দিনের শেষে ডেস্ক : শিশু পর্নোগ্রাফি রোধ এবং শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন বন্ধে নতুন আইনের কথা গভীরভাবে ভাবছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তবে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটগুলো বন্ধ করা হবে, না অশালীন চিত্রসমূহ মুছে ফেলা হবেÑ এ নিয়ে চলছে বিতর্ক। তথ্য অধিকারের প্রশ্ন তো আছেই। অবাধ তথ্যপ্রযুক্তির যুগ, সব মাধ্যমেই জনগণের প্রবেশাধিকার থাকতে হবেÑ ইউরোপিয়নরা আর সবারচেয়ে বেশি বিশ্বাসী এ নীতিতে। শেষ নয় এখানেই।
যৌন শিক্ষায় অজ্ঞতা মানেই, ভয়াবহ নানা যৌন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। ইউরোপিয়ান এ সমাজে যৌন শিক্ষাকে অবারিত করার দাবি বেশ জোরালোই। ঠিক তখনই শিশু পর্নোগ্রাফি রোধে আরো কঠোর পন্থার কথা জানালো ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ডয়েচে ভেলে জানায়, তবে কারিগরির দিক দিয়ে নতুন এই প্রস্তাবনা কতোটা নিখুঁতÑ তা আরো খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে। শুধু শিশু পর্নোগ্রাফি রোধই নয়, ইউরোপীয় কোনো নাগরিক নিজ দেশে কিংবা অন্য দেশে গিয়ে শিশু নির্যাতন করলে তাদের জন্য আরো কঠোর দে র দাবি তুলেছে ইইউভুক্ত দেশগুলো।
স¤প্রতি শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনসহ শিশু পর্নোগ্রাফির ঘটনা উচ্চ হারে প্রকাশের ফলেই ইইউর এমন উদ্বেগ। ইইউ-এর এক হিসাব অনুযায়ী, ২০০৮ সালে এক হাজার বাণিজ্যিক ও ৫শ’ অবাণিজ্যিক শিশুপর্নো সাইট চিহ্নিত করা হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে কার্যকর লিসবন চুক্তির আওতায় এসব অপরাধের একটা বিহীত করতে চায় সদস্য দেশগুলো। ইইউ’র স্বরাষ্ট্র নীতি বিষয়ক কমিশনার সেসিলিয়া মাল্মস্টম বললেন, এটা নৃশংস এক অপরাধ, যা শিশুদের মর্যাদাকে চিরতরে ধ্বংস করে দেয়। বিশেষ করে শিশু পর্নোগ্রাফি রোধে সব দেশের মধ্যে সমন্বয় সাধনের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
মাল্মস্ট্রম বলেছেন, শিশুরা নির্যাতন এবং ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। আর এসব দৃশ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এটা কোনো স্বাধীনতা হতে পারে না। এটা গুরুতর অপরাধ ছাড়া আর কিছু না। এর বিরুদ্ধে অবশ্যই লড়তে হবে।
শিশু পর্নোগ্রাফি সমৃদ্ধ ওয়েবসাইটে প্রবেশ বন্ধে কারিগরি ব্যবস্থা নিতে হবে। এসব সাইট যেখানে আছে, সেখান থেকে তা বন্ধ করা কঠিন। বিশেষত সেগুলো যদি ইইউ’র বাইরে থাকে। এছাড়া ভিন্ন কোনো দেশে গিয়ে যারা শিশুদের সঙ্গে যৌনকর্মে লিপ্ত হয়, সেসব ইউরোপীয় নাগরিক বর্তমান আইনে ছাড় পেয়ে যায়। ইইউ আর এমন সুযোগ রাখতে চায় না।
আগের আইন অনুযায়ী, ঘটনা যে দেশে, সেদেশেই বিচার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন নতুন প্রস্তাবনায় বলা হচ্ছে, ওইসব ইউরোপীয় নাগরিকের বিচার নিজ দেশেই করার বিধান রাখতে হবে। মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমেও শিশুদের অশোভন ভিডিও ছড়িয়ে যাচ্ছেন। নতুন এ প্রস্তাবনায় সব ধরণের অশোভন তথ্য-উপাত্ত প্রদর্শন বন্ধের কথা বলা হচ্ছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইইউভুক্ত দেশগুলোতে শিশু পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত বিষয়বস্তু শুধুমাত্র সংরক্ষণ কিংবা বিতরণই নয়, বরং এধরণের কিছু খোঁজা কিংবা এই সংক্রান্ত ওয়েবসাইট পরিদর্শনও অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
এছাড়া, যৌন নির্যাতনের উদ্দেশ্য নিয়ে ইন্টারনেটে শিশুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করলে কিংবা শিশুদের অশোভন ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ালেও তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। আর এ ধরণের অপরাধের জন্য কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।