হ্যানিম্যান বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম পরিবারতান্ত্রিক দেশ । বাংলাদেশের পরিবারতন্ত্র আর আরব বিশ্বের রাজতন্ত্রের মধ্যে অনেকটাই সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। আরব বিশ্বের অধিকাংশ দেশে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষমতা চলে পরিবার কেন্দ্রিক বা বংশাণুক্রমিক । যোগ্যতা থাকুক বা না থাকুক বাদশার ছেলে বাদশা । যেমনটা হিন্দু ধর্মের মত; ব্রাহ্মণের ছেলে কিছু জানুক বা না জানুক তাকে প্রণাম করতেই হবে ।
তার শুধু একটাই গুণ সে ব্রাহ্মণের ঘরে জন্মিয়েছে । বাংলাদেশের রাজনীতি পরিবার কেন্দ্রিক বা পরিবারতন্ত্র বা বংশাণুক্রমিক ধারায় চলছে । দলটা যেন পৈত্রিক সম্পত্তি । উত্তোরাধিকার সূত্রে দলের প্রধান হবে দলের প্রতিষ্ঠাতার বংশধর । হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, অকুতভয় বীর , নিপীড়িত বঞ্চিত মানুষের নয়নের মনি বাংলাদেশের স্থপতি , অবিসংবাদিত মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ইত্তেকালের পর উত্তোরাধিকার সূত্রে দলের প্রধান হয়েছেন জননেত্রী শেখ হাছিনা ।
হয়তবা উনার ইত্তেকালের পর শেখ সজীব ওয়াজেদ জয় হবেন তাঁর স্থলাভিসিক্ত । অপর দিকে আর এক বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি । দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান বাংলার মেহনতি মানুষের নেতা বাঙলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান । তাঁর ইত্তেকালের পর উত্তোরাধিকার সূত্রে দলের প্রধান হয়েছেন তাঁরই সহধর্মিনী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া । উনার পর দলের প্রধান হবেন তাঁরই পূত্র তারেক জিয়া ।
বাংলাদেশের জাতীয় পার্টির প্রধান পল্লীবন্ধু হুসাইন মো: এরশাদ । তিনি যখন জেলে ছিলেন তখন দলের দায়িত্ব পেয়েছিলেন তাঁর সহধর্মিনী ফাস্টলেডি রওশন এরশাদ। বাংলাদেশ জামায়েতি ইসলাম রাজাকার সমৃদ্ধ স্বাধীনতা বিরুধী একটি রাজনৈতিক সংগঠন । বর্তমানে দলটির নিবন্ধন বাতিলের জন্য জোর চেষ্টা চলছে । হয়তবা এদেশে দলটির কর্মকান্ড নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে ।
যে দলের শীর্ষ কর্তারা দেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে তারা আবার এদেশে রাজনীতি করার অনুমতি পায় কিভাবে?
দলের কর্তা ব্যক্তিরা যে রকমই হউক না কেন দলটির সাংগঠনিক গঠনতন্ত্র, দলে গঠনতন্ত্রের চর্চা , মেধাবী ছাত্রদেরকে দলের প্রতি আকৃষ্ট করা, দলের প্রতি কর্মীদের শ্রদ্ধাবোধ , গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দলের প্রধান নির্বাচন, পরিবারতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসা ইত্যাদি কর্মকান্ড গণতন্ত্রকে সমর্থন করে। উত্তোরাধীকার সূত্রে ক্ষমতা পাওয়ার কারণে দলে গণতন্ত্র চর্চা ব্যহত হচ্ছে । এতে করে দলের প্রবীন জ্ঞানী ও মেধাবী নেতারা ক্ষুব্ধ হচ্ছে । দলে দিন দিন কোন্দল বাড়ছে। বর্তমান বিশ্বে রাষ্ট পরিচালনা করতে হলে রাষ্ট নায়কের থাকতে হবে অগাত জ্ঞান, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি , ও তথ্য প্রযক্তি সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা ।
প্রতিযোগীতাময় এ বিশ্বে সাফল্যমন্ডিতভাবে টিকে থাকতে হলে অর্থনৈতিক , প্রাকৃতিক ও প্রযক্তিগত দিকগুলো উন্নত করতে হবে। আর এ সমস্ত দিকগুলো উন্নত করতে হলে চাই সৎ, নির্ভীক ও দেশপ্রেমিক মেধাসম্পন্ন রাজনৈতিক নেতা। বর্তমানে বাংলাদেশে মেধাবী রাজনৈতিকের বড় অভাব। সমাজ, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ উশৃঙ্খল মেধাশূণ্য লোকেরাই রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে বেশি পছন্দনীয়। প্রবীণ রাজনৈতিক নেতাদের হাত ধরে এ সব দুষ্ট প্রকৃতির লোকগুলো রাষ্ট পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো দখল করে রাখে।
সৎ, দেশ প্রেমিক লোকেরা রাজনৈতিক নেতাদের কাছে তুচ্ছ ও ঘৃনিত। কারণ মেধাবী সৎ ও দেশপ্রেমিক মানুষগুলো রাজনীতিতে আসলে পূঁজিবাদীরা এ দেশকে লুটেপুটে খেতে পারবে না। যার ফলে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সৎ ও মেধাবী ছাত্ররা রাজনীতির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এ ধারা চলতে থাকলে গণতন্ত্রের প্রতি মানুষের আস্থা দিন দিন কমতে থাকবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।