাঙ্গায় ফেরার পর স্থানটি নিজে পরিদর্শন করব।

http://www.bangladesh.net/amardesh.html

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.