আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষিতে চাই বায়োটেকনোলজির প্রয়োগ

একজন জামাতের দালাল আমাকে খুর ক্রোধ ওপুলিশের পোশাক পরে নকল পুলিশের গাড়ি চুরি চলছেইকষ্টের সাথে বলল,ভাই এই জালিম সরকার নাস্তিক সরকার হেফাজতের অনেক কর্মীকে হত্যা করেছে

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষিতে চাই বায়োটেকনোলজির প্রয়োগ শেখ আনোয়ার বাংলাদেশে বর্তমান খাদ্য চাহিদাকে মেটাতে কৃষিতে বায়োটেকনোলজির গুরুত্ব অপরিসীম। এখন আমরা ধান, পাট, গমসহ নানাবিধ ফসলের উন্নত বা উফশী জাত উদ্ভাবনে মিউটেশন ব্রিডিং বা সংকরায়ন প্রক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল। সংকরায়ন পদ্ধতিতে কাংখিত এক বা একাধিক গুণাবলী নির্ভর কয়েকটি জিনকে কোন একটি জাতের মধ্যে আনা হয়। প্রকৃতপে সংকরায়নের সময় পরবর্তী প্রজন্মে অসংখ্য কাংখিত বা অনাকাংখিত জিনের স্থানান্তর ঘটে থাকে। এর ফলে দেখা যায় কোন ফসলের ফলন বৃদ্ধি পেলেও কোন বিশেষ রোগ প্রতিরোধ মতা কমে যায়।

অথবা রোগ প্রতিরোধ মতা বৃদ্ধি পেলেও ফলন কমে যায়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট এ পর্যন্ত ৩৭টি উফশী ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। এ সমস্ত ধানের জাত উদ্ভাবনে কোন কোন সময় ক্রসিং বা সংকরায়ন পদ্ধতির অবলম্বন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট এর আণবিক জীব বিজ্ঞানী ডঃ জন বেনেট এর ভাষায় ট্রান্সজেনিক ধান গাছ সাধারণ ধান গাছের মতই তবে পার্থক্য যা হলো বাইরের কোন উৎস থেকে আকাংখিত সেট বা একাধিক জিন এর মধ্যে সংযোজন করা হয়। আবার ব্যাকটেরিয়ার সুডোমোনাস প্রজাতির জিন বরফ বা তুষার প্রতিরোধী।

এজন্যে সেই জিনকে ষ্ট্রবেরি, আপেল এবং আলুগাছে প্রতিস্থাপন করার ফলেই এই সমস্ত ফসল বরফ বা তুষারপাতে তেমন কোন তি করে না। আবার বিটক্সিন জীন তামাক ও টমেটো গাছে প্রতিস্থাপনের ফলে সৃষ্ট গাছ টমেটোর ইর্নওয়াম দ্বারা আক্রান্ত হয় না। এছাড়া অড়হর এবং ছোলায় স্থাপনের পর সৃষ্ট গাছ ফল ছিদ্রকারী পোকা প্রতিরোধী হয়। একই কৌশল অবলম্বনে তুলাগাছ বোলওয়ার্ম এবং লাল কটনবাগ প্রতিরোধী হয়। কৃষি বাই প্রডাক্ট, বন এবং খাদ্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের আবর্জনা দিয়ে শক্তি উৎপাদন করা সম্ভব।

এক ধরনের জীবাণুর সাহায্যে ফার্মান্টেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এর থেকে প্রোটিন তৈরী করা যায়। বর্তমানে আমাদের দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পোল্ট্রি এবং ডেইরী ফার্ম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পোল্ট্রি বর্জ্য অনেক এলাকায় খুবই অসহনীয় গন্ধ সৃষ্টি করে। ঐ সমস্ত ফার্মের গোচোনা এবং গোবরকে ফার্মেন্টেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মিথেন গ্যাস প্রস্তুত করা যায়। ঐ মিথেন জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে।

পোল্ট্রি লিটার হতে বায়োগ্যাস তৈরী করা সম্ভব। এই বায়োগ্যাসে মিথেনের পরিমাণ থাকে ৬০-৭০%। কার্বনডাইঅক্সাইড থাকে ২৫-৩০%। আমাদের দেশের সমস্যার আলোকে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে। আমরা প্রায় সকলে প্রতিদিন তিনবেলার মধ্যে দুইবেলা ভাত খাই।

