হইয়া আমি দেশান্তরি দেশ বিদেশে ভিরাই তরী..নোঙ্গর ফেলি ঘাটে ঘাটে বন্দরে বন্দরে...আমার মনের নোঙ্গর পইরা রইছে হায়রে সারেং বাড়ির ঘরে...
ফাহরিয়া মেয়েটার সাথে আমার পরিচয় র্যাডিসনের একটা কনফারেন্সে। "এ ইউ ডাব্লিউ" ইউনিভার্সিটি থেকে একটা স্পীচ প্রেজেন্ট করতে এসেছিলো। প্রেজেন্টেশন শেষ হবার পর আমি গিয়ে হাত মিলালাম, ছোট করে কাটা চুল, চশমা পরা, বুদ্ধিদীপ্ত চোখ। টুকটাক কথা হল তার কিছুদিন পর দেখি আমাকে ফেইসবুকে খুঁজে বের করে অ্যাড করেছে। হালকা পাতলা কথা হতে থাকলো মাঝে মধ্যে।
এইবার দেশে আসার পর একদিন কথায় কথায় বললো পরিচিত কয়েকজনের জাকাতের টাকা তুলে সে একটা এতিমখানায় আর একটা গার্লস স্কুলে কিছু বই কিনে দিয়েছে। তারপর বেশ সংকোচ নিয়ে নিজের একটা প্ল্যানের কথা বললো, সে ওই গার্লস স্কুলে একটা লাইব্রেরী করে দিতে চায়।
নারী সমাজ অনেক এগিয়ে গেছে বলে মনে হলেও আসলে গ্রাম, গঞ্জে ঢুকলে বোঝা যায় মেয়েদের আদত অগ্রসর এখন ও অনেক সীমিত। গত ২ মাস রিমোট এলাকা গুলো তে কাজ করার সুবাদে এটাও জানি যে এখনও কত বাল্য বিবাহ হয় সচেতনতার অভাবে। এখনো কত মা মেয়েকে পড়ানোর চাইতে ছেলে কে লেখাপড়া করানোতে বেশী উৎসাহী।
নারী শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে লেকচার দিবার আগ্রহ নাই কিন্তু পাঠ্য আর ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সুনীল, বিভুতিভূষণ কিংবা সুকুমার পড়লে লাভ বৈকি ক্ষতি নাই। জাফার ইকবালের সাইন্স ফিকশন পড়ে কিছু মেয়ে হয়ে উঠতে পারে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি নিয়ে আগ্রহী হবে। মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানবে। কেন ৪২ বছর বাদেও কাউকে ক্ষমা করা যায় না তা শিখবে।
একজন শিক্ষিত মা ছেলে মেয়েদের প্রকৃত শিক্ষিত করে তুলতে চাইবে।
অজ্ঞতার বাইরে এসে প্রগতিশীল চিন্তা করবে কি অদ্ভুত সুন্দর একটা ব্যাপার হবে একবার ভেবে দেখি?
আমার বন্ধুটি আমারই ব্যাচমেট মাত্র "এ ইউ ডাব্লিউ" তে লেকচারার হিসেবে জয়েন করেছে। তার আর আমার পক্ষে লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। খুব কাছের লোকজন ছাড়া কোনদিন সাহায্য চাই ও নাই। কিন্তু অনেক সময় নিজস্ব গন্ডিতে থেকে কিছু করা মুশকিল হয়ে যায়, আর জ্ঞানী লোকে বলে, সাহায্য চাইতে পারাও একটা বড় লারনিং!
আমাদের অনেকের ঘরেই পুরানো বই পড়ে থাকে। সবাই বড় হয়ে গেছে।
বই পড়ার কেউ নেই। আবার এত শখের একসময় পয়সা জমিয়ে কেনা বইগুলো নীলক্ষেতে বিক্রিও করতে ইচ্ছা করে না। সেই বই গুলো আমাদের দিন। কথা দিচ্ছি কিছু ছোট্ট মেয়ে খুব আগ্রহ নিয়ে বইগুলো পড়বে। এই লিখার নিচে ঢাকা আর চিটাগাং এর দুটো ঠিকানা দিচ্ছি বই পাঠানোর জন্য।
কেউ ব্যাক্তিগত কালেকশনের অনেক বই একসাথে দিতে চাইলে সেটা ঢাকার ভেতর হলে আমি নিজ উদ্যোগে বই আনার ব্যাবস্থা নেব।
আর্থিক সচ্ছতা বজায় রাখার জন্য কোন ডোনেশন আমরা গ্রহন করবো না।
আমার এক খুব কাছের বন্ধু এই উদ্যোগের কথা শুনে ব্যাক্তিগত কালেশন থেকে গোটা পঞ্চাশেক বই ডোনেট করেছে। আ হিউজ স্টার্ট আই মাস্ট সে!
আপাতত বই জোগাড় করা হচ্ছে ফেনীর সুলতানা মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের জন্য কেমন বই জোগাড় করতে পারি তার উপর নির্ভর করে আরো কিছু স্কুলে ছোট পরিসরে হলেও লাইব্রেরী করে দিবার চেষ্টা থাকবে।
বই ডোনেশন সংক্রান্ত কোন সাজেশন বা কোন ব্যাপারে যোগাযোগ করতে চাইলে আমার ফেবুতে একটা ছোট্ট মেসেজ করতে পারেন (নিচে লিংক)।
দেশান্তরীর ফেইসবুক
অথবা ফাহরিয়ার সাথে নিম্নক্তো মেইলে যোগাযোগ করতে পারেন।
বই পাঠানোর ঠিকানা (ঢাকা)
তাসপিয়া রাকা
ফ্ল্যাট# ৫/এ, হাউজ# ৭২, রোড# ৯/এ (নতুন)
ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা-১২০৯
বই পাঠানোর ঠিকানা (চিটাগাং)
Fahria Kabir
Junior Teaching Fellow
Asian University for Women
20A M.M.Ali Road, Chittagong-400, Bangladesh
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।