কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে ছাত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর আচরণের অভিযোগে গতকাল বুধবার এলাকাবাসী পিটিয়েছে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে। গুরুতর আহত প্রধান শিক্ষক তাইতুল ইসলাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন অভিভাবকরা।
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুকের গ্রাম গুজাদিয়া ইউনিয়নের বৈরাটিয়াপাড়ায় তাঁর পরিবারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত শামসুন্নাহার ওসমান গণি শিক্ষানিকেতনে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তাইতুল ইসলাম।
বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করায় গতকাল এলাকাবাসীর পিটুনির শিকার হন তিনি। মাথা ফেটে যাওয়ায় তাঁকে করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস বর্জন করে প্রধান শিক্ষকের অপসারণ ও বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে।
বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, তাইতুল ইসলাম গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে পিয়ন নার্গিস বেগমকে দিয়ে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। ওই ছাত্রী কক্ষে ঢোকার পর প্রধান শিক্ষক ভেতর থেকে দরজা-জানালা লাগিয়ে দেন।
প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ছাত্রীটি বেরিয়ে আসে। অন্য শিক্ষার্থীরা ঘটনাটি এলাকার লোকজনকে জানালে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
গতকাল বুধবার সকালে লোকজন বিদ্যালয়ের দুই পিয়ন আবদুল হাই ও নার্গিস বেগমকে ডেকে জেরা করলে তাঁরা প্রধান শিক্ষকের আপত্তিকর আচরণের কথা স্বীকার করেন। এর কিছু সময় পর বিদ্যালয়ে আসেন তাইতুল ইসলাম।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, তাঁরা প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জানালে তিনি বিদ্যালয়ের পেছনের দেয়াল টপকিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
এলাকাবাসী পিছু নিয়ে পাশের গ্রাম হাইধনখালী এলাকায় তাঁকে ধরে ফেলে। এরপর লাঠিসোঁটা দিয়ে তাইতুল ইসলামকে বেদম মারধর করার একপর্যায়ে তাঁর মাথা ফেটে যায়। বৈরাটিয়াপাড়া গ্রামের নূরুল ইসলাম ও সাইফুল ইসলাম রমজান জানান, তাইতুল ইসলাম এর আগে আরো ছয়টি বিদ্যালয়ে চাকরি করেছেন। আপত্তিকর আচরণের জন্য বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে তিনি নিন্দিত ছিলেন। এ কারণে তাঁকে বরখাস্তও হতে হয়।
একবার এলাকাবাসীর চাপের মুখে তিনি এক ছাত্রীকে বিয়ে করতে বাধ্য হন।
করিমগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন তাইতুল ইসলাম অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, বৈরাটিয়াপাড়া গ্রামের রনো মিয়া আমার কাছে বিভিন্ন সময় অন্যায় সুবিধা চেয়েছেন। আমি তা দিতে রাজি না হওয়ায় ষড়যন্ত্র করে হামলার ঘটনা ঘটানো হয়। ছাত্রীদের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, 'নানা প্রয়োজনে ছাত্রছাত্রীদের ডাকা হয়।
এতে অন্যায়ের কিছু নেই। '
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।