Never argue with idiots. They bring you down to their level and then beat you with experience
অষ্টম শতকে যুক্তরাজ্যে শিল্প-বিপ্লবের মাধ্যমে সর্বাধিক খ্যাতি ও সমৃদ্ধি অর্জন করে ব্রিস্টল শহর। আয়তন ও জনসংখ্যায় যুক্তরাজ্যের সপ্তম বৃহত্তম শহর ব্রিস্টল এখনও দেশটির অনেক শিল্প ও বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। ব্যবসায়ী এবং শিল্পোদ্যোক্তা হিসেবে এ অঞ্চলের মানুষকে একসময় খোদ ব্রিটিশরাই ‘ব্রিস্টলিয়ান’ খেতাব দিয়েছিল। তবে সবকিছু ছাপিয়ে শহরবাসীর কাছে যে খবরটি এখন শীর্ষে; তা হল- ব্রিস্টলিয়নদের ছাড়িয়ে এখন এক বাঙালি এই শহরটির সিটি মেয়রের দায়িত্বে।
গত মঙ্গলবার ব্রিস্টলে প্রথমবারের মতো সর্বকনিষ্ঠ লর্ড মেয়র হিসেবে অভিষিক্ত হন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফারুক চৌধুরী।
ব্রিস্টল ও যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও এশীয় মুসলিম পদটিতে অধিষ্ঠিত হলেন। এছাড়া লর্ডশিপ প্রথা চালুর ১১৪ বছরের ইতিহাসে প্রথম কোনও এশীয় মুসলিম লর্ড মেয়র হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেন। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সরকারব্যবস্থা পরিচালিত হয়- মেয়র, নির্বাহী মেয়র ও লর্ড মেয়রশিপে। পুরো যুক্তরাজ্যে মাত্র ৩১ জন লর্ড মেয়র রয়েছেন।
গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিদায়ী লর্ড মেয়র পিটার মেইন ফুলহাউসের সমর্থনে ফারুক চৌধুরীর নাম ঘোষণা করেন।
এ সময় পুরো হাউসে উপস্থিত সবাই করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানান নতুন লর্ড মেয়রকে।
প্রথম বক্তব্যে ফারুক চৌধুরী আগামী এক বছরে শহরটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তার ভিশন-মিশন ব্যক্ত করেন। বক্তব্যের প্রথমেই নতুন লর্ড মেয়র তার এই দায়িত্বপ্রাপ্তি শুধু ব্রিস্টলবাসীই নয় বরং ব্রিটেনের বাংলাদেশীদের উৎসর্গ করেন। তিনি বলেন, আমি সব সম্প্রদায়, ধর্ম ও জাতির মানুষকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। এছাড়া তিনি মেয়াদকালীন সময়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য দাতব্য কাজে অংশগ্রহণ করবেন বলেও জানান।
ফারুক বলেন, আগামী দিনে আমি নগরীর জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে সম্ভব সবকিছু করার চেষ্টা করব।
ব্রিস্টলসহ যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশিদের ইতিহাসে নতুন এই অধ্যায় যুক্ত হওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বাঙালি কমিউনিটি ও অন্যান্য এথনিক কমিউনিটির বিভিন্ন স্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তি, সিটি কাউন্সিলর, ক্যাবিনেট সদস্য, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এবং ফারুক চৌধুরীর পরিবারের সদস্যবৃন্দ। এছাড়া ইতিহাসের এ মাহেন্দ্রণের সাি থাকতে উপস্থিত ছিলেন বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি। ফারুক চৌধুরীর লর্ড মেয়র হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্তি কমিউনিটির জন্য অত্যন্ত গর্বের বলে উল্লেখ করেন অনুষ্ঠানে আসা বাঙালিরা। এছাড়া তার এই দায়িত্বপ্রাপ্তিতে যুক্তরাজ্যজুড়ে বাঙালি কমিউনিটিতেও ব্যাপক সাড়া জাগায়।
২৩ বছর বয়সে ১৯৯৯ সালে আইন বিষয়ে পড়াশোনার জন্য যুক্তরাজ্যে যান ফারুক চৌধুরী। ব্রিটেনে এসেই যুক্ত হন লেবার পার্টির রাজনীতির সঙ্গে। ২০০১ সালে ব্রিস্টল সিটি কাউন্সিলের ইস্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এর পর ২০০৭ সালে একই ওয়ার্ড থেকে বিপুল ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বার পুনঃনির্বাচিত হন। তার বাড়ি সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার রনকেলী গ্রামে।
বাবা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্য প্রয়াত ওয়েছ আহমদ। ব্যক্তিগত জীবনে ১ ছেলে ও ২ মেয়ের জনক ফারুক চৌধুরী। লর্ড মেয়র হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি সিটি কাউন্সিলের লেবার পার্টির শ্যাডো ক্যাবিনেট ফর কমিউনিটি অ্যান্ড কালচারের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি হাউজিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। এর আগে তিনি লন্ডনে ‘জয়রাজ’ নামে একটি হোটেল পরিচালনা করতেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।