এদেশের অনেক শিশু ভিটামিন “এ” এর অভাবে অন্ধত্ব বরণ করে। সে কারণে ধানের জাতের ভিটামিন “এ” বৃদ্ধি করার প্রয়াস নিতে হবে। সেই সঙ্গে আমিষ বা প্রোটিনের পরিমাণ ধানের জাতগুলোতে বৃদ্ধি করার চেষ্টা নিতে হবে। খেসারীর ডালে আমিষ বা প্রোটিনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশী কিন্তু বিষ জাতীয় পদার্থ অপসারণ করলে সাধারণ মানুষের খাবার উপযোগী হতে পারে। বায়োটেকনোলজি বলতে কেবল জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংকেই বুঝায় না।

প্রকৃতপে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বায়োটেকনোলজির একটি অন্যন্য উপাদান। বায়োটেকনোলজি আরো ব্যাপক। সহজভাবে বলা যায় জীববিজ্ঞানের উপর প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিদ্যার প্রয়োগই বায়োটেকনোলজি বা জৈব প্রযুক্তি। কৃষি উন্নয়ন, বন পরিবেশ সংরণ, চিকিৎসা শাস্ত্র, শক্তি উৎপাদন প্রভৃতি বহুবিধ েেত্র বায়োটেকনোলজির ব্যবহার ব্যাপক। বায়োটেকনোলজির প্রাথমিক গবেষণা সমূহের বেশির ভাগই ছিল কৃষি উন্নয়ন ভিত্তিক।

জীব স্থানান্তর টিস্যু কালচার, প্রভৃতির মাধ্যমে উন্নত জাতের শস্য উদ্ভাবন করা হচ্ছে। উদ্ভিদের দেহ কোষ, বিশেষ ধরনের মাধ্যমে চাষ করে বীজ বাহিত রোগ প্রতিরোধী উন্নত জাতের শস্য উদ্ভাবন করা সম্ভব হয়েছে। আখের ভাইরাস জনিত ফিজি রোগ, ডাউনি মিলডো রোগ এবং হেলমিনথোস্পেরিয়াম কৃমি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে এ পদ্ধতিতে। মাইক্রোপ্রোপাগেশন পদ্ধতিতে কেবল স্ত্রী পেপে গাছের চারা উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। মিউটেশনের মাধ্যমে ক্রোমোজোমের জীনকে পরিবর্তিত করে কাংতি জাতের জীব উদ্ভাবন সম্ভব হয়েছে।

এ পদ্ধতিতে ভুট্টার হেলমিন্থোস্পোরিয়াম কৃমি প্রতিরোধী, আলুর গোড়া পঁচা রোগ প্রতিরোধী এবং তামাক ও টমেটোর ভাইরাস প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন সম্ভব হয়েছে। এছাড়া অজৈবিক পীড়ন সহনশীল জাত যেমন, বন্যা ও খরা রোধী ভুট্টা, লবনরোধী ধান, ধাতব বিষাক্ততা রোধী গাজর উদ্ভাবিত হয়েছে। বায়োটেকনোলজির সবচেয়ে সু প্রয়োগ হল জীন ট্রান্সফার প্রযুক্তি। নিউকিয়াসের ক্রোমোজোম জীনের গঠন উপাদন হলো ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবো-নিউকিয়িক এসিড)। ক্রোমোজোম মূলত ডিএনএ-এর অতি লম্বা শিকলে অত্যন্ত সংকুচিত রূপ।

জীবের প্রতিটি বৈশিষ্ট্যের জন্য তথা ডিএনএ এর একটি মাইক্রো শিকল দায়ী। কোন জীবন হতে কাক্সিত বৈশিষ্ট্যের জীব উদ্বাবন করা সম্ভব হয়। এ পদ্ধতিকে বলে জীব কোনিং। প্রথমে ডিএনএ এর নির্দিষ্ট সিকিউএন্সটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যটি উৎসেচক এর সাহায্যে বা মেকানিক্যাল শেয়ারিং-এর মাধ্যমে এদের পৃথক করা যায়। পরবর্তীতে পৃথককৃত জীনটিকে ব্যাকটেরিয়ার পাসমিড বা ভাইরাস এর সাথে সংযোজন করে একটি সংযোজিত জীন তৈরি করা যায়।

ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়ে এরূপ জীন তৈরি হয় বলে এভাবে উৎপাদিত জীনকে চিনিরিক জীন ও বলা হয়। পরবর্তীতে চিনিরিক জীনকে একটি আদর্শ ব্যাকটেরিয়ার সাইটোপাজমে প্রবেশ করানো হয়, যেখানে ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধির ফলে উক্ত জীনটির মালটিপকেশন হতে থাকে। এভাবে সময়ের সাথে জীনটির অসংখ্য প্রতিরূপ বা কপি তৈরি হয়ে যায়। অত:পর ব্যাকটেরিয়াকে নির্বীজ ও পরিশোধন করে তা কাক্সিত জীবের কোষের সাইটোপ্লাজমে বা ভ্রণে বা ডিম্বানুর নিউকিয়াসে প্রবেশ করানো হয়। মূলত: দু’ভাবে প্রবেশ সম্পন্ন হয় যথা মাইক্রো ইঞ্জেকশন এবং ইলেক্ট্রো পোরেশন।

উদ্ভিদের েেত্র পরবর্তীতে ভ্রণ বড় হলে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে কাঙ্খিত জীব উদ্বাবন করা সম্ভব হয়। এছাড়া প্রাণপঙ্ক প্রযুক্তির মাধ্যমে জীন ট্রান্সফার করা হয়। তবে তাতে উভয় প্রজাতির সব ধরনের জীনের সংমিশ্রন ঘটায় কাঙ্খিত জীবে অনাকাঙ্খিত জীনের সংযোজন ঘটে যেতে পারে। জীন ট্রান্সফার প্রযুক্তি শস্য উৎপাদনে যেমন অবিশ্বাস্য রকম বিপব ঘটাতে পারে। তেমনি প্রাণীর েেত্রও এ প্রযুুক্তির কল্যানে অসম্ভব বলে কিছু থাকছে না।

চিকিৎসা বিজ্ঞানে বায়োটেকনোলজি ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। পৃথককৃত মানব জীনে যেসব জৈব রাসায়নিক পদার্থ, বিরল জৈবিক অণুসমূহ উৎপাদন করে তাদের মাধ্যমে জটিল রোগ নিরাময় সহজসাধা হয়েছে। ইন্টারভেনাস স্ট্রেপটো কাইনেজ রক্তের জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে। ইরাইথ্রো পয়েটিন লোহিত কণিকার উৎপাদন বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হয়। ডিএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন রোগের টিকা উৎপাদন বায়োটেকনোলজির আরেকটি সফল প্রয়োগ।

এ েেত্র কোন জীবাণুর জন্য যেসব প্রোটিন অ্যান্টিজেন হিসেবে কাজ করে সেগুলো তৈরীতে যে সমস্ত জীন দায়ী তাদেরকে কোনিং করে এন্টিজেন তৈরি করা হয়। এসব এন্টিজেনকেই ভ্যাকসিন হিসেবে প্রয়োগ করা হয়। এ পদ্ধতিতে হেপাটাইটাস বি সরফেস এন্টিজেন কোনিং করে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস ভ্যাকসিন, ভিপিআই ক্যাপসিড প্রোটিনের মাধ্যমে ফুড এন্ড মাউথ ভ্যাকসিন, স্পোরোজোয়াইট সারফেস এন্টিজেনের মাধ্যমে ম্যালেরিয়া ভ্যাকসিন উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। দ্রুত রোগ নির্ণয়ে এ পদ্ধতি খুবই কার্যকর। এ পদ্ধতিকে বলে রিকম্বিন্যান্ট ডিএনএ পদ্ধতি।

এ পদ্ধতিতে বংশগত রোগসমূহ দ্রুত ও দতার সাথে প্রাণীর ভ্রণাবস্থাতেই সনাক্ত করা সম্ভব। জীন ট্রান্সফার পদ্ধতিতে এসব রোগের চিকিৎসাও বর্তমান সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও পরিবেশ দূষণরোধে বায়োটেকনোলজির প্রয়োগ সফল হয়েছে। বিভিন্ন শিল্প কারখানার জৈব বর্জ অনুজীবের ক্রিয়ার মাধ্যমে পশু খাদ্য, সারও জ্বালানিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। আকরিকের বর্জ অনুজীবের ক্রিয়ার নিম্নমানের ধাতু পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ বহুলাংশে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে।

