পরাঞ্জয়ী...
২ ঘন্টা ২২ মিনিট পর ইলেকট্রিসিটি আসলো। আহা, কি শান্তি। আন্টি ইনিয়ে বিনিয়ে অনেক প্রতিশ্রুতিই দিয়েছিলেন, ""এই বিল্ডিং দাঁড় করাতে আপনার যারা সহযোগীতা করলেন তাদের কে আমি কথা দিচ্ছি প্রত্যেক ফ্ল্যাট আমি সোনার ফ্ল্যাট বানাব, ডিজিটাল ফ্ল্যাট বানিয়ে ছাড়ব ইনশআল্লাহ!"" পাবলিক ও মাশআল্লাহ! যথারিতী নুতন ফ্ল্যাটে পা রাখলাম। পুরাই উরাধুরা। আন্টির আবার ক্ষমতা হাতে পেয়ে মানে বোর্ড অব ডীরেক্টরের চেয়ারম্যান হওয়ার পর কিচ্ছু মনে ছিল না।
আল্লাহ জানে কেউ অন্ধকারে মাথায় মুলি বাঁশের বাড়ি দিছিল নাকি। ডাক্তার কইল "উনি স্মৃতিশক্তি হারিয়েছেন!" ব্যাস, আন্টি মনের সুখে দেশ বিদেশ ভ্রমণ করেন, এরে ফাঁসি দেন তো ওর নামে মামলা ঠুকে দেন। আন্টির মতের সাথে না মিললেই আন্টি তারে ফ্ল্যাটোদ্রোহী ঘোষনা করেন! ব্যাস! আর যায় কই!
পানি নাই। ট্যাপ খুলে মোড়াতে মোড়াতে মোটামুটি ট্যাপের ১২ টা বাজালাম। না পানি নাই! ট্যাপ নিংড়েও পানি নাই।
মাঝে মাঝে আসে পানি তাও আবার তাতে কেঁচোর বাচ্চা ফ্রী!!!!!!! পুরানো কাপড় পেচিয়ে রাখা ট্যাপে। আন্টিকে বলা যায়না, কারন আন্টি তার ছেলের বিদেশী বউকে রান্না শেখাতে ব্যস্ত! আমরা ফ্ল্যাট বাসি কাইন্দা মরি!!!!!
ফ্ল্যাটের সিঁড়িতে জ্যাম, সামনে জ্যাম। আন্টি ব্যবস্থা নেন না, কারন আন্টি চলাচলের সময় তো সিকিউরিটি গার্ডরা রাস্তায় মানুষজনরে সরায় দেয়, কাউকে চলতে দেন না। "আন্টি গো, ও আন্টি আমরা ফ্ল্যাটবাসী কই যাই? আল্লাহর কিরা আন্টি আপনার বিরুদ্ধে একটা কথা কমুনা, সিঁড়ি আর রাস্তাটা একটু খালি করেন!" আন্টি কথা শুনেনা। আন্টির মাথায় আরেকটা মুলি বাঁশের বাড়ি দিতে হবে।
শুনেছি আঘাত পাইলে স্মৃতি বিভ্রাট ঠিক হয়ে যায়!
বিদ্যুৎ নাই ফ্ল্যাটে! আন্টি নিজের জন্মদিন, মৃত্যু দিবস (থুক্কু মরেন নাই তো এখনও), বিবাহ বার্সিকী সহ তেনার ফরটিন জেনারেশনের জন্ম, মৃত্যু, খাৎনা, গালে ভাত সব দিবস পালন করেন আর পুরা বিল্ডীং হুদা কামে লাইটীং করেন। আমরা কাজের সময় বিদ্যুৎ পাইনা। ইদানীং তো রাইত কালে কারেন্ট থাকলেও কারেন্টের আলোয় কিচ্ছু দেখিনা। মোমবাত্তির আলোয় সব ফকফকা, অভ্যাস হয়া গেছে!!! গরমে গায়ে ফোসকা পড়ে, আন্টির আবার বঙ্গভবনের লাইন, কারেন্ট যায়না। আমরা কই যাই!!
আন্টি গো আন্টি আপনের ডিজিটাল ফ্ল্যাট চাইনা, এ্যানালগটা ফেরৎ দেন।
এনালগে তো ১ ঘন্টা পর আসতো বিদ্যুৎ, এখন ২ ঘন্টায়ও খবর থাকেনা! আন্টি পাবলিক পুরাই আপনের অবিডিয়েন্ট, কুত্তার বাচ্চার মত!!! কেউ আবার ভুল বুঝবেন না। কুকুর অত্যন্ত প্রভুভক্ত প্রানী, আমরাও ফ্ল্যাটবাসী প্রভুভক্ত। তাই বললাম, এটা কোন গালী না। আমরা মানুষকে অযথা কুত্তা বলে গালি দেই। নাইলে আন্টি বাঘের বাচ্চা হইয়া পাবলিক কামড় দিব কইলাম, তখন আবার কইয়েন না বেঈমান!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।