আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাবিতে ছাত্রলীগের দুইগ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত ১০, ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন

লাজুক প্রকৃতির অসভ্য বালিকা

এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুইগ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষে আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের দুই গ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষে কমপে ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। রক্তয়ী সংঘর্ষ এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। এ সংঘর্ষকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থী শিক ড. আব্দুল্লাহেল কাফীর বিরুদ্ধে উথাপিত যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা বলে ক্যাম্পাসের বিশেষজ্ঞ মহল মন্তব্য করেছেন।

প্রত্যদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সিনেট নির্বাচনে আওয়ামীপন্থী প্যানেল জয়লাভ করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের শামীম (৩২ অর্থনীতি বিভাগ) গ্র“প ওই শিকদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে যাবার সময় হল গেটে সামি (৩২তম ব্যাচ, নৃবিজ্ঞান বিভাগ) গ্র“পের নাজমুলের সাথে সাকিবের কথাকাটি হয়। পরে ফুল দিয়ে এসে সাকিবের নেতৃত্বে ৫/৭ জুনিয়র ছাত্রলীগকর্মী হলের গেষ্ট রুমে নাজমুলকে ডেকে নিয়ে রড, লাঠি হকিস্টিক দিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। এ খবর সামি গ্র“পের জুনিয়রকর্মীরা জানতে পেরে রড, লাঠি, হকিস্টিক নিয়ে সজ্জিত হয়ে শামীম গ্র“পের ওপর হামলা চালায়। এতে শামীম, শরীফ, জিতু, সাকিব মারাত্মকভাবে আহত হয়।

এ সময় দুইগ্র“পের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় সামি, সাদি ও ফয়সাল আহত হয়। অপরদিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্রলীগকর্মীরা শামীমের প নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা প্রিতমের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হল আক্রমণ করতে গেলে প্রক্টরিয়াল বডির বাঁধার মুখে তারা পিছু হটে। আহতদের মধ্যে সামি, শামীম, শরীফ, জিতু, সাকিবকে গুরুতর আহত অবস্থায় এনাম মেডিকেলে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয়। এদের মধ্যে শরীফ, জিতু ও সাকিবের অবস্থা অশংকাজনক বলে বলে জানা গেছে।

রাত ২টার দিকে শামীম গ্র“পের নিয়ন্ত্রণাধীন ২১৭ নম্বর ক থেকে হল প্রশাসনের সহায়তায় ২টি রামদা, অর্ধশতাধিক লোহার পাইপ ও রড উদ্ধার করা হয়। ঘটনার ব্যাপারে আহত ছাত্রলীগনেতা এস এম শামীম বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত সাপে প্রশাসনের কাছে তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন। অন্যপরে ছাত্রলীগ নেতা সামিউল বাসির সামী বলেন, নব্য ছাত্রলীগ নেতারা আমাদের ওপর হামলা চালালে প্রতিরোধ করেছি মাত্র। অপরদিকে কামাল উদ্দিন হলের নির্ঝর আলম সাম্য ওই রাতে ঢাকা থেকে ফেরার পথে ক্যাস্পাসের কবির স্মরণী মোড়ে আসলে কে বা কারা তাকে ল্য করে গুলি ছুঁড়ে।

এ সময় কামাল উদ্দিন হলের জুনিয়র ছাত্রলীগকর্মীরা সালাম বরকত হলের নেতাকর্মীদের দোষারোপ করে রড, লাঠি, হকিস্টিক নিয়ে সজ্জিত হয়ে ওই হল আক্রমণ করতে গেলে পুলিশ তাদের গতিরোধ করে। এ সময় কামাল উদ্দিন হল ও সালাম বরকত হলের ছাত্রলীগকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান করতে থাকে এবং উভয় হল একে অপরকে কটুক্তি করে মিছিল দিতে থাকে। তবে গুলির ব্যাপারে সালাম বরকত হলের ছাত্রলীগ নেতা নেয়ামুল পারভেজ অস্বীকার করে বলেন, “নিজেরাই গুলি ছুঁড়ে আমাদের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার জন্য ভিন্ন একটি কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে বলে ওই নেতা অভিযোগ করেন”। উল্লেখ্য, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সালাম বরকত হল ও কামাল উদ্দিন হলের ছাত্রলীগের মধ্যে ব্যাপক রক্তয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এতে দুইজন গুলিবিদ্ধসহ ৩০ জন আহত এবং উভয় পরে মধ্যে কমপে পাচ রাউন্ড গুলিবিনিময় হয়। এদিকে গত ১৫ তারিখ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থী শিকের বিরুদ্ধে একই বিভাগের এক নারী শিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে যৌন নিপীড়নের দ্বিতীয়বারের মতো লিখিত অভিযোগ করেন। ওই শিকের যৌন নিপীড়নের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য একের পর এক ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ মহল মন্তব্য করেছেন। বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ছাত্রলীগের উভয় গ্র“পের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

যে কোনো মূহর্তে আবারো রক্তয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। রক্তয়ী সংঘর্ষ এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.