এসব কারণেই উন্নয়নশীল দেশসমূহে বায়োটেকনোলজির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বিভিন্ন শিল্প কারখানার জৈব বর্জ অনুজীবের ক্রিয়ার মাধ্যমে পশু খাদ্য, সার এবং জ্বালানিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। আকরিকের বর্জ অনুজীবের ক্রিয়ায় নিচু মানের ধাতু পুরুদ্ধারের মাধ্যমে পরিবেশ দুষণ বহুলাংশে হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোর বিশেষ সুবিধা হলো এসব দেশে বায়োটেকনোলজি নির্ভর শিল্পের জন্য পর্যাপ্ত কাঁচামাল রয়েছে। বহু আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থা বায়োটেকনোলজি প্রয়োগে ভূমিকা রাখছে।

বিশ্বব্যাংক উন্নয়শীল দেশসমূহে কৃষিতে বায়োটেকনোলজি প্রয়োগের সুযোগ সুবিধা সমূহ চিহ্নিত করে জৈব বালাইনাশক, ভাইরাস সহনশীল জাত টীকা উৎপাদন, ভ্র“ণ প্রযুক্তি ইত্যাদি েেত্র সহযোগিতা করছে। দণি কোরিয়ার বায়োটেকনোলজি প্রয়োগের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কোরিয়ার জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ এসোসিয়েমন ৩৫টি কোম্পানীর মাধ্যমে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। তারা আশা করছে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ৫৮০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য উৎপাদন সম্ভব হবে। ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া বায়ো টেকনোলজি প্রয়োগের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ায় ১০টি প্রকল্পের মাধ্যমে টিস্যু কালচার, টীকা উৎপাদন, পরিবার পরিকল্পনার জন্য ওষুধ উৎপাদন এবং পরিবেশ সংরণের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। মালয়েশিয়ায় পামওয়েল ও রাবারের জন্য টিস্যু কালচার, জৈব সার, এবং সেলুলোজ এনজাইম উৎপাদনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ডিএনএ প্রযুক্তি এবং টিস্যু কালচারের মাধ্যমে ভারতে লবণ ও বিষাক্ত পদার্থ সহনশীল উন্নত জাতের শস্য উদ্ভাবন করা হয়েছে। উন্নত জাত উদ্ভাবনে জীন সমূহ অডাল জাতীয় শস্যে স্থানান্তর করা হয়েছে। আখের রসে বায়োটেকনোলজি প্রয়োগের মাধ্যমে ব্রাজিল পৃথিবীর সর্বোচ্চ পরিমান ফুয়েল, অ্যালকোহল উৎপাদন সম হয়েছে।

এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় ব্রাজিল আন্তর্জাতিক বাজারে ২৬০০ মি. ডলারের মূল্যের ফুয়েল অ্যালকোহল রপ্তানী করেছে। নাইজেরিয়ার গবেষণা কার্যক্রম সমূহ শস্য উৎপাদন পশু সম্পদ সংরণ বন বিদ্যা, মাৎস্য, শস্য সংরণ প্রভৃতির উপর সীমাবদ্ধ তারা রোগ প্রতিরোধী উচ্চফলনশীল বীজ উৎপাদন এবং পশু সম্পদ উন্নয়নে বায়োটেকনোলজির ব্যবহার করছেন। কীটনাশক আমদানী খাতে পৃথিবীর বহু দেশ প্রতিবছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে। এসব কীটনাশক পরবেশের জন্য মারাত্মক হুমকীস্বরূপ। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কেনিয়ার নাইরোবীতে যৌথভাবে জৈব বালাইনাশক এবং জীবাণু সার উদ্ভাবন করেছে।

জর্দানে জীন সংস্থাপনের মাধ্যমে খরারোধী, উন্নত জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা করা হচ্ছে। বরুন্ডীতে কলা ও কাসাভার টিস্যু কালচার নিয়ে গবেষণা চলছে। পূর্ব আফ্রিকার অঞ্চলের বৃহত্তম জীন ব্যাংক আদ্দিস আবাবায় স্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশে বায়োটেকনোলজির উন্নয়ন ও প্রসার ঘটছে পাট, আলু ও আখের গবেষণার মধ্য দিয়ে। বহুবিধ কল্যাণকর দিক থাকা সত্ত্বেও এর নেতিবাচক দিক নিয়েও অনেক বিশেষজ্ঞ সমালোচনা করেছেন।

তাদের মতে, প্রথমত: বায়োটেকনোলজির গবেষণায় প্রাথমিকভাবেই প্রচুর অর্থের প্রয়োজন পড়ে, যা গরীব দেশগুলোর পে যোগান দেয়া সম্ভব নয়। দ্বিতীয়ত: অনেকের অভিযোগ জীন সংস্থাপনের মাধ্যমে বায়োটেকনোলজির যথেচ্ছ ব্যবহার জৈব বৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে এবং প্রকৃত প্রজাতির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তৃতীয়ত: নতুন প্রযুক্তির প্রতি আকর্ষনের জন্য ঐতিহ্যগতভাবে চলে আসা কোন দেশের রপ্তানী পণ্যের উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে। এছাড়া জীন ট্রান্সফারের প্রানপঙ্ক পদ্ধতিতে অনাকাক্সিত জীন জীবে সংযোজতি হয়ে মারাত্মক সমস্যার তৈরি করতে পারে। এসব কারণে অনেকে বায়োটেকনোলজিকে গুপ্ত ফাঁদ রূপে আখ্যায়িত করেছেন।

এসব সমালোচনা সমূহ অমূলক নয়। তথাপি বায়োটেকনোলজির উপকারিতারও তো দেখতে হবে। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয় এ অজুহাতে তো আর আগুনের ব্যবহার বাদ দেয়া হয় না। সতর্কতা ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এসব সমস্যা কমিয়ে আনা অসম্ভব নয়। শিল্প প্রযুক্তিতে ধনী দেশগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোর টিকে থাকা অসম্ভব।

উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়নের মুল চাবিকাঠি হচ্ছে প্রথমে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূূর্ণতা অর্জন। সবুজ শ্যামল আমাদের এই বাংলাদেশ। এদেশের শতকরা নব্বই ভাগ জমি আবাদ উপযোগী। এদেশে তেমন কোন শিল্পও গড়ে ওঠেনি। যার উপর নির্ভর করা যায়।

আর সেজন্যেই এদেশে বেশিরভাগ লোক কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। বাংলাদেশের মাটি খাদ্য শস্য চাষের জন্য উপযোগী। কিন্তু দেশে কৃষিখাতে বিগত সরকারের কোন ভুমিকা না থাকায় এই কৃষিখাতটা অবহেলিত রয়ে গেছে। কৃষক চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। আমাদের দেশ যেহেতু কৃষি নির্ভরশীল সুতরাং আমাদের এদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাতে চাইলে কৃষি ছাড়া উপায় নেই।

আর কৃষির মাধ্যমে এদেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে আমাদেরকে প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক বায়োটেকনোলজি সমৃদ্ধ কৃষি বিপ্লব ঘটাতে হবে। বায়োটেকনোলজির কল্যাণে বিদ্যমান সম্পদের উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটানো কঠিন কিছু নয়। প্রযুক্তি ও উন্নয়ন একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। যে দেশ যত বেশি প্রযুক্তিনির্ভর সে দেশ তত বেশি উন্নত। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে প্রযুক্তির প্রসার যেমন সীমিত তেমনি অর্থনৈতিক অবস্থাও গন্ডীভুক্ত।

বায়োটেকনোলজির সফল প্রয়োগের মাধ্যমে এদেশ সীমিত গন্ডী থেকে সহজেই বেরিয়ে আসতে পারে। দেশের বিজ্ঞানীদের এসব সম্ভাবনাময় প্রযুক্তির দিকে নজর দেয়ার সময় এসেছে। শেখ আনোয়ার: বিজ্ঞান বিষয়ক লেখক, গ্রন্থকার ও সাংবাদিক। বাড়ি: ২৮. বি/৪, মিতালি রোড, পশ্চিম ধানমন্ডি, ঢাকা: ১২০৯ ফোন: ৯১৩৮৭০২ / ০১৭২ ০১৯৪ ১১০

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.